আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) এর ব্যবস্থাপনা পরিচালকের সঙ্গে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস আগামী ১৬ সেপ্টেম্বর মঙ্গলবার ভিডিও কনফারেন্সে অংশ নেবেন। ভিডিও কনফারেন্সে অর্থ উপদেষ্টা এবং অর্থ সচিব ড. মো. খায়েরুজ্জামান মজুমদারেরও যোগ দেওয়ার কথা রয়েছে।
জানা গেছে, আইএমএফের সঙ্গে ২০২৩ সালে স্বাক্ষরিত ৪.৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ঋণ কর্মসূচির আওতায় গৃহিত সংস্কার কার্যক্রমসমূহ সফলভাবে সম্পন্ন করার বিষয়ে সংস্থাটির অব্যাহত সহযোগিতার পরিপ্রেক্ষিতে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করে গত ২০২৫ সালের ১ মে তারিখে প্রধান উপদেষ্টা আইএমএফের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মিজ ক্রিস্টালিনা জর্জিয়েভাকে একটি চিঠি পাঠান। প্রত্যুত্তরে ১৯ মে তারিখে আইএমএফের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আগামীতে বাংলাদেশের জন্য সহযোগিতা অব্যাহত রাখার বিষয়ে প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করে প্রধান উপদেষ্টাকে চিঠি দেন।
ওই চিঠিতে আইএমএফের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ভবিষ্যতে বাংলাদেশের জন্য সহযোগিতার সম্ভাব্য ক্ষেত্র এবং কাঠামো সংক্রান্ত বিষয়ে একটি ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে আলোচনার আগ্রহের কথা জানানো হয়। সে পরিপ্রেক্ষিতে ভিডিও কনফারেন্সের সময় চেয়ে গত ২০ জুলাই তারিখে অর্থ বিভাগ থেকে প্রধান উপদেষ্টা বরাবর একটি চিঠি পাঠানো হয়। তারই ধারাবাহিকতায় আগামী ১৬ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যা ৬.৩০টায় প্রধান উপদেষ্টা এবং আইএমএফের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ভিডিও কনফারেন্সে অংশ নেবেন বলে সম্মতি দিয়েছেন।
২০২৩ সালের ৩০ জানুয়ারি ৪.৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ঋণ প্রস্তাব অনুমোদন দেয় আইএমএফ। এই ঋণের পুরোটা ৪২ মাসে ছাড় দেওয়ার কথা। সে হিসাবে ২০২৬ সালের জুনের মধ্যে পুরো ঋণের টাকা ছাড় হওয়ার কথা। সংস্থাটি এনবিআর সংস্কার, খেলাপি ঋণ কমিয়ে আনা, বিভিন্নখাতে দেওয়া ভর্তুকি কমিয়ে আনা, আর্থিক খাতে সুশাসন নিশ্চিত করাসহ বেশ কিছু শর্ত জুড়ে দেয়। কিন্তু ৩ ও ৪ নম্বর কিস্তির অর্থ ছাড় করা নিয়ে জটিলতা দেখা দেয়।
২০২৩ সালের ৩০ জানুয়ারি ঋণ অনুমোদন উপলক্ষে আইএমএফের এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বাংলাদেশ এক্সটেন্ডেড ক্রেডিট ফ্যাসিলিটি (ইসিএফ) এবং এক্সটেন্ডেড ফান্ড ফ্যাসিলিটি (ইএফএফ) এর অধীনে প্রায় ৩.৩ বিলিয়ন ডলার পাবে। পাশাপাশি রেজিলিয়েন্স অ্যান্ড সাসটেইনেবিলিটি ফ্যাসিলিটি (আরএসএফ) এর অধীনে প্রায় ১.৪ বিলিয়ন ডলার পাবে। এর মাধ্যমে জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকিতে থাকা নিম্ন ও মধ্যম আয়ের দেশগুলোর জন্য নির্মিত তহবিল থেকে আইএমএফ এর ঋণ পাওয়া এশিয়ার প্রথম দেশ হিসেবে বাংলাদেশ প্রথম এ ঋণ পায়।
ঋণ মঞ্জুরের দিন থেকে ৪২ মাসের মধ্যে সাত কিস্তিতে এ ঋণ দেওযার কথা। এর মধ্যে ৪৭৬ মিলিয়ন ডলার তাৎক্ষণিকভাবে ছাড় করা হবে বলেও জানানো হয় তখন। অবশিষ্ট ৬ কিস্তির প্রতিটিতে ৭০৪ মিলিয়ন ডলার করে ঋণ ছাড় করা হবে। জানা গেছে, এ পর্যন্ত ৩৬১ কোটি ডলার ছাড় হয়েছে। বাকি রয়েছে ১০৯ কোটি ডলার। ঋণের শেষ কিস্তি আসবে ২০২৬ সালে।
শেষ কিস্তি ছাড় ও নতুন বেশ কিছু উন্নয়ন কর্মসূচি নেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে অন্তর্বর্তী সরকারের। সেগুলোতে অর্থায়নসহ বাজেট সাপোর্ট হিসেবে নতুন ঋণ চাওয়া হতে পারে বলে জানা গেচে।
এনডি