ঢাকা, শুক্রবার, ৩ শ্রাবণ ১৪৩২, ১৮ জুলাই ২০২৫, ২২ মহররম ১৪৪৭

ফুটবল

ফিরছে প্রতিপক্ষ সমর্থকরা, আর্জেন্টিনায় শেষ ১২ বছরের নিষেধাজ্ঞা

স্পোর্টস ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২:২৭, জুলাই ১৮, ২০২৫
ফিরছে প্রতিপক্ষ সমর্থকরা, আর্জেন্টিনায় শেষ ১২ বছরের নিষেধাজ্ঞা দর্শক সংক্রান্ত নিষেধাজ্ঞা শেষ হওয়ার পেছনে বড় ভূমিকা রয়েছে আনহেল দি মারিয়া/সংগৃহীত ছবি

১২ বছর পর আবারও আর্জেন্টিনার ফুটবল স্টেডিয়ামে দেখা যাবে দুই দলের সমর্থকদের। ২০১৩ সালে সহিংসতা ও এক দর্শকের মৃত্যুর ঘটনার পর যে নিষেধাজ্ঞা জারি হয়েছিল, সেটি এখন তুলে নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে আর্জেন্টাইন ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন (এএফএ)।

এই ঘোষণা দিয়েছেন এএফএ-র সভাপতি ক্লদিও তাপিয়া। এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, “আজ ঐতিহাসিক একটি দিন। কারণ এটি অতিথি সমর্থকদের ফিরে আসার সূচনা। এখন থেকে ক্লাবগুলো চাইলে আবারও প্রতিপক্ষ সমর্থকদের স্বাগত জানাতে পারবে। ”

তাপিয়া আরও জানান, বিশ্বকাপজয়ী আনহেল দি মারিয়ার আর্জেন্টিনার ঘরোয়া ফুটবলে ফিরে আসা এই সিদ্ধান্তের পেছনে একটি অনুপ্রেরণা হিসেবে কাজ করেছে।

আপাতত এই সিদ্ধান্ত শুধু বুয়েনস আইরেস প্রদেশে কার্যকর হবে। তবে তাপিয়া জানিয়েছেন, অন্যান্য প্রদেশও ধাপে ধাপে এই প্রক্রিয়ায় অংশ নিতে আগ্রহী।

নতুন নিয়ম অনুযায়ী, রোসারিও সেন্ট্রাল ক্লাবের ৬ হাজার ৫০০ সমর্থক লানুস ক্লাবের মাঠে নির্ধারিত অতিথি গ্যালারিতে প্রবেশাধিকার পাবেন। এর জন্য থাকবে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থাপনা ও নামসহ টিকিট চিহ্নিতকরণ, যাতে প্রত্যেক দর্শকের পরিচয় নিশ্চিত করা যায়।

রোসারিও সেন্ট্রালের সভাপতি গনসালো বেলোসো সমর্থকদের উদ্দেশে আহ্বান জানিয়েছেন,“আমরা যেন আগের সেই সহিংস দিনগুলোতে ফিরে না যাই। অতিথি সমর্থকদের মাঠ থেকে বাদ দেওয়া হয়েছিল কারণ ছিল বলেই। এখন আমাদের দায়িত্বশীল আচরণ করতে হবে। ”

২০১৩ সালে প্রথমে বুয়েনস আইরেস প্রদেশেই নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়। পরে তা গোটা দেশের প্রফেশনাল লিগে কার্যকর হয়। উদ্দেশ্য ছিল 'বার্রাব্রাভাস' নামে পরিচিত কুখ্যাত হুলিগান গোষ্ঠীগুলোর সহিংসতা বন্ধ করা। কিন্তু এরপরও মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে।

বুয়েনস আইরেসের নিরাপত্তামন্ত্রী হাভিয়ের আলোনসো বলেন, “আমাদের সমাজে সহিংসতার সংস্কৃতি দূর করতে হবে। ১০ বছরের বাচ্চারা যদি গান গায়—‘কাউকে মারতে হবে’ কিংবা মাদককে উৎসাহ দেয়, তাহলে এটা ফুটবল নয়। ফুটবল হওয়া উচিত পরিবারের উৎসব—ড্রাম, পতাকা আর ভালোবাসা নিয়ে। ”

এই উদ্যোগ নিয়ে কিছু বিরোধী রাজনৈতিক দল প্রশ্ন তুলেছে—বর্তমানে যখন অপরাধ ও নিরাপত্তাহীনতা বাড়ছে, তখন অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করে অতিথি সমর্থকদের নিরাপত্তা দেওয়া সাধারণ মানুষের সুরক্ষায় প্রভাব ফেলবে না তো?

তবে তাপিয়া বলছেন, “দুই দলের সমর্থকদের উপস্থিতিতে অনেক ম্যাচ সফলভাবে আয়োজন করা হয়েছে। ফুটবলপ্রেমী ও সমাজ যা চায়, সেটাই হচ্ছে এই ফিরে আসা। ”

প্রসঙ্গত, এই নিষেধাজ্ঞা শুধুমাত্র ঘরোয়া প্রফেশনাল লিগ এবং দেশের অন্যান্য লিগের ক্ষেত্রেই ছিল। কোপা লিবের্তাদোরেস বা কোপা কোপা সুদামেরিকানার মতো আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় অতিথি সমর্থকরা মাঠে যাওয়ার সুযোগ পেয়ে আসছেন।

এমএইচএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।