ঢাকা, মঙ্গলবার, ১৮ ভাদ্র ১৪৩২, ০২ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৯ রবিউল আউয়াল ১৪৪৭

স্বাস্থ্য

চিকিৎসা বিজ্ঞানের উন্নয়নে এআই বিশেষ অবদান রাখতে সক্ষম: বুয়েট উপাচার্য

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭:২১, সেপ্টেম্বর ২, ২০২৫
চিকিৎসা বিজ্ঞানের উন্নয়নে এআই বিশেষ অবদান রাখতে সক্ষম: বুয়েট উপাচার্য সেমিনারে বুয়েটের ভাইস চ্যান্সেলর (উপাচার্য) অধ্যাপক ড. আবু বোরহান মোহাম্মদ বদরুজ্জামান।

ঢাকা: চিকিৎসা বিজ্ঞানের উন্নয়নে এআই বিশেষ অবদান রাখতে সক্ষম বলে উল্লেখ করেছেন বুয়েটের ভাইস চ্যান্সেলর (উপাচার্য) অধ্যাপক ড. আবু বোরহান মোহাম্মদ বদরুজ্জামান।

মঙ্গলবার (২ সেপ্টেম্বর) বিএমইউয়ের সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতালের লেকচার হলে বিএমইউ ও বুয়েটের যৌথ উদ্যোগে রেডিওলজিতে এআই এর ব্যবহার, গুরুত্ব ও স্থানীয়ভাবে এআই এর উন্নয়ন বিষয়ক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন বিএমইউয়ের ভাইস চ্যান্সেলর অধ্যাপক ডা. মো. শাহিনুল আলম।  

বুয়েটের বায়োমেডিকেল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের তত্ত্বাবধানে ‘এন আর্টিফিশিয়াল ইন্টিলিজেন্স এনাবেল্ড ওয়েব-অ্যাপ্লিকেশন ফর অ্যাসিসটিভ অনলাইন রিপোর্টিং অফ রেডিওলজিক্যাল ইমেজেস’ শীর্ষক গবেষণা প্রকল্পের ডিসেমিনেশনের অংশ হিসেবে এই সেমিনারের আয়োজন করা হয়। এ প্রকল্পে অর্থায়ন করেছে বিশ্ব ব্যাংক।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে বুয়েটের ভাইস চ্যান্সেলর অধ্যাপক ড. আবু বোরহান মোহাম্মদ বদরুজ্জামান বলেন, উন্নত প্রযুক্তির এ বিশ্বে এআই একটি বিশেষ জায়গা করে নিয়েছে। চিকিৎসা বিজ্ঞানের উন্নয়নে এআই বিশেষ অবদান রাখতে সক্ষম। তবে এআই থেকে কার্যকর সুফল পেতে স্থান ও পরিবেশ ভিন্ন হওয়ায় বিভিন্ন দেশে স্থানীয়ভাবে এআই এর উন্নয়ন করা আবশ্যক।  

তিনি বলেন, চিকিৎসা বিজ্ঞানের শুধু রেডিওলজি, অনকোলজি, প্যাথলজিতেই নয়, চিকিৎসা বিজ্ঞানের বিভিন্ন শাখায় এআই এর উন্নয়ন ও ব্যবহার অপরিহার্য। বিএমইউ ও বুয়েট যৌথভাবে কাজ করলে দেশে স্বাস্থ্যসেবা খাত আরও একধাপ এগিয়ে যাবে। মেডিকেল রেকর্ড কিপিংসহ অনেক কিছুই বাস্তবায়ন সম্ভব।

সভাপতির বক্তব্যে বিএমইউয়ের ভাইস চ্যান্সেলর অধ্যাপক ডা. মো. শাহিনুল আলম বলেন, বিএমইউ ও বুয়েট এক সঙ্গে কাজ করলে বাংলাদেশে স্বাস্থ্যসেবা খাত এক নতুন যুগে প্রবেশ করবে। নতুন নতুন ইনোভেনশন, আবিষ্কার, উদ্ভাবন রোগীদের জন্য কল্যাণ বয়ে আনবে। স্বাস্থ্যসেবা খাতের গুণগতমান বৃদ্ধিতে বিরাট ভূমিকা রাখবে। রোগীদের দুর্ভোগ লাঘব হবে।

