ইরানের সর্বশেষ ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় মধ্য ইসরায়েলের রিশন লেজিয়ন শহরের একটি আবাসিক এলাকায় প্রাণ হারিয়েছেন দুজন। আহত হয়েছেন অন্তত ২১ জন।
সাধারণত ইসরায়েলে কোনো অঞ্চল লক্ষ্য করে হামলা হলে স্বয়ংক্রিয়ভাবে সতর্কতা জারি হয়। কিন্তু রিশন লেজিয়নের এই আবাসিক এলাকায় ইরানি ক্ষেপণাস্ত্র আঘাত হানার সময় কোনো সতর্কতা সিস্টেম কাজ করেনি। ফলে অনেকেই ছিলেন ঘরের ভেতরে কিংবা ঘুমন্ত অবস্থায়। তড়িঘড়ি করে বাঙ্কারে নামার সুযোগ না পেয়ে অনেকে হতাহত হন।
বাসিন্দারা অভিযোগ করছেন, হামলার আগে হোম ফ্রন্ট কমান্ডের পক্ষ থেকেও কোনো ধরনের মোবাইল সতর্কবার্তা আসেনি। অথচ আগের রাতেই দেশজুড়ে একাধিকবার সাইরেন বাজানো হয়েছিল। হঠাৎ করে একেবারে নিরবতা ভেঙে ঘটে বিস্ফোরণ, আর এতেই আতঙ্ক ছড়ায়।
ড্যানিয়েল নামে এক বাসিন্দা ওয়াল্লা নিউজকে বলেন, একটা বিশাল বিস্ফোরণের শব্দ শুনলাম। পুরো পাড়া কেঁপে উঠল, বাড়ির ভেতর সবকিছু নড়ে উঠল। ঘরের দেওয়াল ধসে পড়েছে। আমার সন্তানরা এখনো আতঙ্কে কাঁপছে। আমরা অলৌকিকভাবে বেঁচে গেছি কারণ রাতে সাইরেনের শব্দে আমরা আগেই বাঙ্কারে ঘুমিয়ে পড়েছিলাম।
নাআর নিমানি নামে আরেক বাসিন্দা বলেন, আমি ঘটনাস্থল থেকে একদম কাছে থাকি। সাইরেন বাজেনি। আমরা শুধু বিস্ফোরণের শব্দ শুনেছি। ভয় পেয়ে শিশু আর কুকুরকে নিয়ে তড়িঘড়ি করে বেসমেন্টে নেমে পড়ি। আশপাশের সবকিছু ধ্বংস হয়ে গেছে, গাড়িগুলো আগুনে পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। বিদ্যুৎ চলে গেছে, চারদিকে কাচ আর ধুলায় ভর্তি। এতটা ভয়াবহতা কখনও দেখিনি। এটা কল্পনাতীত। যদিও এ ঘটনার দুই মিনিটের মধ্যেই উদ্ধারকারী বাহিনী চলে আসে। কিন্তু ততক্ষণে ক্ষতি যা হওয়ার হয়ে গেছে।
ইসরায়েলি সেনাবাহিনী (আইডিএফ) জানিয়েছে, সাইরেন বাজানো বা সতর্কবার্তা না আসার কারণ তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। এবার প্রথমবারের মতো ‘পার্সোনাল মেসেজ’ নামে একটি নতুন প্রযুক্তি ব্যবহৃত হয়, যা ‘সেল ব্রডকাস্ট’ প্রযুক্তির মাধ্যমে নির্দিষ্ট এলাকার মোবাইল ফোনে সরাসরি সতর্কতা পাঠায়। কিন্তু রিশন লেজিয়নের ক্ষেত্রে সেটি কেন সক্রিয় হয়নি, তা বিশ্লেষণ করছে সেনাবাহিনী।
নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা বলছেন, অত্যাধুনিক প্রযুক্তির দাবি থাকলেও হোম ফ্রন্ট কমান্ডের এই ব্যর্থতা ভবিষ্যতের জন্য বড় হুমকি হয়ে উঠতে পারে। ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার প্রতি সাধারণ মানুষের আস্থা এবার বড় এক ধাক্কা খেল।
তথ্যসূত্র: ওয়াল্লা নিউজ, টাইমস অব ইসরায়েল ও রয়টার্স
এমজে