ঢাকা, মঙ্গলবার, ২৪ আষাঢ় ১৪৩২, ০৮ জুলাই ২০২৫, ১২ মহররম ১৪৪৭

অর্থনীতি-ব্যবসা

দেশে ৪০ বছরে সর্বনিম্ন প্রবৃদ্ধি, ৮ থেকে কমে ৩ শতাংশ

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭:০৩, এপ্রিল ১২, ২০২০
দেশে ৪০ বছরে সর্বনিম্ন প্রবৃদ্ধি, ৮ থেকে কমে ৩ শতাংশ ছবি: সংগৃহীত

ঢাকা: করোনা ভাইরাসের কারণে বাংলাদেশের অর্থনীতি ভয়াবহ হুমকির মুখে। চলতি অর্থবছরে মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) প্রবৃদ্ধি  এক ধাক্কায় ৮ দশমিক ১৩ শতাংশ থেকে নেমে ২ থেকে ৩ শতাংশ হবে, যা বিগত ৪০ বছরের মধ্যে সবচেয়ে কম। করোনা ভাইরাস পরিস্থিতি যদি দীর্ঘায়িত হয়, সেক্ষেত্রে প্রবৃদ্ধি আরও কমে যাবে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে বিশ্বব্যাংক।

করোনা ভাইরাসের ভয়াবহতা চলতে থাকলে ২০২১ সালে ১ দশমিক ২ শতাংশ থেকে ২ দশমিক ২৯ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হবে। ২০২২ সালে ২ দশমিক ৮ শতাংশ থেকে ৩ দশমিক ৯ শতাংশ হবে।

২০২০ সালে এশিয়ার মধ্যে ভারতের প্রবৃদ্ধি বেশি হবে, যা ৪ দশমিক ৮ শতাংশ থেকে ৫ শতাংশ।

রোববার (১২ এপ্রিল) বিশ্বব্যাংকের ‘সাউথ এশিয়া ইকোনমিক ফোকাস’ প্রতিবেদনে এ পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে।

গত অর্থবছরে বাংলাদেশে ৮ দশমিক ১৩ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছিল। চলতি অর্থবছরে দক্ষিণ এশিয়ার গড় প্রবৃদ্ধির হার ১ দশমিক ৮ শতাংশ থেকে ২ দশমিক ৮ শতাংশ হতে পারে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে বিশ্বব্যাংক, যা চার দশকের মধ্যে সবচেয়ে কম। এর আগে বিশ্বব্যাংক পূর্বাভাস দিয়েছিল দক্ষিণ এশিয়ার গড় প্রবৃদ্ধি হবে ৬ দশমিক ৩ শতাংশ।

বিশ্বব্যাংক জানায়, করোনা ভাইরাসে ক্রমবর্ধমান মানবিক ক্ষতি এবং বৈশ্বিক অর্থনৈতিক পরিণতির মধ্যে বাংলাদেশ ও দক্ষিণ এশিয়ার অন্য সরকারকে স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে হবে।

দক্ষিণ এশিয়ার অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে, বাণিজ্য স্থবির, আর্থিক ও ব্যাংকিং খাতে আরও বেশি চাপের কারণে তীব্র অর্থনৈতিক মন্দার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। দেশের উৎপাদন খাত, বিশেষ করে তৈরি পোশাকের চাহিদা বিশ্বব্যাপী কমে যাওয়াসহ অভ্যন্তরীণ খাতের পণ্যের চাহিদাও কমবে, যা কর্মসংস্থানে ঝুঁকি তৈরি করবে। বাড়বে শহরের দারিদ্র্য। শুধু শহর নয় গ্রামীণ জনগোষ্ঠীও বিপাকে পড়বে। দেশব্যাপী সবকিছু বন্ধ থাকায় ব্যক্তিপর্যায়ে ভোগ কমে যাবে। এমন অবস্থায় কোভিড-১৯-এর ঝুঁকি কমানো এবং আর্থিক খাতের ভঙ্গুরতার ঝুঁকি কমাতে অর্থনীতিতে মধ্যমেয়াদি পুনরুদ্ধার কর্মসূচি নেওয়ার সুপারিশ করেছে বিশ্বব্যাংক।

দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলের বিশ্বব্যাংকের ভাইস প্রেসিডেন্ট হার্টউইগ শেফার বলেন, দক্ষিণ এশিয়ার সব দেশকে করোনা ভাইরাস প্রতিরোধ করে নিজ দেশের জনগণকে সুরক্ষাকে অগ্রাধিকার দিতে হবে। দরিদ্রতম মানুষের প্রতি বেশি খেয়াল করতে হবে কারণ এরাই সবচেয়ে বেশি স্বাস্থ্য ও অর্থনৈতিক ঝুঁকিতে রয়েছেন।

বিজ্ঞপ্তিতে বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর মার্সি টেম্বন বলেন, করোনা ভাইরাস মহামারি কতটা দীর্ঘায়িত হবে, তার ওপর বাংলাদেশের অর্থনীতি নির্ভর করছে। তবে করোনা ভাইরাস মোকাবিলায় বাংলাদেশ সরকার সঠিক সময়ে দ্রুত ব্যবস্থা নিয়েছে। সরকারের ঘোষিত প্রণোদনা প্যাকেজ  সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচির আওতা বেগবান করেছে। সরকারকে করোনা প্রতিরোধের কাজে সহায়তা করার জন্য তাৎক্ষণিকভাবে ১০ কোটি ডলার দিয়েছে বিশ্বব্যাংক।

বিশ্বব্যাংক আরও বলছে, দক্ষিণ এশিয়ার ৮টি দেশের মধ্যে চলতি অর্থবছরে (নিজ নিজ দেশের) চারটি দেশের প্রবৃদ্ধি নেতিবাচক হয়ে যাবে। দেশগুলো হলো আফগানিস্তান (মাইনাস ৫ দশমিক ৯ থেকে মাইনাস ৩ দশমিক ৮ শতাংশ), মালদ্বীপ (মাইনাস ১৩ শতাংশ থেকে মাইনাস সাড়ে ৮ শতাংশ), পাকিস্তান (মাইনাস ২ দশমিক ২ শতাংশ থেকে মাইনাস ১ দশমিক ৩ শতাংশ) ও শ্রীলঙ্কা (মাইনাস ৩ শতাংশ থেকে মাইনাস দশমিক ৫ শতাংশ)। তবে নেপালে ১ দশমিক ৫ থেকে ২ দশমিক ৮ শতাংশ এবং ভুটানে ২ দশমিক ২ শতাংশ থেকে ২ দশমিক ৯ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হতে পারে।

বাংলাদেশ সময়: ১৭০৩ ঘণ্টা, এপ্রিল ১২, ২০২০
এমআইএস/এফএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।