ভারতে গুজরাতের আহমেদাবাদ বিমানবন্দরের কাছে মেঘানিনগরে বিধ্বস্ত হওয়া প্লেনে মোট ২৪২ জন যাত্রী ছিলেন। ভয়াবহ এ দুর্ঘটনায় বহু হতাহতের শঙ্কা করা হচ্ছে।
ভারতের বেসামরিক বিমান পরিবহণ নিয়ন্ত্রক সংস্থা (ডিজিসিএ) জানিয়েছে, প্লেনটিতে মোট ২৪২ জন ছিলেন। তাদের মধ্যে ২৩২ জন যাত্রী এবং ১০ জন ক্রু সদস্য।
সরকারি সূত্র বলছে, দুর্ঘটনাকবলিত প্লেনেটি বোয়িং সংস্থার বি-৭৮৭ ড্রিমলাইনার ছিল। ১৬৯ জন ভারতীয় নাগরিক, ৫৩ জন ব্রিটিশ নাগরিক, একজন কানাডিয়ান নাগরিক এবং সাতজন পর্তুগিজ নাগরিক নিয়ে এটি উড়াল দিয়েছিল। বিমানের দুই পাইলটের নাম ক্যাপ্টেন সুমিত সবরওয়াল এবং ফার্স্ট অফিসার ক্লাইভ কুন্দর।
এই ধরনের প্লেনে সর্বোচ্চ ২৯০ থেকে ৩০০ জন যাত্রী থাকতে পারে বলে জানিয়েছে ডিজিসিএ সূত্র।
ভারতের বিমান সংস্থার এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, এতে যাত্রীর সংখ্যা ২৩০। বাকি ১২ জন ছিলেন বিমানকর্মী। তাদের মধ্যে দু’জন পাইলট।
এয়ার ইন্ডিয়া সূত্রে জানা গেছে, দুর্ঘটনাগ্রস্ত প্লেনে ছিলেন গুজরাতের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী বিজেপি নেতা বিজয় রূপাণী। তিনি লন্ডনে যাচ্ছিলেন। তার কোনো খোঁজ এখনও পাওয়া যায়নি।
ভারতীয় গণমাধ্যমগুলোর খবর, এয়ার ইন্ডিয়ার ১৭১ নম্বরের এই বিমানটি দুপুর ১টা ১০ মিনিটে আহমেদাবাদ বিমানবন্দর থেকে ওড়ে। সেটি ব্রিটেনের গ্যাটউইক বিমানবন্দরে উদ্দেশে রওনা দিয়েছিল। ওড়ার কিছুক্ষণের মধ্যেই লোকালয়ের মাঝে প্লেনটি ভেঙে পড়ে। দূর থেকে আগুন এবং কালো ধোঁয়া দেখা যায়। ভেঙে পড়ার পর বিমানটিতে আগুন ধরে যায়। দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়েছে উদ্ধারকর্মীদের বেশ কয়েকটি দল। তারা আহতদের উদ্ধার করে স্থানীয় সিভিল হাসপাতালে নিয়ে যাচ্ছেন।
কী কারণে প্লেনটি ওড়ার কিছু সময় পরই আছড়ে পড়ে বিধ্বস্ত হলো, তা এখনও স্পষ্ট নয়।
ঘটনার পর দুর্ঘটনাস্থলের আশপাশের সমস্ত রাস্তা বন্ধ করে দিয়েছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। বিমান পরিষেবা বন্ধ রয়েছে আহমেদাবাদ বিমানবন্দরেও। চলছে উদ্ধারকাজ।
স্থানীয় সূত্রে খবর, প্লেনটি ওড়ার কিছুক্ষণের মধ্যেই ভেঙে পড়ে। ফলে সেটি বেশি উচ্চতায় পৌঁছাতে পারেনি। তাই ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
ভারতের কেন্দ্রীয় বেসামরিক বিমান পরিবহণমন্ত্রী রামমোহন নায়ডুর সঙ্গে কথা বলে পরিস্থিতি সম্পর্কে খোঁজখবর নিয়েছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। নায়ডু জানিয়েছেন, উদ্ধারকাজের ওপর নজর রাখতে তিনি শিগগিরই আহমেদাবাদ পৌঁছাচ্ছেন। গুজরাতের মুখ্যমন্ত্রী ভূপেন্দ্র প্যাটেলকে ফোন করেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। গুজরাত সরকারকে প্রয়োজনীয় সব ধরনের সাহায্য করার আশ্বাস দিয়েছেন তিনি।
গুজরাতের মুখ্যমন্ত্রী সামাজিকমাধ্যমে লেখেন, ‘আহমেদাবাদে এয়ার ইন্ডিয়ার বিমান দুর্ঘটনায় আমি শোকাহত। আমি প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের দ্রুত উদ্ধারকাজ শুরু করার নির্দেশ দিয়েছি। যুদ্ধকালীন তৎপরতায় আহতদের চিকিৎসা করারও নির্দেশ দিয়েছি। ’
সামাজিকমাধ্যমে একটি পোস্ট করে এই ঘটনায় শোক প্রকাশ করেছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও। তিনি লেখেন, ‘আহমেদাবাদের বিমান দুর্ঘটনায় আমি গভীরভাবে শোকাহত। ’
এসএএইচ