ইরানের তিনটি পারমাণবিক স্থাপনায় যুক্তরাষ্ট্রের বিমান হামলার পর জাতির উদ্দেশে ভাষণ দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। শনিবার (স্থানীয় সময়) রাত ১০টায় হোয়াইট হাউস থেকে দেওয়া ওই ভাষণে তিনি হামলাকে ‘অসাধারণ সামরিক সাফল্য’ হিসেবে বর্ণনা করেন।
ট্রাম্প বলেন, আজকের রাত ছিল ইরানের জন্য সবচেয়ে কঠিন এবং সম্ভবত সবচেয়ে ধ্বংসাত্মক। আমাদের হাতে এখনো অনেক লক্ষ্যবস্তু রয়েছে। যদি শান্তি না আসে, আমরা নির্ভুলতা, দ্রুততা ও দক্ষতার সঙ্গে পরবর্তী লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানব।
তিনি হুঁশিয়ার করে বলেন, এখন সময় শান্তির। না হলে, ইরানের জন্য অপেক্ষা করছে আরও ভয়াবহ ট্র্যাজেডি, যার পূর্বাভাস আমরা গত আট দিনে দেখেছি।
হামলার উদ্দেশ্য ব্যাখ্যা করতে গিয়ে ট্রাম্প বলেন, এই অভিযান চালানো হয়েছে ইরানের পারমাণবিক সমৃদ্ধকরণ ক্ষমতা ধ্বংস করতে। সেই সঙ্গে বিশ্বের অন্যতম সন্ত্রাসের মদদদাতা দেশটির পারমাণবিক হুমকি চিরতরে বন্ধ করতে।
এর আগে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে দেওয়া এক পোস্টে ট্রাম্প বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ইরানের যেকোনো ধরনের প্রতিশোধমূলক পদক্ষেপের জবাব হবে আরও শক্তিশালী এবং ভয়াবহ, যা আজ রাতের ঘটনাকেও ছাড়িয়ে যাবে। ’
তারও আগে তিনি জানান, যুক্তরাষ্ট্র ইরানের তিনটি পারমাণবিক স্থাপনায় সফলভাবে হামলা চালিয়েছে। তিনি দাবি করেন, ফরদো, নাটানজ ও ইসফাহানে যুক্তরাষ্ট্রের বিমানবাহিনী পূর্ণ বোমা বর্ষণ করেছে এবং সব যুদ্ধবিমান নিরাপদে ফিরে গেছে।
তিনি দাবি করেন, ইরানের ভূগর্ভস্থ ফরদো পরমাণু কেন্দ্র ‘ধ্বংস হয়ে গেছে’।
তবে ফরদো কেন্দ্রটি আসলেই ধ্বংস হয়েছে কিনা, সে বিষয়ে এখনো নিরপেক্ষভাবে কিছু বলা যাচ্ছে না। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরা এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, ট্রাম্প তার দাবি উপস্থাপন করেছেন একটি অজ্ঞাত সূত্রের বরাতে। অতীতে এমন একাধিক ঘটনা রয়েছে, যেখানে ট্রাম্প মিথ্যা বা ভুল তথ্য প্রচার করেছেন বলে প্রমাণিত হয়েছে। ফলে এই ঘোষণাকে ঘিরে তথ্যের নির্ভরযোগ্যতা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে।
এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতেও এই হামলাকে ঘিরে বিতর্ক শুরু হয়েছে। ডেমোক্র্যাট দলের কংগ্রেস সদস্য রো খন্না অভিযোগ করেছেন, ট্রাম্প এই হামলা চালিয়েছেন কংগ্রেসের অনুমোদন ছাড়াই। শনিবার এক্সে দেওয়া পোস্টে তিনি লিখেছেন, ট্রাম্প কংগ্রেসের কোনো অনুমোদন ছাড়াই ইরানে হামলা চালিয়েছেন। আমাদের এখনই ওয়াশিংটনে ফিরতে হবে এবং থমাস ম্যাসি ও আমার উত্থাপিত ওয়ার পাওয়ারস রেজল্যুশনের ওপর ভোট দিতে হবে, যাতে যুক্তরাষ্ট্র আরেকটি অন্তহীন মধ্যপ্রাচ্য যুদ্ধের ফাঁদে না পড়ে।
এমজে