অস্ট্রেলিয়ায় ভারতের স্বাধীনতা দিবস উদযাপনের সময় গোলযোগ হয়েছে। খালিস্তানপন্থীরা আয়োজনস্থলে জড়ো হয়ে বাগড়া দিলে অনুষ্ঠানটি ব্যাহত হয়।
শুক্রবার (১৫ আগস্ট) ভারতের ৭৯তম স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে মেলবোর্নে কনসাল জেনারেলের কার্যালয়ের বাইরে অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
দ্য অস্ট্রেলিয়া টুডের বরাতে ভারতের গণমাধ্যম এনডিটিভি জানিয়েছে, ভারতীয়রা তাদের জাতীয় পতাকা নিয়ে সেখানে জড়ো হলে অনুষ্ঠানস্থলে আসতে থাকেন খালিস্তানপন্থীরাও। তাদের হাতেও ছিল খালিস্তানের পতাকা।
অনলাইনে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা যায়, এক পর্যায়ে দুইপক্ষের মধ্যে কথা-কাটাকাটি হয়। খালিস্তানপন্থীরা স্লোগান দিতে থাকলে ভারতীয়রাও স্লোগান ও দেশাত্মবোধক গান গাইতে থাকেন। তবে আইনশৃঙ্খলা কর্তৃপক্ষ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখে।
পরে ভারতের কনস্যুলেটে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করে ভারতীয়রা ‘ভারত মাতা কি জয়’ এবং ‘বন্দে মাতরম’ গেয়ে স্বাধীনতা দিবস উদযাপন করে।
দিল্লির গণমাধ্যম বলছে, শুধু মেলবোর্নের এই ঘটনাই নয়, অস্ট্রেলিয়ায় প্রায়ই খালিস্তানপন্থীদের টার্গেট হচ্ছেন ভারতীয়রা।
গত মাসে অস্ট্রেলিয়ার বোরোনিয়ায় খালিস্তানপন্থীরা একটি মন্দিরে ভাঙচুর করে দেয়ালে ‘গো হোম ব্রাউন ...’ লিখে দেয়। এছাড়া এর নিকটস্থ এলাকায় এশিয়ানদের পরিচালিত রেস্তোরাঁগুলোর দেয়ালেও একই ধরনের বার্তা দেখা যায়।
ভারত আগে থেকেই অস্ট্রেলিয়া, কানাডা, যুক্তরাজ্যের মতো দেশগুলোকে খালিস্তানপন্থীদের ব্যাপারে কঠোর হওয়ার আহ্বান জানিয়ে আসছে।
ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস. জয়শঙ্কর বলেন, এই ‘উগ্রবাদী’ মতাদর্শ আমাদের, তাদের বা আমাদের পারস্পরিক সম্পর্কের জন্য ভালো নয়।
খালিস্তানপন্থী কারা
১৯৮০ সালে ভারতের পাঞ্জাব প্রদেশ ঘিরে শিখদের একটি অংশ স্বাধীন ‘খালিস্তান’ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার দাবি তোলে। ওই আন্দোলনকে ‘খালিস্তান মুভমেন্ট’ বলা হয়। আন্দোলনটির জের ধরে অনেক সহিংসতা হয়েছিল এবং মৃত্যু হয়েছিলো হাজারো মানুষের। ভারতীয় সেনাবাহিনীর বিশেষ অভিযানের পর এ আন্দোলন স্তিমিত হয়ে যায়।
এই আন্দোলনে জড়িতদের ভারত ‘বিচ্ছিন্নতাবাদী সন্ত্রাসী’ আখ্যা দেয় এবং দেশের নিরাপত্তার জন্য হুমকি হিসেবে চিহ্নিত করে।
বর্তমানে ভারতে সেভাবে সংগঠিত হতে না পারলেও শিখরা কানাডা, অস্ট্রেলিয়া, যুক্তরাজ্যসহ বিভিন্ন দেশে ‘খালিস্তান’ প্রতিষ্ঠার পক্ষে প্রচারণায় সক্রিয়।
এনডি/