ফক্স নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু বলেছেন, ইরানে শাসনব্যবস্থার পরিবর্তন বা ‘রেজিম চেঞ্জ’ ইসরায়েলের চলমান অভিজানের উদ্দেশ্য না হলেও, তা অবশ্যই হতে পারে— কারণ ইরানি সরকার খুবই দুর্বল।
নেতানিয়াহুর ভাষায়, জনগণ তাদের পাশে নেই।
তিনি আরও বলেন, পারস্য জাতি ও ইহুদি জাতির মধ্যে প্রাচীন বন্ধুত্ব রয়েছে। তার মতে, এই সময়ে যে সিদ্ধান্ত নিতে হবে, তা ইরানি জনগণেরই সিদ্ধান্ত— অর্থাৎ, ইসরায়েল তাতে হস্তক্ষেপ না করলেও গণবিক্ষোভ বা বিদ্রোহ ইরানিদের ইচ্ছা থেকেই আসবে।
নেতানিয়াহু যখন ইরানিদের পক্ষ থেকে সককার বিরোধী গণবিক্ষোভের আশা করছেন তখন ইরানের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে দেশটির স্থানীয় সংবাদমাধ্যমগুলো জানাচ্ছে, শুক্রবার ও শনিবার ইসরায়েলি হামলায় ইরানজুড়ে কমপক্ষে ১২৮ জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরও প্রায় ৯০০ জন, যাদের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
নিহতদের মধ্যে অন্তত ৪০ জন নারী এবং বেশ কয়েকজন শিশু রয়েছেন বলে নিশ্চিত করেছে ইরানি কর্তৃপক্ষ।
এদিকে রবিবার ইসরায়েল নতুন করে আকাশপথে একাধিক হামলা চালায় ইরানের রাজধানী তেহরানের বিভিন্ন জেলায়। লক্ষ্যবস্তু ছিল জনবহুল বেসামরিক এলাকা। হামলার শিকার স্থানের মধ্যে রয়েছে তাজরিশ স্কয়ার, কুদস স্কয়ার, শরিয়াতি অ্যাভিনিউ, ভেলিয়াসর স্কয়ার, সোহরাভার্দি স্ট্রিট।
তাজরিশ এলাকায় একটি বড় শপিং সেন্টার রয়েছে, আর ভেলিয়াসর স্ট্রিট রাজধানীর অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্যিক এলাকা। কুদস স্কয়ারে চালানো হামলায় শোহাদা হাসপাতালের মাত্র ৫০ মিটার দূরে বোমা পড়ে, যা উত্তর তেহরানের একটি প্রধান চিকিৎসাকেন্দ্র।
রবিবার বিকেলে তেহরানের বিভিন্ন এলাকায় নতুন করে বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিও ও ছবিতে রাজধানীর বিভিন্ন স্থান থেকে ধোঁয়ার বিশাল কুণ্ডলি উঠতে দেখা গেছে।
তেহরানের সাধারণ মানুষ জানিয়েছেন, শহরজুড়ে বিস্ফোরণে কেঁপে উঠেছে ভবনগুলো। রাষ্ট্রায়ত্ত সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, একাধিক আবাসিক এলাকায় বিস্ফোরণ হয়েছে এবং বিস্ফোরণের পর ধোঁয়ার দৃশ্য দেখা গেছে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, বেসামরিক এলাকা লক্ষ্য করে ইসরায়েলের এই বিমান হামলা যুদ্ধাপরাধের শামিল এবং এটি দ্বন্দ্বকে আরও ভয়াবহ রূপ দিতে পারে। আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলো এ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।
এমএম