ঢাকা, রবিবার, ২৫ শ্রাবণ ১৪৩২, ১০ আগস্ট ২০২৫, ১৫ সফর ১৪৪৭

আন্তর্জাতিক

ট্রাম্প-পুতিন কিছুই অর্জন করতে পারবেন না: জেলেনস্কি

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১:৫০, আগস্ট ৯, ২০২৫
ট্রাম্প-পুতিন কিছুই অর্জন করতে পারবেন না: জেলেনস্কি

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন সরাসরি বৈঠকে বসতে যাচ্ছেন। আগামী ১৫ আগস্ট যুক্তরাষ্ট্রের আলাস্কা অঙ্গরাজ্যে অনুষ্ঠিত হবে এই শীর্ষ বৈঠক, যেখানে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধের সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা হবে।

শুক্রবার (৮ আগস্ট) বিষয়টি নিজেই নিশ্চিত করেছেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প।

২০২২ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে চলছে রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ। এ সময় যুক্তরাষ্ট্র ও তাদের ইউরোপীয় মিত্ররা ইউক্রেনকে বিপুল পরিমাণ অস্ত্র সরবরাহ করেছে। তবে চলতি বছরের জানুয়ারিতে ক্ষমতায় বসার পর থেকেই ট্রাম্প যুদ্ধ থামানোর উদ্যোগ নেন। সম্প্রতি তিনি দাবি করেন, মস্কো ও কিয়েভ একটি যুদ্ধবিরতি চুক্তির খুব কাছাকাছি রয়েছে।

শুক্রবার হোয়াইট হাউসে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে পুতিনের সঙ্গে বৈঠকের কথা জানান ট্রাম্প। তিনি বলেন, দুই পক্ষের কল্যাণের জন্য কিছু অঞ্চল হাতবদল হতে পারে।  

বর্তমানে ইউক্রেনের লুহানস্ক, দোনেৎস্ক, জাপোরিঝঝিয়া ও খেরসনের বড় অংশ রুশ বাহিনীর নিয়ন্ত্রণে। পুতিন বরাবরই শর্ত দিয়ে আসছেন, যুদ্ধবিরতির জন্য এই অঞ্চলগুলোর দাবি ইউক্রেনকে ছেড়ে দিতে হবে।

ক্রেমলিনও এক বিবৃতিতে বৈঠকের বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। রুশ প্রেসিডেন্টের সহকারী ইউরি উশাকভ বলেন, ইউক্রেন সংকটের দীর্ঘমেয়াদি সমাধানের জন্য নানা বিকল্প উপায় নিয়ে আলোচনা হবে এবং এটি নিঃসন্দেহে একটি কঠিন প্রক্রিয়া। তবে দুই পক্ষই সক্রিয় ও আগ্রহী মনোভাব নিয়ে আলোচনায় অংশ নেবে।

এর আগে মার্কিন সংবাদমাধ্যম ব্লুমবার্গের প্রতিবেদনে উঠে আসে, যুদ্ধ থামাতে ইউক্রেনের কিছু ভূখণ্ড ছাড় দেওয়ার শর্ত নিয়েই কাজ করছে যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়া। যদিও তখন হোয়াইট হাউসের এক কর্মকর্তা বিষয়টিকে ‘জল্পনা’ বলে উড়িয়ে দিয়েছিলেন, আর ক্রেমলিন কোনো মন্তব্য করেনি।

‘অঞ্চল হাতবদল’ সংক্রান্ত ট্রাম্পের মন্তব্যের তীব্র সমালোচনা করেছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। শনিবার (৯ আগস্ট) জাতির উদ্দেশে দেওয়া নিয়মিত ভিডিও বার্তায় তিনি বলেন, সংবিধান লঙ্ঘন করে কোনো ভূখণ্ড-সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত নেবে না ইউক্রেন। দখলদারদের কাছে নিজেদের জমি উপহার হিসেবে দেব না আমরা।

যুদ্ধ শুরুর পর থেকেই রাশিয়ার দখল করা ভূখণ্ড ফেরত পাওয়ার দাবি থেকে সরে আসতে নারাজ কিয়েভ। ট্রাম্প-পুতিন বৈঠক প্রসঙ্গে জেলেনস্কির মন্তব্য, তারা এর মাধ্যমে কিছুই অর্জন করতে পারবেন না। এমন সিদ্ধান্ত নেওয়ার পরই তা অকার্যকর হয়ে পড়বে। এগুলো কোনো ফল বয়ে আনবে না। আমাদের প্রয়োজন বাস্তবসম্মত শান্তি।

যদিও যুদ্ধের ভয়াবহ ক্ষতির মুখে ইউক্রেন আগে কিছুটা নমনীয় হওয়ার ইঙ্গিত দিয়েছিল, তবুও যদি রাশিয়ার দখলে থাকা চার অঞ্চল এবং ২০১৪ সালে দখল হওয়া ক্রিমিয়া ছাড় দিতে হয়, তা হবে জেলেনস্কি সরকারের জন্য বিরাট রাজনৈতিক চ্যালেঞ্জ। এসব অঞ্চল ইউক্রেনের মোট ভূখণ্ডের প্রায় ২০ শতাংশ।

যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান আটলান্টিক কাউন্সিলের গবেষক টাইসন বার্কারের মতে, ইউক্রেনীয়রা নিজেদের ভূখণ্ড ছাড়ের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করবে। তিনি রয়টার্সকে বলেন, ইউক্রেন যা করতে পারে, তা হলো— ভূখণ্ড ছাড়ের বিরোধিতায় কঠোর অবস্থান নেওয়া, একইসঙ্গে সব পক্ষের অংশগ্রহণে আলোচনার মাধ্যমে সমাধানের পথে নিজেদের শর্তে অটল থাকা এবং যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তার জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ অব্যাহত রাখা।

এমজে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।