তিনি বলেন, ডাক্তার ও ইঞ্জিনিয়াররা যৌথভাবে কাজ করলে দেশের স্বাস্থ্যসেবা খাতে নিত্য নতুন উন্নততর চিকিৎসাসেবার দ্বার উন্মোচিত হবে। যার প্রকৃত সুফলভোগী হবেন রোগীরা। তাই ডাক্তার ও ইঞ্জিনিয়ারদের সমন্বিতভাবে কাজ করা এখন সময়েরই দাবি।

সেমিনারে আরও বক্তব্য রাখেন বিএমইউয়ের প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. মো. আবুল কালাম আজাদ, প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর (গবেষণা ও উন্নয়ন) অধ্যাপক ডা. মো. মুজিবুর রহমান হাওলাদার, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. নাহরীন আখতার, রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ডা. মো. নজরুল ইসলাম, ক্লিনিক্যাল অনকোলজি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. সৈয়দ মো. আকরাম হোসেন।

সেমিনারে বায়োমেডিকেল ইঞ্জিনিয়ারিং বিষয়ে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বুয়েটের শিক্ষক অধ্যাপক ডা. এম তারিক আরাফাত। রেডিওলজিতে এআই এর প্রয়োজনীয়তা ও গুরুত্ব বিষয়ে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বুয়েটের শিক্ষক অধ্যাপক ডা. তৌফিক হাসান।

সেমিনারে উপস্থিত ছিলেন বিএমইউয়ের শিশু অনুষদের ডিন অধ্যাপক ডা. মো. আতিয়ার রহমান, মেডিকেল টেকনোলজি অনুষদের ডিন অধ্যাপক ডা. এম আবু হেনা চৌধুরী, ডেন্টাল অনুষদেও ডিন সহযোগী অধ্যাপক ডা. সাখাওয়াৎ হোসেন সায়ন্ত ও বিএমইউয়ের শিক্ষক, চিকিৎসক, কর্মকর্তারা।

সেমিনারে রেডিওলজি ইমেজিংয়ের প্রতিবেদনে এআই এর ব্যবহার, গুরুত্ব, প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরে উল্লেখ করা হয়, রেডিওলজি ইমেজিং আধুনিক চিকিৎসাবিজ্ঞানের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ শাখা। এক্স-রে, সিটি স্ক্যান, এমআরআই, আল্ট্রাসনোগ্রাফি ইত্যাদি প্রযুক্তির মাধ্যমে শরীরের অভ্যন্তরীণ অঙ্গপ্রত্যঙ্গের ছবি সংগ্রহ করে রোগ নির্ণয় এবং চিকিৎসার পরিকল্পনা করা হয়। এ ইমেজগুলো থেকে সঠিক তথ্য বের করে রোগীর স্বাস্থ্যগত অবস্থা বোঝা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এখানে রিপোর্টিং বা প্রতিবেদনের ক্ষেত্রে তথ্যের সঠিকতা ও দ্রুততা অপরিহার্য ভূমিকা পালন করে।  

সম্প্রতি উন্নত বিশ্বে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআই রেডিওলজি রিপোর্টিংয়ে বৈপ্লবিক পরিবর্তন আনছে। বিশাল পরিমাণ ইমেজ ডেটা থেকে স্বয়ংক্রিয়ভাবে রোগ নির্ণয়ের উপযোগী তথ্য সংগ্রহ করে, যা রেডিওলজিস্টদের কাজকে সহজ ও দ্রুত করে তোলে। এটি রোগ নির্ণয়কে আরও নির্ভুল, দ্রুত এবং কার্যকর করে তোলে, যা চিকিৎসা ক্ষেত্রে এক নতুন যুগের সূচনা করেছে। বাংলাদেশের রোগীদের স্বার্থেই এটা চালু হওয়া জরুরি।

আরকেআর/আরআইএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।