রাশিয়া-ইউক্রেন সংঘাতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প আসলে কোন পক্ষে? সম্প্রতি তিনি ইউক্রেনকে আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা প্যাট্রিয়ট দিচ্ছেন বলে যে খবর চাউর হয়েছে, তা থেকে কী মনে হচ্ছে? রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে এতদিন সুসম্পর্কের কথা বলে এখন কি তার পিঠে ছুরি মারলেন ট্রাম্প?
ট্রাম্প আসলে কোনো পক্ষেরই না। তিনি নিজেরটা ভাল বোঝেন, তিনি তার দেশ যুক্তরাষ্ট্রের স্বার্থই সবার উপরে রাখেন।
এখন কোন দেশ তাদের প্যাট্রিয়ট ক্ষেপণাস্ত্র ব্যাটারির মতো মূল্যবান অস্ত্রসম্ভার ইউক্রেনকে দান করবে, তা নিয়ে ইউরোপে চলছে ভাবনা-চিন্তা। এমনিতে প্যাট্রিয়ট আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাটি খুবই দামি। মার্কিন মিত্রদেশগুলোর কাছে সিস্টেমটির চাহিদা আকাশছোঁয়া। ইউক্রেনের শহরগুলো লক্ষ্য করে রাশিয়ার ছোড়া ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ঠেকাতে সিস্টেমটি বেশ কাজের বলে প্রমাণিত হয়েছে।
গত ১৪ জুলাই ট্রাম্প জানিয়েছেন, ন্যাটোতে পাঠানোর জন্য সবচেয়ে সেরা অস্ত্র তৈরি করছে যুক্তরাষ্ট্র। কিছু প্যাট্রিয়ট ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা কয়েক দিনের মধ্যে ইউক্রেনে পৌঁছানোর কথা। ট্রাম্প আরও জানান, তার ‘মেক অ্যামেরিকা গ্রেট অ্যাগেইন’ আন্দোলনের কয়েকজন শীর্ষস্থানীয় ব্যক্তি এমন সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করেছেন। তারা ইউক্রেনের প্রতি মার্কিন সমর্থনের বিরোধী।
পুতিনকে নিয়ে ট্রাম্পের ভাবনা-চিন্তায় পরিবর্তন এসেছে বলে মনে করা হচ্ছে। কারণ, ইউরোপীয় মিত্রদের সঙ্গে প্রস্তাবিত চুক্তি অনুযায়ী অতিরিক্ত আক্রমণাত্মক অস্ত্র পাঠাতে যুক্তরাষ্ট্রেরও ইচ্ছা আছে বলে ইঙ্গিত পাওয়া গেছে। যদিও ট্রাম্প মুখে বলেছেন, মস্কোতে আক্রমণ করা ইউক্রেনের উচিৎ হবে না। কিন্তু আনন্দে মেতেছে ইউক্রেন। দেশটি ও তাদের মিত্ররা অস্ত্র সরবরাহ নিয়ে ট্রাম্পের সিদ্ধান্তের বদলে খুশি। সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলো পর্যন্ত রাশিয়ার রাষ্ট্রপতি ভ্লাদিমির পুতিনের প্রশংসা করে আসছিলেন ট্রাম্প।
কিন্তু ট্রাম্পের ঘোষণার পর স্পষ্ট যে, ট্রাম্প একটি কাঠামো উপস্থাপন করেছেন, কোনো খোলামেলা পরিকল্পনা নয়। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউরোপের দশজন কর্মকর্তার মতে, ইউক্রেনের জন্য কোনো সমর্থন কতটা বাস্তবসম্মত হবে তা নির্ভর করবে কে কোন সরঞ্জাম সরবরাহ করবে তা নিয়ে সামনের আলোচনার ওপর। এখন আসল প্রশ্ন হল, ইউক্রেনকে প্যাট্রিয়ট কে দেবে, কখন দেবে?
ফিনল্যান্ড, ডেনমার্ক, সুইডেন, নরওয়ে, নেদারল্যান্ডস এবং কানাডা – এই ছয়টি ন্যাটো দেশের ব্যাপারে ট্রাম্প বলেছিলেন, তারা অস্ত্র কেনার প্রকল্পে অংশ নিতে রাজি ছিল। এর মধ্যে দুটি দেশের দূতাবাসের উচ্চপদস্থ সূত্র মার্কিন সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছে, তারা পরিকল্পনাটি ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গে ব্যক্তিগতভাবে জানতে পেরেছে। আরেক ইউরোপীয় রাষ্ট্রদূত বলেছেন, আগে থেকে কাউকেই কিছু জানানো হয়নি, তা তিনি নিশ্চিত। সবাই এখন যার যার মতো করে পরিকল্পনাটির মানে ভেবে নিচ্ছে।
এমএইচডি/এমএম