বাংলাদেশ সরকার ১২০০ টন ইলিশ ভারতে রপ্তানির অনুমোদন দিলেও চলতি পূজার মৌসুমে ভারতে এসেছে মাত্র ১৪৪ টন ইলিশ। এর মধ্যে ৩৯ টন গেছে ত্রিপুরায়, বাদবাকি এসেছে কলকাতায়।
এমন তথ্য জানিয়েছেন ভারতের ফিস ইমপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সৈয়দ আনোয়ার মাকসুদ। একই সাথে তিনি মনে করেন, বাংলাদেশের ইলিশ দুই পাড়ের বাঙালির মধ্যে সেতুবন্ধন তৈরি করে। এবার সেভাবে ইলিশ না মেলায় দাম বেড়েছে ঢাকা-কলকাতায়। তবে কলকাতার ব্যবসায়ীরা বলছেন, দাম বাড়লেও বাংলাদেশের ইলিশের চাহিদা ছিল ক্রেতাদের। ইলিশ কম আসায় আফসোস করছেন ব্যবসায়ীরা।
শেষ হয়েছে দুর্গাপূজা। এবার দীপাবলি ও কালীপূজা। প্রতিবছর এই সময় কলকাতার বাজার ছেয়ে থাকে বাংলাদেশের ইলিশে। তবে এবারের চিত্র ভিন্ন। পূজার মৌসুম অথচ কলকাতায় নেই বাংলাদেশের রুপালি ফসল পদ্মার ইলিশ। এখন শহরের বাজার ছেয়ে আছে গুজরাট আর মিয়ানমারের ইলিশে। এ কারণে কিছুটা উদাস মাছ ব্যবসায়ীরা।
চলতি মৌসুমে ভারতে এবার প্রথম দফায় ইলিশ এসেছে ১৮ সেপ্টেম্বর। রপ্তানির অনুমোদিত শেষ সময় ছিল ৫ অক্টোবর পর্যন্ত। তবে এই সময়কালে অনুমতি থাকলেও পশ্চিমবঙ্গে মাছ এসেছে দুই ধাপে অর্থাৎ ১৮ ও ১৯ সেপ্টেম্বর। এরপর থেকে ভারতের বাজারে আসেনি বাংলাদেশের ইলিশ।
সোমবার (১৩ অক্টোবর) মুম্বাই থেকে কলকাতায় ফিরেছেন ফিস ইমপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি আনোয়ার মাকসুদ। তিনি বলেন, বাংলাদেশ সরকার আমাদের ১২০০ মেট্রিক টন ইলিশের অনুমতি দিয়েছিল। কিন্তু এবারে ইলিশের মৌসুমের শুরু থেকেই বাংলাদেশের জালে খুব কম ধরা পড়েছে ইলিশ। এ কারণে বেশি মাছ ভারতে আসেনি, যার ফলে মাছের দাম অনেক বেশি ছিল।
তিনি আরও বলেন, গত বছর অর্থাৎ ২০২৪ সালে ইলিশ এসেছিল ৫৭৭ মেট্রিক টন। রেকর্ড অনুযায়ী, এবার সবচেয়ে কম। তবে যাই হোক কিছু করার নেই, আশা রাখছি আগামী বছর ভালো যাবে।
আনোয়ার মাকসুদ মনে করেন, এবারে সেভাবে বাংলাদেশিদে পাতেই ওঠেনি ইলিশ। তারপরও এই অবস্থায় ভারতে মাছ পাঠিয়েছে তারা। এটাই সুসম্পর্কের বার্তা দিচ্ছে। আমি মনে করি, এবার সেভাবে ব্যবসা হোক না হোক আমাদের কথা রেখেছে বাংলাদেশ। আমরা এবারও ইলিশ চেয়েছি, তারা পাঠিয়েছেন। আমি মনে করি ইলিশ কূটনীতিতে বাংলাদেশ শতভাগ ভারতের সঙ্গে সেতুবন্ধনের কাজ করেছে।
অন্যদিকে কলকাতার খুচরা মাছ ব্যবসায়ীরা বলছেন, বাংলাদেশের ইলিশের চাহিদা রয়েছে ব্যাপক, কিন্তু বাজারে যোগান ছিল না। পূজার মৌসুমে বাংলাদেশের ইলিশের চাহিদাই সবচেয়ে বেশি। এই মুহূর্তে কলকাতায় গুজরাটের ইলিশ কিলো প্রতি দর যাচ্ছে ৮০০ রুপি, অপরদিকে মিয়ানমারের ইলিশের কেজি প্রতি দর রয়েছে হাজার থেকে ১২০০ রুপি। বাংলাদেশের ইলিশ যদি বাজারে থাকত, তবে তার দাম থাকত প্রায় আড়াই হাজার রুপির বেশি।
ভিএস/এমজেএফ