ঢাকা, শুক্রবার, ২৭ ভাদ্র ১৪৩২, ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১৯ রবিউল আউয়াল ১৪৪৭

বিনোদন

কীর্তিমান নায়করাজ, কিছু কীর্তি কিছু কাজ

সোমেশ্বর অলি, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৮:৩৩, আগস্ট ২৩, ২০১৭
কীর্তিমান নায়করাজ, কিছু কীর্তি কিছু কাজ ছবি: বাংলানিউজ

মায়া ও ঈর্ষার জটিল ধাঁধা তাকে আর ভাবাবে না। ক্রমশ উত্তপ্ত হতে থাকা এই ভূমণ্ডলের কোথাও তার অস্তিত্ব নেই। কাউকে ডাকবেন না, কারো ডাকে সাড়াও দেবেন না। প্রিয়জনদের জাগিয়ে রেখে নায়করাজ এখন অনন্ত ঘুমের বাসিন্দা।

দেহান্তরীত হয়েছেন কিন্তু চিরতরে হারিয়ে যাবেন না— এমনই কর্মযজ্ঞ এই কীর্তিমানের। বাংলা ভাষার শেষদিন পর্যন্ত স্মরণীয় হয়ে থাকবেন রাজ্জাক।

তার চলচ্চিত্র ও গানগুলো ভুলে যাওয়া সহজ নয়…।

কিংবদন্তি এই অভিনেতাকে নিয়ে ভক্তদের কৌতুহলের শেষ নেই। এতো দীর্ঘ ক্যারিয়ার, এই নায়ক সম্পর্কে পুরোটা জানা সম্ভব নয়। তবু কিছু জানা-অজানা তথ্য তুলে ধরা হলো বাংলানিউজের পাঠকের জন্য…

একটি মজার তথ্য
পাঁচবার সেরা অভিনেতা হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছিলেন নায়করাজ রাজ্জাক। আজীবন সম্মাননাও ছিলো তার ঝুড়িতে। পুরস্কার এনে দেওয়া ছবিগুলো হলো— ‘কি যে করি’ (ববিতা), ‘অশিক্ষিত’ (অঞ্জনা). ‘বড় ভালো লোক ছিলো’ (অঞ্জু ঘোষ), ‘চন্দ্রনাথ’ (দোয়েল) ও ‘যোগাযোগ’ (শবনম)।  

মজার তথ্য হচ্ছে, অভিনেত্রী শাবানা ও কবরীর সঙ্গে জুটি হিসেবে জনপ্রিয়তা পেলেও নায়করাজের পুরস্কারপ্রাপ্ত ছবিগুলোর নায়িকা তারা নন। কেবল একটিতে (কি যে করি) আছেন তার অন্যতম আরেক জুটি ববিতা।  

অনন্য রেকর্ড, ১২ মাসে ১৯ ছবি
রাজ্জাক অভিনীত ছবির সংখ্যা তিন শতাধিক। নায়ক থাকাকালীন প্রতি বছর গড়ে ৭-৮টি ছবি মুক্তি পেয়েছে তার। বিস্ময়কর তথ্য হচ্ছে, ১৯৭০ সালে, ১২ মাসে ১৯টি ছবি মুক্তি পায়। এটি রীতিমত রেকর্ড। এর মধ্যে অন্যতম হলো— ‘জীবন থেকে নেয়া’, ‘দর্পচূর্ণ’, ‘মধু মিলন’, কখগঘঙ’ প্রভৃতি।  

এক বছরে এক ছবি
অন্যদিকে এক বছরে একটি ছবি মুক্তির রেকর্ডও আছে। ১৯৮১ সালে ‘অংশীদার’ ও ১৯৯৬ সালে ‘বাজিগর’ ছাড়া আর কোনো ছবি মুক্তি পায়নি এই শিল্পীর।  

প্রথম ও শেষ নায়িকা
নায়ক হিসেবে নায়করাজের শেষ ছবি ১৯৯০ সালে  ‘মালামতি’ এর নায়িকা ছিলেন নূতন। আর তার প্রথম নায়িকা সুচন্দা। ‘বেহুলা’, পরিচালক ছিলেন জহির রায়হান।

রাজ্জাকের স্ত্রী হিন্দু
রাজ্জাকের বাড়ি কিংবা প্রডাকশন হাউসের নাম (রাজলক্ষ্মী) দেখে অনেকে ভাবেন রাজ্জাকের সহধর্মিণী হিন্দু ধর্মাবলম্বী। সত্যি বলতে নিজের জন্য স্ত্রীকে ‘লাকি’ মনে করতেন নায়করাজ, এ কারণেই ভালোবেসে তাকে লক্ষ্মী বলে সম্বোধন করতেন। এই দম্পতির সন্তানরা হলেন বাপ্পারাজ (রেজাউল করিম), নাসরিন পাশা শম্পা (প্রয়াত), রওশন হোসেন বাপ্পি, আফরিন আলম ময়না, খালিদ হোসেন সম্রাট।

অন্যতম পরিচালকেরা
নায়করাজ তার বিভিন্ন সাক্ষাৎকারে ঘুরেফিরে কয়েকজন নির্মাতার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করতেন। তারা হলেন— জহির রায়হান, কাজী জহির, নারায়ণ ঘোষ মিতা, খান আতাউর রহমান, জহিরুল হক, আলমগীর কুমকুম, নজরুল ইসলাম প্রমুখ।   

নায়িকার তালিকা
সুচন্দা, কবরী, শবনম, শাবানা, নাসিমা খান, সুজাতা, ববিতা, কবিতা, নূতন, দোয়েল, অঞ্জনা, অঞ্জু ঘোষ, অলিভিয়া, কাজরী প্রমুখ।

এবং একটি জনশ্রুতি…
জনশ্রুতি রয়েছে যে, রাজ্জাকের পুরো জীবন নিয়ে তারই অভিনয়ে একটি ছবি তৈরি হয়েছে। তার মৃত্যুর মধ্য দিয়ে এটি সমাপ্ত হবে। পর্দায় নায়কের সত্যিকারের মৃত্যু দেখানোর জন্য অপেক্ষা করতে হয়েছে। কিন্তু এ ব্যাপারে সঠিক তথ্য জানা যায়নি।  

বাংলাদেশ সময়: ১৪৩১ ঘণ্টা, আগস্ট ২৩, ২০১৭
এসও 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।