ভারতের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ইসরোর নতুন স্যাটেলাইট বা উপগ্রহ উৎক্ষেপণ অভিযান ব্যর্থ হয়েছে।
ইওএস-০৯ নামে একটি কৃত্রিম উপগ্রহ মহাকাশে পাঠানোর জন্য রোববার (১৮ মে) ভোর ৫টা ৫৯ মিনিটে পিএসএলভি-সি৬১ রকেটের মাধ্যমে এই মিশনের যাত্রা শুরু হয়।
ইওএস-০৯ একটি উন্নত ভূ-পর্যবেক্ষণ উপগ্রহ, যা সব ধরনের আবহাওয়ায়, দিন হোক বা রাত—যেকোনো সময় পৃথিবীর পৃষ্ঠের উচ্চ-রেজুলেশনের ছবি তুলতে সক্ষম। এই ক্ষমতা ভারতের নজরদারি ব্যবস্থাকে উল্লেখযোগ্যভাবে সাহায্য করত।
মিশনের প্রথম ও দ্বিতীয় ধাপ সফলভাবে সম্পন্ন হলেও, তৃতীয় ধাপে যান্ত্রিক গোলযোগ দেখা দেয়। ইসরোর পক্ষ থেকে জানানো হয়, তৃতীয় ধাপে ব্যবহৃত মোটরটিতে ২০৩ সেকেন্ডের মাথায় ত্রুটি ধরা পড়ে। ফলে কৃত্রিম উপগ্রহটিকে নির্ধারিত কক্ষপথে পাঠানো সম্ভব হয়নি। উপগ্রহটি পৃথিবী থেকে ৫২৪ কিলোমিটার উচ্চতায় সান-সিংক্রোনাস পোলার অরবিট অর্থাৎ সূর্যালোকের সঙ্গে সমন্বয় করে নির্ধারিত কক্ষপথে প্রতিস্থাপনের কথা ছিল। কিন্তু যান্ত্রিক গোলযোগের কারণে সেই চেষ্টা ব্যর্থ হয়।
যান্ত্রিক ত্রুটির পর মিশনটি বাতিল করতে বাধ্য হন ইসরোর কর্মকর্তারা। মিশনের ব্যর্থতা স্বীকার করে সেখানে বক্তব্য দেন সংস্থার প্রধান ভি নারায়ণন।
পরে এক বিবৃতিতে ইসরো জানায়, এটি ছিল তাদের ১০১তম অভিযান। পিএসএলভি-সি৬১ উৎক্ষেপণের প্রথম দুই ধাপ পর্যন্ত সবকিছু স্বাভাবিক থাকলেও তৃতীয় ধাপে একটি নির্দিষ্ট পর্যবেক্ষণের ভিত্তিতে অভিযানটি বাতিল করা হয়।
এদিকে ব্যর্থতার কারণ অনুসন্ধানে ইসরো ইতোমধ্যে একটি বিশ্লেষণ কমিটি গঠন করেছে। সংস্থাটি জানায়, তারা বিষয়টি খতিয়ে দেখছে এবং ভবিষ্যতের জন্য প্রয়োজনীয় শিক্ষা গ্রহণ করা হবে। রকেটের তাপ নিরোধক বর্ম বা হিট শিল্ড ঠিকভাবে কাজ না করায় এই মিশন বাতিল করতে হয় বলে প্রাথমিকভাবে জানা যায়।
উল্লেখ্য, ২০১৭ সাল থেকে ইসরো তাদের বিভিন্ন কৃত্রিম উপগ্রহ পাঠানোর কাজে পিএসএলভি রকেট ব্যবহার করছে। এখন পর্যন্ত এই রকেটের ৬৩টি উৎক্ষেপণ সম্পন্ন হয়েছে, যার মধ্যে এটি ছিল তৃতীয় ব্যর্থ অভিযান। পাঠানো কৃত্রিম উপগ্রহটির ওজন ছিল ১ হাজার ৬৯৬ কেজি।
মহাকাশ গবেষণায় ভারতের জন্য এটি একটি বড় ধাক্কা হিসেবে দেখা হচ্ছে। তবে ইসরো বলছে, প্রযুক্তিগত বিশ্লেষণ ও অভিজ্ঞতার মাধ্যমে তারা দ্রুত ঘুরে দাঁড়াবে।
এমজে/এমএম