ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৭ ভাদ্র ১৪৩২, ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১৮ রবিউল আউয়াল ১৪৪৭

শিক্ষা

জাকসু নির্বাচনে কোন হলে কত ভোট পড়ল

বাংলানিউজ টিম | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০:৪৯, সেপ্টেম্বর ১১, ২০২৫
জাকসু নির্বাচনে কোন হলে কত ভোট পড়ল জাকসু নির্বাচনে ভোটাধিকার প্রয়োগ করেন এক শিক্ষার্থী। ছবি: বাংলানিউজ

জাবি: দীর্ঘ ৩৩ বছর পর জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (জাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচনের ভোটগ্রহণ শান্তিপূর্ণভাবে শেষ হয়েছে।  

বৃহস্পতিবার (১১ সেপ্টেম্বর) সকাল ৯টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত বিরতিহীনভাবে ভোটগ্রহণ চলে।

৫টায় ভোট শেষ হওয়ার কথা থাকলেও কিছু কিছু কেন্দ্রে লাইন দীর্ঘ থাকায় এবং দুপুরে কিছু কেন্দ্রে এক ঘণ্টা ভোটগ্রহণ বন্ধ থাকায় ৮টা পর্যন্তও ভোটগ্রহণ করতে দেখা যায়। এখন চলছে ভোট গণনার অপেক্ষা।

বিভিন্ন কেন্দ্র থেকে পাওয়া তথ্য মতে, আল বেরুনী হলে ২১১ ভোটারের বিপরীতে ১২৫ ভোট, আ ফ ম কামাল উদ্দিন হলে ৩৪১ ভোটারের বিপরীতে ২১৬, মীর মশাররফ হোসেন হলে ৪৬৪ ভোটারের বিপরীতে ৩১০, নওয়াব ফয়জুন্নেসা হলে ২৮০ ভোটারের বিপরীতে ১৩৭, শহীদ সালাম—বরকত হলে ২৯৯ ভোটারের বিপরীতে ২২৪, মাওলানা ভাসানী হলে ৫১৪ ভোটারের বিপরীতে ৩৮৪, জাহানারা ইমাম হলে ৩৬৭ ভোটারের বিপরীতে ২৪৭, প্রীতিলতা হলে ৩৯৯ ভোটারের বিপরীতে ২৪৬, বেগম খালেদা জিয়া হলে ৪০৯ ভোটারের বিপরীতে ২৪৯, ১০ নং (ছাত্র) হলে ৫৪১ ভোটারের বিপরীতে ৩৮১, শহীদ রফিক—জব্বার হলে ৬৫৬ ভোটারের বিপরীতে ৪৭০, বেগম সুফিয়া কামাল হলে ৪৫৬ ভোটারের বিপরীতে ২৪৬, ১৩ নং (ছাত্রী) হলে ৫৩২ ভোটারের বিপরীতে ২৭৯, ১৫ নং (ছাত্রী) হলে ৫৭১ ভোটারের বিপরীতে ৩৩৮, বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর হলে ৩৫০ ভোটারের বিপরীতে ২৬১, রোকেয়া হলে ৯৫৫ ভোটারের বিপরীতে ৬৮০, ফজিলাতুন্নেছা হলে ৮০৩ ভোটারের বিপরীতে ৪৮৯, বীরপ্রতীক তারামন বিবি হলে ৯৮৪ ভোটারের বিপরীতে ৫৯৫, ২১ নং (ছাত্র) হলে ৭৩৫ ভোটারের বিপরীতে ৫৬৪, জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম হলে ৯৯১ ভোটারের বিপরীতে ৮১০ এবং শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ হলে ৯৪৭ ভোটারের বিপরীতে ৭৫২টি ভোট পড়েছে।

এদিকে, দিনভর উত্তেজনা থাকলেও বড় ধরনের কোনো সংঘাত ছাড়াই ভোট সম্পন্ন হয়েছে। তবে ভোট বর্জন, অনিয়ম ও অব্যবস্থাপনার অভিযোগ ছিল।

নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করার জন্য ৬৭ জন পোলিং অফিসার (শিক্ষক) এবং ৬৭ জন সহকারী পোলিং অফিসার (কর্মকর্তা) দায়িত্ব পালন করছেন। ভোটগ্রহণ শেষে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট হলে গণনা করা হবে এবং সেখানেই নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণা করা হবে।

