ঢাকা: ব্রডব্যান্ড অপারেটরদের সংগঠনের ঘোষণার পর গ্রাহক পর্যায়ে ইন্টারনেটের গতি বাড়ছে। ঘোষণার পর একই দামে দ্বিগুণ বা তারও বেশি গতির ইন্টারনেট পাচ্ছেন গ্রাহকেরা।
ইন্টারনেট সেবাদাতা অপারেটরদের সংগঠন- ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডটার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (আইএসপিএবি) বলছে, সপ্তাহ খানিকের মধ্যে সারা দেশে গ্রাহকেরা দ্বিগুণ গতির ইন্টারনেট পাবেন।
গত ১৭ এপ্রিল বিটিআরসিতে টিআরএনবি আয়োজিত ‘ইন্টারনেট সেবা: সমস্যা, সম্ভাবনা ও করণীয়’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডটার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (আইএসপিএবি) সভাপতি ইমদাদুল হক ৫০০ টাকায় পাঁচ এমবিপিএসের পরিবর্তে ১০ এমবিপিএস ইন্টারনেট দেওয়ার ঘোষণা দেন।
ঘোষণার পরদিন থেকে ইন্টারনেট স্পিড বাড়ানোর কার্যক্রম শুরু করে আইএসপিগুলো। মঙ্গলবার (২২ এপ্রিল) রাজধানীর কয়েকটি স্থানে খোঁজ নিয়ে ইন্টারনেট গতি আগের তুলনায় বৃদ্ধির তথ্য পাওয়া গেছে।
রাজধানীর কারওয়ান বাজার, ফার্মগেট, মিরপুর, নর্দ্দা এলাকায় ব্রডব্যান্ড গ্রাহকদের ইন্টারনেটের গতি আগের তুলনায় বেড়েছে বলে জানিয়েছেন কয়েকজন গ্রাহক। এলাকাভেদে ৫.৫, ১১, ১৮ এমবিপিএস গতি পাওয়া গেছে।
আইএসপিএবি সভাপতি ইমদাদুল হক বাংলানিউজকে জানান, ৫ থেকে বাড়িয়ে ১০ এমবিপিএস গতি বাড়ানোর কাজ মোটামুটি হয়ে গেছে। দুয়েকটি জায়গায় হয়তো বাকি থাকতে পারে। কারণ, তাদের ব্যান্ডউইথ আপডেট করতে হচ্ছে। অনেকের আবার ইক্যুপমেন্ট (যন্ত্রপাতি) পরিবর্তন করতে হচ্ছে। অনেকের হয়তো নির্দিষ্ট ক্যাপাসিটির রাউটার আছে, সেই রাউটার আপডেট করতে হচ্ছে। রাউটার এবং ব্যান্ডউইথ আপডেট করার জন্য অনেকের সময় নিচ্ছে। বলতে পারেন সারা দেশে ৮০-৯০ শতাংশ কাভারেজ দিতে পেরেছি। বাদ বাকি আশা করি সপ্তাহ খানিকের মধ্যে শতভাগ হতে পারে।
গতি বাড়ানোর জন্য কী পরিমাণ খরচ বাড়বে- জানতে চাইলে তিনি বলেন, শতভাগ এলাকায় ১০ এমবিপিএস দিতে ব্যান্ড উইথের খরচ ৫ শতাংশ বাড়বে। আমাদের মোট খরচের মধ্যে ব্যান্ডউইথের খরচ ২০ শতাংশ। অন্যান্য খরচ বেশি; যেমন- অপারেটিং, ম্যান পাওয়ার, বিদ্যুৎ বিল, অপারেটিং, ভ্যাট-ট্যাক্স কষ্ট বেশি।
তিনি বলেন, আপডেট করার জন্য অপারেটরদের বাড়তি ব্যান্ডউইথ কিনতে হচ্ছে। এজন্য আমরা বলেছি ব্যান্ডউইথের দাম কমান, ট্রান্সমিশন কস্ট কমান- তাহলে আমরা আরও দাম কমাতে পারব। শুধু আমরাই ছাড় দেব, ওপরের লেয়ার ছাড় দেবে না- তা তো হবে না!
তিনি জানান, ১৫০ টাকার নিচে ব্যান্ডউইথের দাম নামিয়ে আনতে হবে। এনটিটিএন পর্যায়ে দাম কমানো এবং অ্যাকটিভ শেয়ারিং-এর অনুমোদন দেওয়া প্রয়োজন। অ্যাকটিভ শেয়ারিং হলো- একই ইক্যুপমেন্ট দিয়ে যাতে একে অপরের নেটওয়ার্ক ব্যবহার করতে পারি। তাতে আমাদের খরচ কমে যাবে এবং কোয়ালিটিও বেটার হবে।
বর্তমান আইএসপিগুলো চার হাজার জিবিপিএস ব্যান্ড উইথ সরবরাহ করছে জানিয়ে তিনি বলেন, ১০ এমবিপিএস দিলে আরও ৫-১০ শতাংশ খরচ যোগ হবে।
সারা দেশে এক কোটি ৫০ লাখের মতো গ্রাহক রয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, মোট গ্রাহকের ঢাকায় প্রায় অর্ধেক। লাইসেন্সধারী তিন হাজার আইএসপির মধ্যে ২ হাজার ২০০ বর্তমানে অপারেশনে আছে। কত পরিমাণ বেশি লাগবে- ব্যান্ড উইথ কেউ হয়তো আগেই কিনে রেখেছে, এখন তার ফুলফিল হচ্ছে।
বিভিন্ন স্তরে ইন্টারনেটের খরচ কমানোর ঘোষণা দিয়ে সামিট কমিউনিকেশন্স। ইন্টারনেট দামে ১০ শতাংশ এবং এনটিটিএন পর্যায়ে ১৫-২০ শতাংশ ছাড়র ঘোষণা দিয়েছে অপারেটরটি।
মঙ্গলবার (২২ এপ্রিল) এক বিজ্ঞপ্তিতে সামিট কমিউনিকেশন্স জানায়, আমরা আইএসপি ইন্ডাস্ট্রির ৫০০ টাকায় ১০ এমবিপিএস গতির ইন্টারনেট সরবরাহের সিদ্ধান্তকে সাধুবাদ জানাই। এই সরকারি উদ্যোগকে সমর্থন করতে এবং আইএসপি প্রতিষ্ঠানগুলোকে উন্নতমানের ইন্টারনেট সাশ্রয়ী দামে সরবরাহে সহায়তা করতে সামিট কমিউনিকেশনসের ব্যবস্থাপনা কমিটি ইন্টারনেটের দামে ১০ শতাংশ এবং এনটিটিএন পর্যায়ে ১৫-২০ শতাংশ ছাড়ের ঘোষণা করতে পেরে আনন্দিত।
আইএসপিএবি সভাপতি জানান, আনুষঙ্গিক খরচগুলো কমালে আমরা ২০ এমবিপিএস গতির ইন্টারনেট দিতে পারব।
বাংলাদেশ সময়: ০৭১৯ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৩, ২০২৫
এমআইএইচ/এসএএইচ