ঢাকা, রবিবার, ১৯ শ্রাবণ ১৪৩২, ০৩ আগস্ট ২০২৫, ০৮ সফর ১৪৪৭

আন্তর্জাতিক

ইসরায়েলকে অস্ত্র দেওয়া যাবে না, আবার বলল কানাডা

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪:৪৬, আগস্ট ৩, ২০২৫
ইসরায়েলকে অস্ত্র দেওয়া যাবে না, আবার বলল কানাডা কানাডার পররাষ্ট্রমন্ত্রী আনিতা আনন্দ

গাজায় চলমান ইসরায়েলি আগ্রাসনের মধ্যে আবারও স্পষ্ট করে নিজেদের অবস্থান জানাল কানাডা। দেশটি জানিয়ে দিয়েছে, গাজায় ব্যবহারের আশঙ্কা রয়েছে—এমন কোনো সামরিক সরঞ্জাম ইসরায়েলে রপ্তানির জন্য তারা কোনো ধরনের অনুমোদন দিচ্ছে না।

রোববার (৩ আগস্ট) তুরস্কভিত্তিক বার্তাসংস্থা আনাদোলুর এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।

প্রতিবেদনে বলা হয়, শনিবার কানাডার পররাষ্ট্রমন্ত্রী আনিতা আনন্দ এক বিবৃতিতে জানান, ২০২৪ সালের জানুয়ারি থেকে ইসরায়েলে সামরিক কাজে ব্যবহৃত হতে পারে এমন কোনো পণ্যের রপ্তানির লাইসেন্স অনুমোদন করা হয়নি।

“গাজায় ব্যবহারের আশঙ্কা আছে, এমন কোনো সামগ্রী রপ্তানির অনুমতি আমরা ২০২৪ সালের শুরু থেকেই বন্ধ রেখেছি। এখন পর্যন্ত কোনো লাইসেন্স দেওয়া হয়নি,” বলেন আনন্দ।

গত ২৯ জুলাই প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে দাবি করা হয়, কানাডা থেকে এখনো ইসরায়েলে অস্ত্র সরবরাহ অব্যাহত রয়েছে। এই দাবি প্রত্যাখ্যান করে কানাডার পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, প্রতিবেদনের বেশ কয়েকটি অংশ ‘বিভ্রান্তিকর’ এবং ‘বাস্তবতার অপব্যাখ্যা’।

তিনি বলেন, যেসব পণ্যের কথা প্রতিবেদনে ‘গুলি’ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে, সেগুলো আসলে পেইন্টবল জাতীয় সরঞ্জাম। এমনকি এর সঙ্গে এমন যন্ত্রও ছিল, যা আগ্নেয়াস্ত্রকে ব্যবহারযোগ্য গোলাবারুদ ব্যবহারে অক্ষম করে দেয়। এসব সামগ্রী যুদ্ধক্ষেত্রে ব্যবহারযোগ্য নয়।

আনন্দ আরও বলেন, কেউ যদি এ ধরনের কিছু যুদ্ধক্ষেত্রে ব্যবহারের চেষ্টা করে, তাও একটি বৈধ লাইসেন্স ছাড়া সম্ভব নয়। আর এমন লাইসেন্স দেওয়া হয়নি এবং হবেও না।

তিনি সাফ জানিয়ে দেন, লাইসেন্স স্থগিত হওয়ার আগেও কোনো কানাডীয় কোম্পানি ইসরায়েলে মর্টার সরবরাহ করেনি, সরাসরি কিংবা কোনো মধ্যস্থতাকারীর মাধ্যমেও নয়।

কানাডার পররাষ্ট্রমন্ত্রী হুঁশিয়ার করে বলেন, কেউ যদি বৈধ লাইসেন্স ছাড়া সামরিক সরঞ্জাম রপ্তানি করে, তাহলে তার বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এর মধ্যে জরিমানা, জব্দ এবং ফৌজদারি মামলার মতো পদক্ষেপ অন্তর্ভুক্ত থাকবে।  

“আমরা কখনোই চাই না, কানাডায় তৈরি অস্ত্র ফিলিস্তিনে এই ভয়াবহ সংঘাতে ব্যবহৃত হোক,” বলেন তিনি।

তবে ২৯ জুলাই প্রকাশিত এক তদন্ত প্রতিবেদনে চারটি মানবাধিকার সংগঠন—ওয়ার্ল্ড বিয়ন্ড ওয়ার, ফিলিস্তিনি যুব আন্দোলন, কানাডিয়ানস ফর জাস্টিস অ্যান্ড পিস ইন দ্য মিডল ইস্ট এবং ইনডিপেনডেন্ট জিউিশ ভয়েসেস—একত্রে দাবি করে, ইসরায়েলি ট্যাক্স কর্তৃপক্ষের রেফারেন্সসহ পাওয়া নথি বলছে, এখনো ‘মিলিটারি ওয়েপন পার্টস’ ও ‘অ্যামুনিশন’ নামের পণ্য ইসরায়েলে যাচ্ছে, যেগুলো কানাডা থেকে পাঠানো হচ্ছে।

মঙ্গলবার অটোয়ায় আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে ফিলিস্তিনি যুব আন্দোলনের নেত্রী ইয়ারা শুফানি বলেন, “এই তথ্য থেকে স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে, কানাডা সরকার মুখে নিষেধাজ্ঞার কথা বললেও বাস্তবে ইসরায়েলকে সামরিকভাবে সহায়তা দিচ্ছে। ”

এই সংগঠনগুলো কানাডা থেকে ইসরায়েলে সামরিক সরঞ্জাম পাঠানোর প্রমাণ হিসেবে বাণিজ্যিক শিপমেন্টের বেশ কিছু কাগজপত্রও সংবাদ সম্মেলনে উপস্থাপন করেছে।

এমজে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।