ঢাকা, রবিবার, ১১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২, ২৫ মে ২০২৫, ২৭ জিলকদ ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

১০ দিন ঢাকায় চামড়া প্রবেশ করতে দেওয়া হবে না: বাণিজ্য উপদেষ্টা

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭:২৩, মে ২৫, ২০২৫
১০ দিন ঢাকায় চামড়া প্রবেশ করতে দেওয়া হবে না: বাণিজ্য উপদেষ্টা

বাজারে চামড়ার সরবরাহ সংকুচিত করতে কোরবানির ঈদের ১০ দিন ঢাকাতে চামড়া প্রবেশ করতে দেওয়া হবে না বলে জানিয়েছেন বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দিন। তিনি বলেন, যারা স্থানীয় পর্যায়ে চামড়া সংরক্ষণ করবেন, সংরক্ষণ উপযোগী করার জন্য সারা দেশে লবণ সরবরাহ করা হবে।

রোববার (২৫ মে) দুপুরে সচিবালয়ের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে সম্মেলন কক্ষে কোরবানির চামড়ার দাম নির্ধারণ নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা জানান।

বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন, রোজার ঈদের পরেই প্রধান উপদেষ্টা নির্দেশনা দিয়েছিলেন কোরবানির চামড়ার যাতে সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা করা হয়। আমরা সেই নির্দেশ মতো কাজ করছি। রাস্তায় কোরবানির পশু চলাচলের ক্ষেত্রে সব ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কোরবানির চামড়া বাজার ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে এবার প্রথম সারা দেশে বিনামূল্যে ৩০ হাজার টন লবণ এতিমখানা ও মাদরাসায় বিতরণ করা হবে। এটার সুষ্ঠু বিপণন ও ব্যবস্থাপনার জন্য সব জেলা প্রশাসকদের সঙ্গে আলোচনা করা হয়েছে।

তিনি বলেন, ট্যানারি মালিকদের প্রণোদনা বাবদ সরকারের কাছে ২৫০ কোটি টাকা পাওনা ছিল। সেই টাকাও অর্থ বিভাগ বাংলাদেশ ব্যাংকের মাধ্যমে ছাড় করে দিয়েছে। যাতে তাদের আর্থিক সক্ষমতা বৃদ্ধি হয়। কাঁচা চামড়া বাংলাদেশ থেকে রপ্তানি নিষিদ্ধ তালিকায় ছিল, সেখান থেকে তুলে দিচ্ছি। যাতে স্থানীয় বাজারে সঠিক মূল্য পাওয়া না গেলে সরাসরি আন্তর্জাতিক বাজারে কাঁচা চামড়া বিক্রি করে দিতে পারেন ব্যবসায়ীরা।

বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন, বাজারে চামড়ার সরবরাহ সংকুচিত করার জন্য আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি ১০ দিন ঢাকাতে চামড়া প্রবেশ করতে দেওয়া হবে না। এই সব ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে আমরা আশা করি বাজারে চামড়ার দাম বৃদ্ধি পাবে। এই চামড়ার যারা হকদার এতিম, তারা ন্যায্য মূল্য পাবে। আমাদের প্রচেষ্টা সফল হবে।

তিনি বলেন, আমরা দুইটা তথ্য চিত্র তৈরি করেছি, যেটা সারা দেশেই প্রদর্শিত হবে। তথ্যচিত্রে আমরা কীভাবে চামড়া সংরক্ষণ ও প্রসেস করতে হয়, সেটা শেখানোর চেষ্টা করব। এ ছাড়া আমরা ৮৬ হাজার কসাইকে প্রশিক্ষণ দিয়েছি। এক্ষেত্রে পরিবেশ, পানি, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় সবাই আমাদের সহযোগিতা করেছে।

শেখ বশিরউদ্দিন বলেন, আমরা যেহেতু বিনামূল্যে লবণ দিচ্ছি, প্রশিক্ষণ দিয়েছি এবং চামড়ায় লবণ লাগাতে যে শ্রম ব্যয় হয়, সেসব কিছু বিবেচনায় নিয়েই এবার চামড়ার মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে। এবার যে মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে, সেটা যৌক্তিক।

ঈদের ১০ দিন ঢাকাতে চামড়া প্রবেশ করতে দেওয়া হবে না, তাহলে গ্রামে যারা চামড়া সংগ্রহ করবে তারা কী করবে জানতে চাইলে উপদেষ্টা বলেন, যারা স্থানীয় পর্যায়ে চামড়া সংরক্ষণ করবেন, সংরক্ষণ উপযোগী করার জন্যই সারা দেশে লবণ সরবরাহ করা হবে।

আপনারা লবণযুক্ত চামড়ার দাম নির্ধারণ করলেন, কিন্তু যারা পশু কোরবানি দেবেন তারা কী দামে বিক্রি করবেন এমন প্রশ্নের জবাবে উপদেষ্টা বলেন, যারা পশু কোরবানি করেন তারা এতিমখানায় বা মাদরাসায় চামড়াটা দিয়ে দেন। তারা সংরক্ষণ করে বিক্রি করবেন।

গ্রামের অনেকেই নিজেরা চামড়া বিক্রি করে গরিবদের টাকা দিয়ে দেয় তাহলে তারা কী করবে এমন প্রশ্নের জবাবে উপদেষ্টা বলেন, অধিকাংশ লোকের বাজারে গিয়ে চামড়া বিক্রি করে দেয়, সে ঐহিত্য আছে বলে আমার মনে হয় না। যদি থাকে তারা মাদরাসা থেকে লবণ নিয়ে চামড়া সংরক্ষণ করে বিক্রি করবেন। আমার মনে হয়, এখন সবাই কোরবানির চামড়া মাদরাসা বা এতিমখানায় দিয়ে দেন।

এ সময় বাণিজ্য সচিব মাহবুবুর রহমান বলেন, আমরা এবছরের এপ্রিল মাস মাঝামাঝি থেকেই কোরবানির চামড়া ব্যবস্থাপনার জন্য বিভিন্ন অংশীজনসহ ব্যবসায়ীদের সঙ্গে আলোচনা শুরু করেছি। কোরবানি চামড়ার বড় একটা অংশ সুবিধাভোগী হলো এতিমখানা, মাদরাসাগুলো। যথাযথ মূল্য না পেলে ক্ষতিগ্রস্ত হয় তারা।

জিসিজি/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।