ঢাকা, বুধবার, ২৬ ভাদ্র ১৪৩২, ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১৭ রবিউল আউয়াল ১৪৪৭

ফিচার

অন্তরালে মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি বিজড়িত ওসমানী জাদুঘর

সাব্বির আহমদ, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০:৩২, ফেব্রুয়ারি ১৫, ২০১২
অন্তরালে মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি বিজড়িত ওসমানী জাদুঘর

সিলেট: এটি মহান মুক্তিযুদ্ধের প্রধান সেনাপতি আতাউল গনি ওসমানীর বাড়ি। ১৯৩০ সালে বাড়িটি নির্মিত হয়।

মুক্তিযুদ্ধের প্রধান সেনাপতির বাড়ি হওয়ার কারণে একাত্তর সালে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী  গ্রেনেড মেরে ধ্বংস করেছিল বাড়িটি। এখন এটি ‘ওসমানী জাদুঘর’। বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘরের একটি শাখা।

এটা শুধু বাড়ি কিংবা জাদুঘর নয়, একটি ঐতিহাসিক স্থান। পুরো দেশের মানুষের হৃদয়ের মানসপটে এই নাইওরপুলস্থ বাড়ির সঙ্গে প্রাণের স্পন্দন রয়েছে।

যে মহানায়কের স্মৃতিবিজড়িত এই জাদুঘর তিনিও ইতিহাসের এক মাইলফলক মুক্তিযুদ্ধের প্রধান সেনাপতি জেনারেল আতাউল গনি ওসমানী। শহরের প্রাণকেন্দ্র নাওয়রপুলে হলেও খোদ সিলেটের অনেকেই এই জাদুঘরটি খোঁজ জানেন না। কর্তৃপক্ষেরও নেই প্রচার-প্রচারণা।

সম্প্রতি টানানো হয়েছে বিশাল সাইনবোর্ড। এর আগে পর্যন্ত গেটের পাশে ছোট আকৃতির বোর্ডে লেখা ছিল ‘ওসমানী জাদুঘর’।

ওসমানী জাদুঘরের সামনে স্থাপিত ফলক থেকে জানা গেছে, ১৯৮৫ সালের ১৬ ফেব্রæয়ারি সে সময়ের রাষ্ট্রপতি লে. জেনারেল হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ এর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন।

ওসমানী জাদুঘরের তথ্য প্রদানকারী কর্মকর্তা এস এম জালাল উদ্দিন বাংলানিউজকে জানান, ‘জাদুঘরের ৩টি গ্যলারি জুড়ে ৪শ’ ৭৩টি নিদর্শন রয়েছে। ’

জাদুঘর ঘুরে দেখা গেছে, এসব নিদর্শনের বেশিরভাগই মহান মুক্তিযুদ্ধকেন্দ্রিক। ১৯৭১ সালে রণাঙ্গনের জিনিসপত্র এবং ওসমানীর ব্যবহৃত পোশাকও রয়েছে। এছাড়া বিভিন্ন সময় প্রাপ্ত পদক সংরক্ষণ করে রাখা হয়েছে।

প্রতিটি গ্যালারিতেও দেখা যাবে আতাউল গনি ওসমানীর নিত্য ব্যবহৃত জিনিসপত্র। দেয়ালে দেয়ালে টানানো আছে বাবারকুলে ওসমানীসহ মুক্তিযদ্ধের দুর্লভ অনেক ছবি।

জাদুঘরটির স্থাপত্য কৌশলও যে কাউকে আকৃষ্ট করার মতো। প্রাচীন আদলের এই বাড়িটি ১৯৩০ সালে নির্মিত হয়েছে বলে জানিয়েছেন জাদুঘরে দায়িত্বরত কর্মকর্তারা।

জাদুঘরের তথ্য প্রদানকারী কর্মকর্তা আরো জানান, প্রতিদিন ১৫ থেকে ২০ জন দর্শক জাদুঘরটি দেখতে আসেন। মাসে সাড়ে ৪শ’ দর্শনার্থী এর বিভিন্ন গ্যালারি ঘুরে দেখেন। তবে এদের উল্লেখযোগ্য অংশ তরুণ-তরুণী।


যে কেউ দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বের সঙ্গে জড়িত এই বাড়িটি ঘুরে দেখতে পারেন। বছরের এপ্রিল থেকে সেপ্টেম্বর মাস পর্যন্ত সপ্তাহের শনিবার থেকে বুধবার সকাল সাড়ে ১০টা থেকে বিকেল সাড়ে ৫টা পর্যন্ত দর্শনার্থীদের জন্য খোলা থাকে। শুক্রবার খোলা থাকে বিকেল ৩টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত।

এছাড়া অক্টোবর থেকে মার্চ মাস পর্যন্ত  সপ্তাহের শনিবার থেকে বুধবার সকাল সাড়ে ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত জাদুঘর খোলা থাকে। বৃহস্পতি ও শুক্রবার থাকে সাপ্তাহিক ছুটি।

দর্শনার্থীদের জন্য প্রবেশ মূল্য দেশি দর্শক ৫ টাকা এবং বিদেশি পর্যটক ৭৫ টাকা। ১২ বছরের নিচের শিশুদের জন্য ২ টাকা প্রবেশ মূল্য রাখা হয়।

বাংলাদেশ সময়: ২০২৩ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৫, ২০১২

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।