ভোটাররা কেন্দ্রীয় ও হল সংসদ মিলিয়ে মোট ৪০টি ব্যালটে ভোট দেন (টিক চিহ্ন)।

এদিকে, জাকসু নির্বাচনের ভোট ওএমআর মেশিনে গণনা করার কথা থাকলেও তা হাতে গোনা হবে। যে ওএমআর মেশিন কেনা হয়েছে তা জামায়াতের কোনো এক কোম্পানির বলে অভিযোগ ওঠার পর ভোট হাতে গোনার সিদ্ধান্ত হয়।  

বিকেল ৪টার কিছু আগে কারচুপিসহ নানা অনিয়মের কথা তোলে ভোট বর্জন করে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের সমর্থিত প্যানেল। ছাত্রদলের সাদী, বৈশাখী, ইকরা ও সাজ্জাদ প্যানেলের পক্ষ থেকে ভোট বর্জনের ঘোষণার পাশাপাশি নয়টি অসঙ্গতির কথাও তুলে ধরা হয়।  

পাশাপাশি বামপন্থি ছাত্র সংগঠন ছাত্র ইউনিয়ন সমর্থিত প্যানেলও নির্বাচন কমিশন ও ভোট কার্যক্রমে অনাস্থা জানিয়েছে। এ নিয়ে ক্যাম্পাসে উত্তেজনাকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়।  

অন্যদিকে নির্বাচনের নানা অব্যবস্থাপনার ঘটনায় ভোট গ্রহণের শেষদিকে এসে বিএনপিপন্থি শিক্ষকরাও নির্বাচনী দায়িত্ব থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দেন। এসব ঘটনায় পরে ক্যাম্পাসে অবস্থানকারী আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের সতর্ক অবস্থানে থাকতে দেখা যায়।  

এছাড়া দিনভর ঝড়-বৃষ্টির কারণে বিভিন্ন ভোটকেন্দ্রে আলো না থাকায় অন্ধকারেই ভোট দিতে হয়েছে শিক্ষার্থীদের। নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে তেমন কোনো প্রস্তুতি ছিল না। অমোচনীয় কালি ব্যবহার, একটি আবাসিক হলের ব্যালটে প্রার্থীদের নাম না থাকারও অভিযোগ পাওয়া যায়। পাশাপাশি প্রচুর জাল ভোট পড়ারও অভিযোগ পাওয়া গেছে।

জাকসু নির্বাচনে ছাত্রদল, ছাত্রশিবির, বাগছাস, বাম ও স্বতন্ত্র মিলিয়ে সর্বমোট আটটি প্যানেল অংশ নেয়।

ছাত্রদল থেকে ভিপি ও জিএস পদে লড়ছিলেন যথাক্রমে শেখ সাদী হাসান ও তানজিলা হোসেন বৈশাখী।  

বাগছাসের ‘শিক্ষার্থী ঐক্য ফোরাম’ থেকে লড়ছেন আরিফুজ্জামান উজ্জ্বল ও আবু তৌহিদ মোহাম্মদ সিয়াম।

ইসলামী ছাত্রশিবির সমর্থিত ‘সমন্বিত শিক্ষার্থী জোট’ থেকে লড়ছেন ভিপি প্রার্থী আরিফুল্লাহ আদিব ও জিএস প্রার্থী মাজহারুল ইসলাম।

‘স্বতন্ত্র শিক্ষার্থী সম্মিলন’ প্যানেলে আব্দুর রশিদ জিতু ভিপি এবং মো. শাকিল আলীর জিএস পদে লড়াই করছেন।

‘সম্প্রীতির ঐক্য’ প্যানেলে জিএস পদে শরণ এহসান, এজিএস (পুরুষ) পদে নুর এ তামীম স্রোত এবং এজিএস (নারী) পদে ফারিয়া জামান নিকি প্রার্থী হন। এ প্যানেলের ভিপি পদপ্রার্থী অমর্ত্য রায় জনের প্রার্থিতা বাতিল করেছেন আদালত।

ছাত্র ইউনিয়ন-ছাত্রফ্রন্টের ‘সংশপ্তক পর্ষদে’ জিএস পদে জাহিদুল ইসলাম ঈমন, এজিএস-নারী পদে সোহাগী সামিয়া জান্নাতুল ফেরদৌস প্রার্থী হন।

ইএসএস/টিএ/ডিএইচবি/এইচএ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।