ইরানের আরাক ভারী পানি পারমাণবিক রিঅ্যাক্টরে ইসরায়েলি হামলার ঘটনায় নিন্দা জানিয়েছে ইরানের পরমাণু শক্তি সংস্থা (এইওআই)।
বৃহস্পতিবার (১৯ জুন) এক বিবৃতিতে সংস্থাটি বলেছে, ইসরায়েল ‘আন্তর্জাতিক আইনের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন করে’ শাহিদ খন্দাব (আরাক নামেও পরিচিত) হেভি ওয়াটার কমপ্লেক্স ও গবেষণা চুল্লির ওপর আক্রমণ চালিয়েছে।
সংস্থাটি বলেছে, সকালে জায়োনিস্ট শত্রু যে হামলা চালিয়েছে, তা পরমাণু স্থাপনার ওপর হামলা নিষিদ্ধকারী আন্তর্জাতিক আইনের সরাসরি লঙ্ঘন।
এইওআই নিশ্চিত করেছে, এই হামলায় কোনো প্রাণহানির ঘটনা ঘটেনি এবং পূর্বসতর্কতা হিসেবে নেওয়া নিরাপত্তা ব্যবস্থার ফলে ওই এলাকার বাসিন্দারা কোনো ধরনের ঝুঁকিতে নেই।
ইরানি পরমাণু সংস্থার বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, অত্যাধুনিক পরমাণু গবেষণা কেন্দ্রের ওপর এই ধরনের হুমকি ও আগ্রাসনের বিষয়ে আমরা এর আগেও আন্তর্জাতিক পারমাণবিক শক্তি সংস্থাকে (আইএইএ) একাধিকবার জানিয়েছিলাম। কিন্তু দুঃখজনকভাবে সংস্থাটি কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নেয়নি। সকালের হামলার ঘটনাও আইএইএকে জানানো হয়েছে।
বৃহস্পতিবার সকালে আরাক ভারী পানি পারমাণবিক রিঅ্যাক্টরে হামলা চালায় ইসরায়েল। তার আগে রিঅ্যাক্টরের আশপাশে বসবাসকারী জনগণকে অবিলম্বে সেখান থেকে সরে যেতে হুঁশিয়ারি দিয়েছিল জায়োনিস্ট সেনাবাহিনী।
ভারী পানি পারমাণবিক রিঅ্যাক্টর ঠাণ্ডা রাখতে সাহায্য করে, তবে এর উপজাত হিসেবে প্লুটোনিয়াম উৎপন্ন হয় যা পারমাণবিক অস্ত্র তৈরিতে ব্যবহৃত হতে পারে। তবে ইরান বলেছে তাদের পারমাণবিক কর্মসূচি শুধুমাত্র বেসামরিক উদ্দেশ্যে।
প্লুটোনিয়ামের উৎপাদন সীমিত করার লক্ষ্যে ব্রিটেন এর আগে ইরানি সরকারের সঙ্গে আরাক রিঅ্যাক্টরের পুনঃনকশায় সহযোগিতা করছিল।
২০১৫ সালের চুক্তির আলোচনার অংশ হিসেবে, ইরান সম্মতি দিয়েছিল যে তারা তাদের ভারী পানি পশ্চিমা দেশগুলোর কাছে বিক্রি করবে। এমনকি যুক্তরাষ্ট্রও এক চুক্তিতে প্রায় ৩২ টন ভারী পানি ৮ মিলিয়নেরও বেশি ডলারে কিনেছিল।
সকালের এ ঘটনার মাধ্যমে ইসরায়েল-ইরান উত্তেজনার মাত্রা আরও বেড়েছে। উল্লেখ্য, ইসরায়েল দীর্ঘদিন ধরে ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচিকে একটি ‘অস্তিত্বগত হুমকি’ হিসেবে বিবেচনা করে আসছে। সম্প্রতি গাজা যুদ্ধের পর উভয় পক্ষের মধ্যে পাল্টাপাল্টি হুমকি-আক্রমণ বেড়েছে।
এমজে