ঢাকা, মঙ্গলবার, ৯ বৈশাখ ১৪৩২, ২২ এপ্রিল ২০২৫, ২৩ শাওয়াল ১৪৪৬

ফুটবল

২০২৫ ফেডারেশন কাপ ফাইনাল: রোমাঞ্চ, বৃষ্টি ও অনিশ্চয়তার গল্প

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট, স্পোর্টস, ময়মনসিংহ থেকে | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯০৫ ঘণ্টা, এপ্রিল ২২, ২০২৫
২০২৫ ফেডারেশন কাপ ফাইনাল: রোমাঞ্চ, বৃষ্টি ও অনিশ্চয়তার গল্প জমে উঠেছিল বসুন্ধরা কিংস-আবাহনী লড়াই/সংগৃহীত ছবি

ময়মনসিংহের রফিক উদ্দিন ভূঁইয়া স্টেডিয়ামে ফেডারেশন কাপের ফাইনালে মুখোমুখি হয়েছিল দেশের দুই শীর্ষ ক্লাব—বসুন্ধরা কিংস ও আবাহনী লিমিটেড। তবে এই ম্যাচ শেষ পর্যন্ত রূপ নেয় এক নাটকীয় থ্রিলারে।

খেলা গড়ায় অতিরিক্ত সময়ে, কিন্তু আলোক স্বল্পতায় ম্যাচটি অসম্পূর্ণ রেখেই স্থগিত ঘোষণা করতে বাধ্য হন রেফারি।

এক নজরে ম্যাচ

ম্যাচের শুরু থেকেই আক্রমণাত্মক খেলার ঝলক দেখায় বসুন্ধরা কিংস। খেলার চতুর্থ মিনিটেই সাদ উদ্দিনের নেওয়া ফ্রি কিক অল্পের জন্য পোস্টের বাইরে চলে যায়। কিন্তু ছয় মিনিট পরেই সাদ উদ্দিনের আরেকটি ফ্রি কিক থেকে হেডে গোল করেন আর্জেন্টাইন ফরোয়ার্ড হুয়ান লেসকানো। আবাহনীর গোলরক্ষক মিতুল মারমার কিছুই করার ছিল না।

তবে বেশি সময় লাগেনি আকাশী-নীলদের সমতায় ফিরতে। ১৫ মিনিটে বসুন্ধরার সাবেক খেলোয়াড় ইব্রাহিম বক্সে ঢুকে সাবেক সতীর্থদের কাটিয়ে এমেকার পাস থেকে দুর্দান্ত গোল করেন। গোলের পর তিনি উদযাপন না করে শ্রদ্ধা জানালেন পুরোনো ক্লাবকে।

উত্তেজনা ও বিতর্ক

৩৮ মিনিটে দু’দলের খেলোয়াড়দের মধ্যে শুরু হয় ধাক্কাধাক্কি। ডাগ আউট থেকেও খেলোয়াড়েরা মাঠে ঢুকে পড়েন। খেলা বন্ধ থাকে প্রায় চার মিনিট। এই সময়ের মধ্যে রেফারি দেখান মোট চারটি হলুদ কার্ড—মাঠে ও ডাগ আউট মিলিয়ে।

প্রথমার্ধের যোগ করা সময়ে আবাহনীর সুমন রেজার একটি শট বসুন্ধরার রক্ষণে বড় আতঙ্ক ছড়ায়, তবে শেষ পর্যন্ত ১-১ স্কোরলাইনেই বিরতিতে যায় দুই দল।

বৃষ্টির হানা ও মাঠ পরিস্থিতি

দ্বিতীয়ার্ধ শুরুর আগে নামে বৃষ্টি। মাঠ ভিজে ওঠে, এবং প্রায় ১ ঘণ্টা ১০ মিনিট খেলা বন্ধ থাকে। স্টেডিয়ামে ফ্লাডলাইট না থাকায় সূর্য ডোবার আগেই খেলা শেষ করার একটা সীমাবদ্ধতা ছিল। ডাগ আউটে ছিল না কোনো ছাউনি—ভেজা অবস্থায় বেঞ্চে বসেই খেলোয়াড়দের অপেক্ষা করতে হয়।

খেলা ফের শুরু হলে দুই দলই একাধিক পরিবর্তন করে আক্রমণের ধার বাড়ানোর চেষ্টা করে। আবাহনীর গোলরক্ষক মিতুল বারবার অসাধারণ সেভ করে বসুন্ধরার আক্রমণ রুখে দেন।

নাটকীয় অতিরিক্ত সময়

নির্ধারিত সময়ের খেলা ১-১ এ শেষ হলে ম্যাচ গড়ায় অতিরিক্ত সময়ে। সুমন রেজা গোলের এক সুবর্ণ সুযোগ মিস করেন। অন্যদিকে, বসুন্ধরার ফয়সাল আহমেদ ফাহিম লাল কার্ড দেখে মাঠ ছাড়েন। ফার্স্ট হাফের শেষে বসুন্ধরার কোচ ভালেরিউ তিতা হলুদ কার্ড দেখেন রেফারির সিদ্ধান্ত নিয়ে প্রতিবাদ করায়।

ম্যাচ স্থগিত

অতিরিক্ত সময়ের প্রথমার্ধ শেষেই আলো কমে আসে মাঠে। ফ্লাডলাইট না থাকায়, এবং নিরাপত্তার স্বার্থে রেফারি ও ম্যাচ কর্মকর্তারা ম্যাচ স্থগিত ঘোষণা করেন। বাকি সময়ের খেলা নতুন তারিখে আয়োজনের ঘোষণা আসবে বাফুফে থেকে।

ইতিহাসে বিরল এক রাত

এমন দৃশ্য বাংলাদেশ ফুটবলে বিরল। একদিকে রোমাঞ্চকর খেলা, অন্যদিকে আবহাওয়াজনিত বাধা—সব মিলিয়ে এই ফাইনাল দেশের ক্রীড়া ইতিহাসে দীর্ঘদিন মনে রাখার মতো এক নাটকীয় অধ্যায় হয়ে থাকল।

বাংলাদেশ সময়: ১৯০৫ ঘণ্টা, এপ্রিল ২২, ২০২৫
এআর/এমএইচএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।