ঢাকা, রবিবার, ১৯ শ্রাবণ ১৪৩২, ০৩ আগস্ট ২০২৫, ০৮ সফর ১৪৪৭

আন্তর্জাতিক

 যুক্তরাষ্ট্রের বাঙ্কার বিধ্বংসী বোমার খুঁত পেয়েছে চীন?

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১:২৮, আগস্ট ৩, ২০২৫
 যুক্তরাষ্ট্রের বাঙ্কার বিধ্বংসী বোমার খুঁত পেয়েছে চীন?

২০২৪ সালে ব্লু-১০৯ নামের মার্কিন বাঙ্কার বিধ্বংসী বোমা ব্যবহার করে লেবাননের প্রতিরোধ গোষ্ঠীর নেতাকে হত্যা করা হয়। গত জুন মাসেই ইরানে একইরকম অথচ বেশি শক্তিশালী জিবিইউ-৫৭ বোমার কথিত তাণ্ডব দেখাল যুক্তরাষ্ট্র।

এখন ইসরায়েলের ইচ্ছা, দেশটি নিজেই এমন অস্ত্র বানাবে। একই ভাবনা ভারতেরও। চীন কী করছে?

বাঙ্কার বিধ্বংসী বোমার ব্যাপারে চীনের খবরটি অন্যরকম। দেশটি ভারত বা ইসরায়েলের মতো নিজস্ব অস্ত্র তৈরিতে লেগে পড়েনি। বরং যুক্তরাষ্ট্রের আলোচিত জিবিইউ-৫৭  এর দুর্বলতা খুঁজে পেয়েছে বলে দাবি চীনের।  

চীনের জার্নাল অব গান লঞ্চ অ্যান্ড কন্ট্রোলে এ নিয়ে একটি গবেষণা প্রকাশ করা হয়েছে। দেশটির নর্থওয়েস্ট ইনস্টিটিউট অব মেকানিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের কুই জিংইয়ের নেতৃত্বে গবেষকরা আসলেই মার্কিন বাঙ্কার বিধ্বংসী বোমাটির একটি দুর্বলতা পেয়েছেন বলে মনে হচ্ছে।

ওই গবেষণায় বলা হয়েছে, ম্যাসিভ অর্ডন্যান্স পেনিট্রেটর বোমাটির সামনের নাকের মতো অংশটি প্রচণ্ড মজবুত করে বানানো হয়েছে। কিন্তু বোমাটির বাকি শরীরটি মাত্র কয়েক সেন্টিমিটার পুরু ইস্পাতের তৈরি। লক্ষ্যে পৌঁছানোর আগেই যদি বোমাটিকে বিমান বিধ্বংসী শেল দিয়ে আঘাত করা যায়, তাহলে যুক্তরাষ্ট্রের বাঙ্কার ধ্বংসের মিশন আকাশেই খতম।

চীনা গবেষকদের ব্যাখ্যাটি হল, জিবিইউ-৫৭ এর ডিমের মতো গোলগাল নাকটি লক্ষ্যবস্তুতে সরাসরি আঘাত করে। কিন্তু বোমাটির পাশের দিকগুলো এর দুর্বল অংশ। সেখানে কয়েকটি বিমান বিধ্বংসী গোলার আঘাত লাগলে বোমাটি ধ্বংস হয়ে যেতে পারে।

মার্কিন বোমাটি ধ্বংসে এটার গায়ে ৬৮ ডিগ্রির কম কোণে আঘাত করতে পারলেই সফল হওয়া যাবে বলে চীনা গবেষকদের দাবি। তাদের পরীক্ষায় আরও দেখা গেছে যে চার হাজার ৯০০ ফুটের বেশি গভীরে বোমাটি যেতে পারে না। কিন্তু তিন হাজার ৯০০ ফুটের মধ্যেই তাপ এবং মাটির নিচে থাকা পাথরখণ্ড বোমার বিস্ফোরক জ্বালিয়ে তোলে।

কিন্তু অনেক কৌশলগত বিশেষজ্ঞ চীনা এই গবেষণার সঙ্গে একমত নন। অনেকে বলছেন, স্নাইপারদের মতো করে বোমাটি আটকানোর কৌশল তাত্ত্বিকভাবে যুক্তরাষ্ট্রের শত্রুদের মনে আশা জাগাবে। কিন্তু যুদ্ধের বাস্তবতা যে আরও অনেক কঠিন। বিমান বাহিনী বোমা ফেলার অভিযান শুরু হওয়ার আগে বিমান বিধ্বংসী সিস্টেমগুলোকে ধ্বংস করতে ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ চালাতে পারে। এতে মার্কিনবিরোধীদের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা বলতে হয়তো কিছুই থাকবে না।

তাছাড়া, যুক্তরাষ্ট্রের দাবি, তাদের স্মার্ট বোমাগুলো সাধারণত আঘাত হানার ঠিক আগে গতিপথ পাল্টে লক্ষ্য ঠিক করে। তাই বোমাগুলোর চলার পথ আন্দাজ করা খুবই কষ্টের। যারা বিমান বিধ্বংসী গোলা ছুড়ে জিবিইউ-৫৭ কে ধ্বংস করতে চাইবেন, তারা ভাবনা-চিন্তা আর গোলা ছোড়ার জন্য সময় পাবেন হয়তো এক সেকেন্ডেরও কম।

আরও কথা আছে। চীন যে গবেষণা করেছে তা ভূপ্রকৃতি, যুক্তরাষ্ট্রের হুমকির ধরন এবং মার্কিনবিরোধীদের প্রযুক্তিগত সক্ষমতার ধরনের কারণে অন্য দেশের বেলায় কাজ নাও করতে পারে।

এমএইচডি
 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।