ঢাকা, শনিবার, ১ ভাদ্র ১৪৩২, ১৬ আগস্ট ২০২৫, ২১ সফর ১৪৪৭

ভারত

‘জনমিতিক পরিবর্তনের বিপদ’ মোকাবিলায় মিশন ঘোষণা করলেন মোদী

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২২:০৬, আগস্ট ১৫, ২০২৫
‘জনমিতিক পরিবর্তনের বিপদ’ মোকাবিলায় মিশন ঘোষণা করলেন মোদী ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী

‘বিদেশি অনুপ্রবেশের’ কারণে ভারতের সীমান্ত সংলগ্ন অঞ্চলে জনমিতিক পরিবর্তন ঘটছে অভিযোগ তুলে দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এটিকে ‘বিপদ’ আখ্যা দিয়েছেন। এমনকি এই ‘বিপদ’ মোকাবিলায় তিনি মিশন ঘোষণা করেছেন।

শুক্রবার (১৫ আগস্ট) দিল্লির লালকেল্লা ময়দানে ভারতের স্বাধীনতা দিবস উদযাপন অনুষ্ঠানে মোদী এই ঘোষণা দেন। তিনি এসময় যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক, পাকিস্তানের সঙ্গে দ্বৈরথসহ বিভিন্ন বিষয়ে কথা বলেন।

মোদী বলেন, সীমান্ত অঞ্চলের জনমিতিক পরিবর্তন জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি স্বরূপ। এটি সংঘাতের বীজ বপণ করে। কোনো দেশই অনুপ্রবেশকারীদের সামনে আত্মসমর্পণ করতে পারে না। তাহলে আমরা কীভাবে তা মেনে নেব? এমন কর্মকাণ্ডকে অনুমতি না দেওয়া আমাদের কর্তব্য—আমাদের পূর্বপুরুষদের প্রতি, যারা আমাদের একটি স্বাধীন ভারত উপহার দিয়েছেন। তাই আমি লালকেল্লার প্রাচীর থেকে ঘোষণা করছি যে, আমরা একটি উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন জনমিতি মিশন শুরু করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এই মিশন ভারতের ঘাড়ে ভর করা এই বিপদ মোকাবিলা করবে।

অনুপ্রবেশকারীরা ভারতের যুবসমাজের রুটি রোজগার কেড়ে নিচ্ছে দাবি করে মোদী বলেন, এরা আমাদের দেশের কন্যা বোনদের টার্গেট করছে। এটা আর কোনোভাবেই সহ্য করা হবে না। এই অনুপ্রবেশকারীরা নিরীহ আদিবাসীদের বোকা বানিয়ে তাদের বনভূমি দখল করছে। এই দেশ এটা সহ্য করবে না।

পাকিস্তানে চালানো ‘অপারেশন সিঁদুর’ অভিযানে ভারতীয় সেনাবাহিনীর প্রশংসা করার পাশাপাশি ইসলামাবাদকে কড়া বার্তা দিয়ে মোদী বলেন, ভারত পারমাণবিক ব্ল্যাকমেইলের কাছে কখনোই নতি স্বীকার করবে না।

যুক্তরাষ্ট্রের আরোপিত ৫০ শতাংশ শুল্ক নিয়ে ভারতের প্রধানমন্ত্রী বলেন, ভারত সরকার তার কৃষকদের স্বার্থের বিষয়ে কখনো আপস করবে না। ভারতের কৃষক, মৎস্যজীবী এবং পশুপালক আমাদের অগ্রাধিকার। আমাদের কৃষকদের স্বার্থে ভারত কখনোই কোনো আপস মেনে নেবে না।

মোদী প্রায় ১০৩ মিনিট বক্তৃতা দেন। ভারতের ইতিহাসে এই প্রথম কোনো প্রধানমন্ত্রী এত দীর্ঘ সময় বক্তৃতা দিলেন।

নানা আয়োজনে স্বাধীনতা দিবস উদযাপন
এদিন গোটা ভারতজুড়ে ৭৯তম স্বাধীনতা দিবস উদযাপিত হয়েছে। কলকাতার রেড রোডেও স্বাধীনতা দিবসের কুচকাওয়াজ হয়। এতে অংশ নেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।  

অনুষ্ঠানে রাজ্য সরকারের বিভিন্ন প্রকল্পের পাশাপাশি বেশ কিছু সরকারি সংস্থা ও স্কুলের তরফে বিভিন্ন প্রদর্শনী ও শারীরিক কসরত দেখানো হয়।

ভারতের সীমান্তরক্ষীরাও দিবসটি উদযাপন করেছেন। পশ্চিমবঙ্গের উত্তর ২৪ পরগনা জেলার পেট্রাপোল সীমান্তের নোমান্স ল্যান্ডে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)-এর ১৪৫ নম্বর ব্যাটালিয়নের সদস্যরা পতাকা উত্তোলন করেন। পরে সীমান্তে কর্তব্যরত ‘বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ’ (বিজিবি)-এর সদস্যদের হাতে মিষ্টি তুলে দেয় বিএসএফ। এর মধ্যে দিয়ে দুই বাহিনীর সদস্যদের মধ্যে সৌহার্দ্য বিনিময় হয়। একই ছবি ধরা পড়ে ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তের ঘোজাডাঙ্গা, চ্যাংড়াবান্ধা, ফুলবাড়ী সীমান্তেও।

দেশের সব রাজ্যে যথাযথ মর্যাদার সঙ্গে স্বাধীনতা দিবস উদযাপন করা হয়েছে। স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে কড়া নিরাপত্তায় মুড়ে ফেলা হয়েছিল লালকেল্লাসহ দিল্লি, মুম্বাই, বেঙ্গালুরু, কলকাতা, পাঞ্জাব, শ্রীনগরসহ গুরুত্বপূর্ণ শহরগুলো।

ভিএস/এইচএ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।