জাবি: দীর্ঘ প্রতীক্ষার অবসান ঘটিয়ে অবশেষে শুরু হয়েছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (জাকসু) এবং হল সংসদ নির্বাচনের ভোটগ্রহণ।
বৃহস্পতিবার (১১ সেপ্টেম্বর) সকাল ৯টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ২১টি আবাসিক হলের ২২৪টি বুথে একযোগে ভোটগ্রহণ শুরু হয়।
দীর্ঘ ৩৩ বছর পর আয়োজিত এ নির্বাচনকে ঘিরে শিক্ষার্থীদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। যদিও সকালের দিকে বেশিরভাগ কেন্দ্রে ভোটার উপস্থিতি কম ছিল, তবে বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে চিত্রটি পাল্টে যাচ্ছে এবং ভোটকেন্দ্রগুলোতে ভিড় বাড়তে শুরু করেছে।
কিন্তু প্রথম কয়েক ঘণ্টা বেশ কয়েকটি ভোটকেন্দ্রে ভোটারদের উপস্থিতি ছিল একেবারেই কম।
সকাল সাড়ে ১০টা নাগাদ শহীদ রফিক-জব্বার হল কেন্দ্রে মোট ৬৫০ জন ভোটারের মধ্যে ভোট দেন মাত্র ১৩ জন।
এ কেন্দ্রের রিটার্নিং কর্মকর্তা মাহাবুবুর রহমান ভূঞা জানান, ব্যালট পেপারে স্বাক্ষর নিতে কিছুটা সময় লাগায় ভোটগ্রহণে কিছুটা দেরি হয়েছে।
একই অবস্থা দেখা গেছে শহীদ সালাম-বরকত হল কেন্দ্রেও। এখানে ২৯৯ জন ভোটার। কিন্তু প্রথম এক ঘণ্টায় ভোট পড়েছে মাত্র ২৩টি। এ কেন্দ্রের রিটার্নিং কর্মকর্তা এস এম মওদুদ আহমেদ আশা প্রকাশ করে বলেন, আমরা আশা করছি, ধীরে ধীরে ভোটারদের উপস্থিতি বাড়বে এবং একটি সুষ্ঠু ও উৎসবমুখর পরিবেশে নির্বাচন সম্পন্ন হবে।
এবারের নির্বাচনে মোট ভোটার সংখ্যা ১১ হাজার ৮৯৭। ২৫টি পদের জন্য মোট ১৭৮ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। ভোটগ্রহণ চলবে বিকেল ৫টা পর্যন্ত।
নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করার জন্য ৬৭ জন পোলিং অফিসার (শিক্ষক) এবং ৬৭ জন সহকারী পোলিং অফিসার (কর্মকর্তা) দায়িত্ব পালন করছেন।
ভোটগ্রহণ শেষে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট হলে ভোট গণনা করা হবে এবং সেখানেই নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণা করা হবে।
ভোটাররা কেন্দ্রীয় ও হল সংসদ মিলিয়ে মোট ৪০টি ব্যালটে ভোট নেওয়া হচ্ছে (টিক চিহ্ন)। বিশেষ ওএমআর মেশিনে ভোটগণনা করা হবে।
জাকসুর মোট প্রার্থীর ২৫ শতাংশ ছাত্রী, বাকি ৭৫ শতাংশই ছাত্র। ভিপি পদে কোনো নারী শিক্ষার্থী প্রার্থী হননি। জিএস পদে ১৫ জন প্রার্থীর মধ্যে নারী প্রার্থী দুজন।
সবগুলো হল সংসদ মিলিয়ে মোট প্রার্থীর ২৪ দশমিক ৪ শতাংশ ছাত্রী। আর মেয়েদের হলগুলোর পাঁচটিতে ১৫ পদে প্রার্থীই নেই।
নির্বাচনে বাম, শিবির, ছাত্রদল ও স্বতন্ত্রদের মিলিয়ে সর্বমোট আটটি প্যানেল অংশ নিয়েছে।
ছাত্রদল থেকে ভিপি ও জিএস পদে লড়ছেন যথাক্রমে শেখ সাদী হাসান ও তানজিলা হোসেন বৈশাখী।
বাগাছাসের ‘শিক্ষার্থী ঐক্য ফোরাম’ থেকে লড়ছেন আরিফুজ্জামান উজ্জ্বল ও আবু তৌহিদ মোহাম্মদ সিয়াম।
ইসলামী ছাত্রশিবির ‘সমন্বিত শিক্ষার্থী জোট’ নামে লড়ছে। তাদের ভিপি প্রার্থী আরিফুল্লাহ আদিব ও জিএস মাজহারুল ইসলাম।
‘স্বতন্ত্র শিক্ষার্থী সম্মিলন’ প্যানেলে আব্দুর রশিদ জিতু ভিপি এবং মো. শাকিল আলীর জিএস পদে নেতৃত্ব দিচ্ছেন।
‘সম্প্রীতির ঐক্য’ প্যানেলে জিএস পদে শরণ এহসান, এজিএস (পুরুষ) পদে নুর এ তামীম স্রোত এবং এজিএস (নারী) পদে ফারিয়া জামান নিকি লড়বেন। এ প্যানেলের ভিপি পদপ্রার্থী অমর্ত্য রায় জনের প্রার্থিতা বাতিল করেছেন আদালত।
ছাত্র ইউনিয়ন-ছাত্রফ্রন্টের ‘সংশপ্তক পর্ষদে’ জিএস পদে জাহিদুল ইসলাম ঈমন, এজিএস-নারী পদে সোহাগী সামিয়া জান্নাতুল ফেরদৌস লড়াই করছেন।
ইএসএস/টিএ/ডিএইচবি/এসআই