ডার্ক ম্যাটার। নামেই পরিচয়।
এই ডার্ক ম্যাটারের রহস্য উন্মোচন না করেও উপায় নেই। গোটা ব্রহ্মাণ্ডের সিংহভাগ --–প্রায় ৮০ শতাংশই---অংশই যে এই ডার্ক ম্যাটারে গড়া! মুশকিল হচ্ছে, তারা নিজেরাও চর্মচক্ষে এটি কখনো দেখেন নি। তবু তারা বলছেন, ‘দেখা না পেলেও এটি আছে। ’
যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অব ক্যালিফোর্নিয়া, আরভিন—এর পদার্থবিদ্যা ও জ্যোতির্বিজ্ঞানের অধ্যাপক জেমস বুলক সেটাই বলছেন:
‘আমরা নিশ্চিত ওটা আছে। আর সব বস্তুপিণ্ডের মতো এটির ভরও আছে। মাধ্যাকর্ষণ বল-এর মাধ্যমে এটি অন্যসব বস্তুকে এর নিজের দিকে টানে। ’
আমরা যে আলো দেখি, মহাকাশ সম্বন্ধে আমাদের গবেষণা তার ওপরই নির্ভরশীল। মানে দূর মহাকাশের বিভিন্ন বস্তু দেখার উপায়ই হলো এই আলো। যেমন,
আমরা অনেক দূরের যেসব গ্রহ নক্ষত্র ইত্যাদি দেখি সেগুলো আলো প্রতিফলিত করে।
কিন্তু ডার্ক ম্যাটার এমনই আজব যে এটি না করে আলো শোষণ, না করে আলোর প্রতিফলন। ফলে এটিকে দেখবার কোনো যো নেই। তাই এ নিয়ে গবেষণা করাও যারপরনেই কঠিন তাদের পক্ষে।

তবু হাল ছেড়ে দেবার পাত্র তো আর বিজ্ঞানীরা নন! কে জানে কীসব রহস্য লুকিয়ে আছে এর মধ্যে! তাই তারা একটা কাজে হাত দিয়েছেন। মানে আমাদের ছায়াপথের কেন্দ্রে ‘ডার্ক সেক্টর’ বলে যে রহস্যময় এলাকা রয়েছে সেখানে মাধ্যাকর্ষণ বলের ওপর ডার্ক ম্যাটার কিভাবে ক্রিয়া করে তা জানার কাজে হাত দিয়েছেন তারা। এরপর তারা যা দেখতে পেয়েছেন সেটির সাথে কম্পিউটার মডেলটি মিলিয়ে দেখার পালা।
কিন্তু এতো কেবলই চেষ্টামাত্র। আদতে কি ফল হবে তাদের গবেষণায় বা কতোকাল পর ডার্ক ম্যাটারের রহস্যমোচন করতে পারবেন তারা সেটাই এখন বড় প্রশ্ন।
‘‘প্রাপ্ত উপাত্তগুলো আমরা ভুলভাবে ব্যাখ্যা করছিলাম বলে প্রথমটায় মনে হয়েছিল। আর এখন আমাদের সামনে যে প্রশ্নটা, তা হচ্ছে: ছায়াপথের গঠনটাই কি এমন যে তা থেকে ডার্ক ম্যাটার নির্গত হয়? নাকি ডার্ক ম্যাটার সম্পর্কে আমাদের যে ধারণা সেটিই পাল্টে ফেলতে হবে?’’—বলছিলেন বুলক।
এমনও তো হতে পাবে অবজার্ভেশন ডাটায় যেসব অদ্ভুড়ে বিশঙ্খল ব্যাপার আমরা লক্ষ্য করছি সেখানেই হয়তো রয়ে গেছে ক্লুটা। রহস্যমোচনের চাবিটা। যা দিয়ে খোলা যাবে চির অচেনা, চির রহস্যময় ডার্ক ম্যাটারের গোলকধাঁধার দরোজা। মানে সোজা বাংলায়, ‘মুশকিলেই আসান’’। সূত্র: বিদেশি পত্রিকা
বাংলাদেশ সময়: ২০৪৯ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১, ২০১৫
জেএম/