ঢাকা, বুধবার, ৩ বৈশাখ ১৪৩২, ১৬ এপ্রিল ২০২৫, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৬

পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য

রাজশাহীতে প্রথম ঘড়িয়াল প্রজনন কেন্দ্র উদ্বোধন

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯১৯ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৫, ২০২৫
রাজশাহীতে প্রথম ঘড়িয়াল প্রজনন কেন্দ্র উদ্বোধন

রাজশাহী: রাজশাহীতে উদ্বোধন করা হয়েছে দেশে প্রথম ঘড়িয়াল প্রজনন কেন্দ্র। সামাজিক বন বিভাগের উদ্যোগে রাজশাহীর পবা নার্সারির একটি পুকুরে মঙ্গলবার (১৫ এপ্রিল) দুপুরে আনুষ্ঠানিকভাবে এ প্রজনন কেন্দ্র উদ্বোধন করা হয়।

রাজশাহী মহাগরীর শহীদ জিয়া শিশুপার্ক সড়কের পাশে গড়ে তোলা এই কেন্দ্রটির উদ্বোধন করেন বন অধিদপ্তরের প্রধান বন সংরক্ষক আমির হোসাইন চৌধুরী।

কেন্দ্রটি উদ্বোধনকালে ঢাকার গাজীপুর সাফারী পার্ক থেকে আনা একটি প্রাপ্ত বয়স্ক পুরুষ ঘড়িয়াল এবং আরেকটি নারী ঘড়িয়াল প্রজনন কেন্দ্রে অবমুক্ত করেন তিনি।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে উপ-প্রধান বন সংরক্ষক ও প্রকল্প পরিচালক গোবিন্দ রায়, বন্যপ্রাণী ও প্রকৃতি সংরক্ষণ ঢাকা অঞ্চলের বন সংরক্ষক ছানাউল্ল্যা পাটওয়ারী, বগুড়ার আঞ্চলিক সামাজিক বন অঞ্চলের বন সংরক্ষক মুহাম্মদ সুবেদার ইসলাম, রাজশাহী বিভাগীয় বন কর্মকর্তা রফিকুজ্জামান শাহ্ ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণীবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক মোহাম্মদ কামরুল হাসানসহ আরও অনেকে উপস্থিত ছিলেন।

অনুষ্ঠানে বন অধিদপ্তরের প্রধান বন সংরক্ষক আমির হোসাইন চৌধুরী জানান, ঘড়িয়াল বর্তমানে মহাবিপদাপন্ন প্রাণী । এক সময় বাংলাদেশের পদ্মা, মেঘনা, যমুনা ও ব্রহ্মপুত্র নদীতে ঘড়িয়াল দেখা যেতো। কিন্তু সময়ের বিবর্তনে অব্যাহতভাবে নদী দূষণ, নদীর নাব্যতা কমায়, অতিরিক্ত মাছ আহরণ, অবৈধ শিকার, পাচার, ডিম নষ্ট, প্রজননে ব্যাঘাত ঘটানো ও খাদ্যে সংকটের কারণে ঘড়িয়াল এখন বিলুপ্তির পথে। তবে এখন প্রজননের মাধ্যমে আবারও ঘড়িয়ালের বংশ বাড়ানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। এর অংশ হিসেবে রাজশাহীতে দেশের প্রথম ঘড়িয়াল প্রজনন কেন্দ্র খোলা হলো বলেও বিশেষভাবে উল্লেখ করেন শীর্ষ এই বন কর্মকর্তা।

এর আগের রাজশাহী কেন্দ্রীয় উদ্যান ও চিড়িয়াখানায়ও প্রজননের মাধ্যমে ঘড়িয়ালের বংশ বিস্তারের চেষ্টা করা হয়েছিল। বংশবিস্তারের বিষয়টি মাথায় রেখে ২০১৭ সালের আগস্টে এখানকার একটি স্ত্রী ঘড়িয়াল ঢাকায় নিয়ে যাওয়া হয়। অন্যদিকে ঢাকা চিড়িয়াখানা থেকে একটি পুরুষ ঘড়িয়াল আনা হয় রাজশাহীতে। এভাবে চিড়িয়াখানায় দুইটি ঘড়িয়ালের জুটি বাঁধানো হয়েছিল।

প্রত্যাশা ছিল নারী ঘড়িয়ালটি ডিম দেবে। এর মধ্য দিয়ে বিলুপ্তপ্রায় প্রাণীটির বংশবিস্তার ঘটবে। এজন্য রাজশাহী কেন্দ্রীয় উদ্যানে ঘড়িয়ালের প্রজনন উপযোগী পরিবেশও তৈরি করা হয়। এরপর ২০২৩ সালের মার্চে আটটি ডিম দেয় নারী ঘড়িয়ালটি। কিন্তু পরে সেই ডিমগুলো নষ্ট হয়ে যায়। আর এরপর এই চিড়িয়াখানাটিই বন্ধ করে দেওয়া হয়। এটি পুরোপুরি উদ্যানে রূপ দেওয়ায় সেই উদ্যোগ আর শেষ পর্যন্ত আলোর মুখ দেখেনি।

বাংলাদেশ সময়: ১৭১৬ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৫, ২০২৫
এসএস/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।