‘আজকে বাংলাদেশ স্বৈরাচারমুক্ত হয়েছে। কিন্তু দোসরমুক্ত হয়নি।
কথাগুলো বলেছিলেন বাংলা চলচ্চিত্রের মেগাস্টার ও বিএনপির সাংস্কৃতিকবিষয়ক সম্পাদক আশরাফ উদ্দিন আহমেদ উজ্জ্বল।
রোববার (৩ আগস্ট) সকালে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন করপোরেশনের মূল ফটকের সামনে চলচ্চিত্র কর্মীদের আয়োজনে চলচ্চিত্রের কালো দিবস কর্মসূচিতে এ কথা বলেন তিনি।
কোটা সংস্কার আন্দোলনের দেশের শিল্পীরা দুই ভাগে বিভক্ত হয়। একদল আন্দোলনের পক্ষে তো আরেকদল ফ্যাসিস্ট সরকারের পক্ষে ছিল। শুধু তাই নয়, আন্দোলনের বিরুদ্ধে জনমত গড়ে তুলতে নায়ক ফেরদৌস, রিয়াজ, অরুণা বিশ্বাস, তানভীন সুইটি, জ্যোতিকা জ্যোতি, সাবেক তথ্যপ্রতিমন্ত্রী আরাফাতের সমন্বয়ে দুই শতাধিক সংস্কৃতিকর্মী ও সাংবাদিক নিয়ে একটি গ্রুপ খোলা হয়। যেটির নাম রাখা হয় ‘আলো আসবেই’। গ্রুপের সদস্যরা আন্দোলনের বিপক্ষে সরব ছিলেন। আন্দোলনকারী ও আন্দোলনের পক্ষে থাকা নির্মাতা ও শিল্পীদের লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করেছিলেন তারা।
সেই সব শিল্পীদের উদ্দেশ্য করে নায়ক উজ্জ্বল বলেন, আজ আমরা কালো পতাকা হাতে দাঁড়িয়ে আছি কারণ আপনারা অন্ধকারের মাঝে চোরের মতো পালিয়ে যান। আপনাদের দেখলে আমাদের ঘৃণা হয় আপনার আর জনসম্মুখে আসবেন না। যদি শিল্পকলা, এফডিসি, বিটিভি কিংবা বাংলা একাডেমির দিকে তাকান দেখবেন আপনাদের জন্য অন্ধকার ছেয়ে গেছে।
উজ্জ্বল আরও বলেন, আপনাদের যে নৈতিক অবক্ষয় হয়েছে সেটা স্বীকার করে জাতির কাছো ক্ষমা চান। কিন্তু সেটা আপনারা এখনও করেননি৷ আমরা কিন্তু আপনাদের বিরুদ্ধে দাঁড়াব, কোথাও প্রবেশ করতে পারবেন না, কোথাও ঠাঁই হবে না।
ভবিষ্যতে সাংস্কৃতিক অঙ্গনকে দলীয় প্রভাবমুক্ত রাখতে চান বলে জানান নায়ক উজ্জ্বল।
ঢাকাই সিনেমার কিংবদন্তি এই অভিনেতা বলেন, আপনারা দেখেছেন গত ১৭ বছর কীভাবে সংস্কৃতি অঙ্গনটাকে দলীয়করণ করেছিল। কিন্তু আমরা যারা আজ কালো দিবস পালন করছি আগামীতে সবাইকে নিয়ে এগিয়ে যাওয়ার কাজে নিয়জিত হবো। আমার এমন কর্মক্ষেত্র তৈরি করব যেখানে তরুণ প্রজন্মের মেধাবী তারা যেন নিজেদের চলচ্চিত্র শিল্পে নিয়োজিত করতে পারে। আমরা কখনও চাইব না দলীয়করণ করতে। কারণ এই ক্ষেত্রটা মেধাবীদের জন্য৷ এই দেশ, জাতি স্বৈরাচার মুক্ত হয়েছে মেধার কারণে।
প্রসঙ্গত, ‘আরও দেবো রক্ত, করবো ফ্যাসিবাদ দোসর মুক্ত, রক্তের ঋণে স্বাধীনতা, জাগ্রত হোক মানবতা’ এমন প্রতিপাদ্য নিয়ে চলচ্চিত্রের কালো দিবস পালন করেন চলচ্চিত্র অঙ্গনের কর্মীরা। সেখানে তারা ২৪ এর জুলাই আন্দোলনে ছাত্র-জনতার বিপক্ষে অবস্থান নেওয়া শিল্পী-কলাকুশলীদের বিচার এবং রাষ্ট্রীয়ভাবে বর্জন তালিকা ভুক্ত করার দাবি জানান।
এনএটি/এএটি