ঢাকা, মঙ্গলবার, ১৯ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২, ০৩ জুন ২০২৫, ০৬ জিলহজ ১৪৪৬

শিক্ষা

ঢাবিতে প্রাক-বাজেট আলোচনা

গুরুত্বপূর্ণ খাতে বাজেট কাটছাঁট না করার সুপারিশ

ইউনিভার্সিটি করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭:০৩, মে ৩১, ২০২৫
গুরুত্বপূর্ণ খাতে বাজেট কাটছাঁট না করার সুপারিশ ঢাবিতে প্রাক-বাজেট আলোচনা সভায় বক্তারা।

ঢাকা: বিভিন্ন খাতে বাংলাদেশের বাজেট বিশ্বের সমপর্যায়ের অনেক দেশের তুলনায় কম। প্রতিবছর সংশোধিত বাজেটে এখান থেকেও গুরুত্বপূর্ণ খাতে কাটছাঁট করা হয়।

এবার গুরুত্বপূর্ণ খাতে যেন কর্তন করা না হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। শিক্ষা, স্বাস্থ্য, সামাজিক সুরক্ষা খাতে কোনোভাবেই বরাদ্দ কমানো যাবে না।

শনিবার (৩১ মে) দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদের আ ব ম ফারুক কনফারেন্স হলে আয়োজিত ‘২০২৫-২৬ অর্থবছরে বাজেট সংস্কারের রূপরেখা’ শীর্ষক সভায় বক্তারা এসব কথা বলেন।  

বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজনেস রিসার্চ ব্যুরো এই সভার আয়োজন করে। সভায় ব্যবসা গবেষণা ব্যুরোর পরিচালক এবিএম শহীদুল ইসলামের সঞ্চালনায় উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক সায়মা হক বিদিশা, ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদের ডিন অধ্যাপক মাহমুদ ওসমান ইমাম, অর্থনীতিবিদ সাইফুল ইসলাম, শিক্ষক ওয়াসিক সাদিক খান বক্তব্য দেন।

সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশের সাতটি খাতকে গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। খাতগুলো হলো- শিক্ষা, স্বাস্থ্য, স্থানীয় রেভিনিউ মোবিলাইজেশন, আর্থিক খাত, জ্বালানি খাত, দরিদ্রতা, বৈষম্য ও বেকারত্ব।  

সায়মা হক বিদিশা বলেন, প্রতিবছর প্রস্তাবিত বাজেটে কম বরাদ্দ নিয়ে সমালোচনা হয়। তবে দেখা যায়, সংশোধিত বাজেটে গুরুত্বপূর্ণ খাতে কাটছাঁট করা হয়। এবার গুরুত্বপূর্ণ খাতে যেন কর্তন করা না হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। শিক্ষা, স্বাস্থ্য, সামাজিক সুরক্ষা খাতে কোনোভাবেই বরাদ্দ কমানো যাবে না।  

বিজনেস রিসার্চ ব্যুরোর পাওয়া তথ্যানুযায়ী, বাংলাদেশ কেবল ০.৫ শতাংশ ভোকেশনাল শিক্ষায় ব্যয় করে। দেশের ৭০ শতাংশ কর্মী আধা অথবা নিম্ন দক্ষ। বাংলাদেশ ২০২২ সালে ৪.৭ বিলিয়ন ডলার হারিয়েছে কর্মীদের দক্ষতার অভাবে।

এই খাতের গুরুত্ব তুলে ধরে সায়মা হক বিদিশা বলেন, পাশাপাশি কিছু খাতে গুরুত্ব দেওয়া দরকার। প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ে নজর দিতে হবে— দক্ষতা ট্রেনিং ইত্যাদিতে জোর দিতে হবে।  

তিনি আরও বলেন, বাজেট বাস্তবায়নের জন্য মন্ত্রণালয় প্রকল্পভিত্তিক মনিটরিং ও ইভ্যালুয়েশন করা দরকার। প্রত্যেক মন্ত্রণালয়কে উপস্থাপন করতে হবে কেন বাস্তবায়নে শ্লথগতি দেখা যাচ্ছে, এটার কারণ কী। তাহলে আমরা কিছু উন্নতি দেখতে পাবো।

যত বেশি ডিজিটাইজেশন করা যাবে, স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা যাবে, তত বেশি মানুষকে করজালে আনা যাবে। এ ছাড়া জেলা পর্যায়ে কর মেলা, প্রণোদনা দিয়ে করজাল বাড়ানো যাবে।   

সায়মা হক বিদিশা বলেন, মূল্যস্ফীতি নিয়ে অনেক কথা হচ্ছে। কিন্তু সামাজিক সুরক্ষা খাতগুলোতে বরাদ্দ বাড়ানো হচ্ছে না। ন্যূনতম হলেও ভাতার পরিমাণ বাড়াতে হবে। এটা যদি করা না যায় তাহলে দারিদ্র্য বিমোচনে আগাতে পারবো না। সামাজিক সুরক্ষা খাতে গ্রামের পাশাপাশি শহরের বস্তিবাসীদেরও বিশেষত তাদের কর্মসংস্থান কেন্দ্র করে কর্মসূচি নিতে হবে।

তিনি আরও বলেন, ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্পে জোর দেওয়া দরকার। এতে গ্রামীণ অর্থনীতি চাঙা হবে। যে-সব তরুণ উচ্চশিক্ষা নিচ্ছে না, তাকেও কাজে লাগানোর ব্যবস্থা করতে হবে।

কুটির শিল্পগুলোতে সহজে ট্রেড লাইসেন্স, সহজ শর্তে ঋণ পাওয়া যায়। কোনো খাতে প্রণোদনার জন্য শ্রমিকদের স্বার্থ দেখা হচ্ছে কিনা, তাদের বেতন, ওভারটাইম, কাজের পরিবেশ নিশ্চিত করা, মাতৃত্বকালীন ছুটি দেওয়া হচ্ছে কিনা— ইত্যাদি বিষয় বিবেচনায় নেওয়া হলে শ্রমিকদের অধিকারও রক্ষা হবে।

ব্যবসা গবেষণা ব্যুরোর পরিচালক এবিএম শহীদুল হক বলেন, একটা রিফর্ম চলছে। বাজেটেও রিফর্ম চাই। সবকিছুর আগে প্রশাসনিক সংস্কার দরকার। আমরা বাজেট বরাদ্দ নিয়ে কথা বলবো। কিন্তু যারা বাজেট বাস্তবায়ন করবে সেখানে সংস্কার করতে না পারলে দেখা যাবে যা বরাদ্দ হচ্ছে তাও খরচ হয়নি, আর যেটা বাস্তবায়িত হয়েছে সেটাও সুষমভাবে হচ্ছে না।

এফএইচ/আরবি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।