ঢাকা, সোমবার, ১৯ শ্রাবণ ১৪৩২, ০৪ আগস্ট ২০২৫, ০৯ সফর ১৪৪৭

নির্বাচন ও ইসি

‘মেরুদণ্ডহীন ইসি সামরিক উর্দি ও দলীয় পোশাকে আবৃত’

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫:১৯, আগস্ট ৩, ২০২৫
‘মেরুদণ্ডহীন ইসি সামরিক উর্দি ও দলীয় পোশাকে আবৃত’ সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী। ছবি: বাংলানিউজ

ঢাকা: বর্তমান নির্বাচন কমিশনকে ‘মেরুদণ্ডহীন’ মন্তব্য করে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বলেছেন, নির্বাচন কমিশনের (ইসি) অঙ্গজুড়ে সামরিক উর্দি ও দলীয় পোশাকে আবৃত। ইসিকে সংশোধনের সুযোগ দিচ্ছি।

রোববার (৩ আগস্ট) প্রধান নির্বাচন কমিশনারের (সিইসি) সঙ্গে এনসিপি প্রতিনিধি দলের বৈঠকের পর এ কথা বলেন তিনি। এসময় দলটির মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ, যুগ্ম আহ্বায়ক খালেদ সাইফুল্লাহ ও যুগ্ম সদস্য সচিব জহিরুল ইসলাম মুসা উপস্থিত ছিলেন।
 
তিনি বলেন, আগে ভোট দেওয়ার অধিকার থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে বাংলাদেশের মানুষকে, এবার নেওয়ার অধিকার থেকে বঞ্চিত করার জন্য পাঁয়তারা চলছে। গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় একটি দল ছাড়া অন্য কেউ ভোট নিতে আসে, তাহলে সেখানে তারা সমস্যার সৃষ্টি করবে—এ পরিস্থিতির দিকে যাচ্ছে। ইলেকশন কমিশন এ পরিস্থিতি সৃষ্টির পাঁয়তারা করছে। অর্থাৎ গত ১৫ বছর মানুষ ভোট দিতে পারেনি, আর এখন যদি কেউ ভোট নিতে যায় গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায়, সে প্রক্রিয়া তারা বাধাগ্রস্ত করছে।  

“দিন দিন এ ইলেকশন কমিশনকে যত দেখতে পাচ্ছি, ততই বুঝতে পারছি যে এটা মেরুদণ্ডহীন একটা ইলেকশন কমিশন। ”

এনসিপির এই নেতা বলেন, আমরা এটাকে যতটুকু পর্যবেক্ষণ করছি, ডে বাই ডে, সেটাতে দেখতে পাচ্ছি, এটার অধিকাংশ অঙ্গজুড়ে সামরিক উর্দি এবং বাকি যতটুকু বা যারা আছে, তারা দলীয় পোশাকে আবৃত। আহত বা শহীদ হয়েছিল যারা, ওনাদের এজেন্স ছিল যেন ভোট দিতে পারি, তাই মাঠে আন্দোলন করেছি। তাদের দাবির প্রেক্ষিতে আমরা গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় যাচ্ছি।

তিনি বলেন, গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার জন্য সাংবিধানিক যে প্রতিষ্ঠান রয়েছে সেখানে ইলেকশন কমিশন একটা গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান। এ প্রতিষ্ঠানে রেজিস্ট্রেশন প্রসেসে গেছে এনসিপি, আবেদন জমা দিয়েছি। ইসির বিরুদ্ধে সার্বিক চিত্র জনগণের সামনে তুলে ধরা হবে, এর আগে ইসিকে সংশোধনেরও সুযোগ দিচ্ছে নিবন্ধনপ্রত্যাশী দলটি।

এনসিপির মুখ্য সমন্বয়ক বলেন, সামনে এটার কোথায় কোথায় সমস্যা জনগণের সামনে আমরা উদঘাটন করছি। জনগণের সামনে আমাদের কাজের মধ্য দিয়ে ইলেকশন কমিশন যে একটা মেরুদণ্ডহীন সেটা আস্তে আস্তে প্রকাশ পাবে ইনশাহআল্লাহ। আমরা তাদের এখনো সুযোগ দিচ্ছি, তাদের সে শুভ বোধোদয় হোক এবং গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় আসুক। ভোট নেওয়ার প্রসেস থেকে শুরু করে বাংলাদেশকে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় নেওয়ার জন্য সচেষ্ট হোক।

এ ইসির অধীনে এনসিপি ভোটে যাবে কিনা জানতে চাইলে নাসীরুউদ্দীন বলেন, এ সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য আমরা আপাতত যে অবস্থায় আছি, সেটা বলেছি। ভোট গত ১৫ বছরে দিতে পারিনি, ভোট নেওয়ার সিস্টেম নেই। আমি যদি ভোট নিতেই না পারি, জনগণ যদি আমাকে ভোট দিতে আসে, আর আমাকে যদি ভোট নেওয়ার জন্য বাধাগ্রস্ত করা হয়; সেখানে যখন আমি বুঝবো আমাকে ভোট নিতে দেবে না, গত ১৫ বছরে অনেকে যেভাবে অংশগ্রহণ করেনি... আমাকে ভোট না দিতে (নিতে) দিলে, তাহলে কেন অংশ নেব আমরা? এটা এখনো এন্ডিং প্রসেসে আসেনি। ইসির বিরুদ্ধে দলীয় পক্ষপাতিত্ব থাকলেও সামনে পরিস্থিতি বুঝে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

তিনি বলেন, আমরা প্রতিনিয়িত তাদের সঙ্গে দেখা করছি, কথা বলছি। ভুল দেখিয়ে দিচ্ছি। তাদের কারেকশনের সুযোগ দিচ্ছি। অতীতে আমরা বিভিন্ন জায়গায় আন্দোলন করেছি, তখন আমরা সুযোগ দিয়েছি; আপনার কারেকশন হোন, আপনারা গুলি করবেন না। ইলেকশন কমিশন যদি সামরিক উর্দি পরে, দলীয় উর্দি পরে তার মেরুদণ্ড বিকিয়ে দিতে চায় এবং ভোট না দিতে চায়, তাহলে ফাইনালি এ সিদ্ধান্তে যেতে আমরা বাধ্য হবো।

অন্য এক প্রশ্নের জবাবে নাসীরুউদ্দীন বলেন, আমরা আপনাদের সামনে হিন্টস দিয়ে যাচ্ছি, এবার ইসির মাধ্যমে ভোট নেওয়ার অধিকার, আগে ছিল ভোট দেওয়ার অধিকার থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে বাংলাদেশের মানুষকে; এবার নেওয়ার অধিকার থেকে বঞ্চিত করার জন্য পাঁয়তারা চালাচ্ছে। আমরা এখনো ধৈর্যহারা হইনি।

তিনি আরও বলেন, কর্মচারী যারা ভোট ডাকাতির সঙ্গে জড়িত ছিল, আমরা তাদের পদত্যাগ চেয়েছিলাম। বলেছিলাম এদের কারেকশনের প্রযোজন। কারেকশন তো হয় নাই। এখন আমাদের তো জুলাই সনদটা হবে, সেখানেও কিন্তু নির্বাচন কমিশনের সংস্কারের কথাটি এসেছে৷ প্রতীক, সীমানা, ভোটার তালিকা করছে, কর্মকর্তাদের বদলি করছে ইসি। আমরা আপনাদের বলছি, নির্বাচন কমিশনের মাধ্যমে ভোট নেওয়ার অধিকার থেকে বঞ্চিত করার পাঁয়তারা করছে।

ইইউডি/এইচএ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।