ঢাকা, রবিবার, ৭ বৈশাখ ১৪৩২, ২০ এপ্রিল ২০২৫, ২১ শাওয়াল ১৪৪৬

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

মাতারবাড়ী গভীর সমুদ্র বন্দরে নতুন সূর্যোদয়

আল রাহমান, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১১৮ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৭, ২০২৫
মাতারবাড়ী গভীর সমুদ্র বন্দরে নতুন সূর্যোদয় ...

চট্টগ্রাম: সূর্যোদয়ের দেশ জাপানের জাইকার হাত ধরেই দেশের একমাত্র গভীর সমুদ্র বন্দরে নতুন সূর্যোদয় হতে যাচ্ছে।

জাপানি প্রতিষ্ঠান পেন্টা ওশান এবং থোয়া করপোরেশনের সঙ্গে আগামী ২২ এপ্রিল ঢাকায় চুক্তি করতে যাচ্ছে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ।

চুক্তি অনুযায়ী ৪ বছরে ৪৬০ মিটার দীর্ঘ একটি কনটেইনার জেটি এবং ৩০০ মিটার দীর্ঘ আরেকটি মাল্টি পারপাস জেটিসহ টার্মিনাল নির্মাণ করা হবে।  

চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সচিব মোহাম্মদ ওমর ফারুক বাংলানিউজকে বলেন, ‘প্রায় ৬ হাজার ১৯৭ কোটি টাকায় এই চুক্তি হবে।

পুরোটাই হবে জাইকার অর্থায়নে। ২০২৯ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত এই চুক্তির মেয়াদ থাকবে, এর মধ্যেই প্রতিষ্ঠানটি টার্মিনাল নির্মাণ করবে। ’

তিনি জানান, এর আগে অবকাঠামো নির্মাণের চুক্তি হয়েছে। এবার হচ্ছে জেটি ও টার্মিনাল নির্মাণ চুক্তি। বলা যায় এ কাজটি হলে গভীর সমুদ্র বন্দরে অপারেশন শুরু করা যাবে।

গভীর সমুদ্র বন্দরটি চালু হলে শুধু বাংলাদেশ নয় উপকৃত হবে প্রতিবেশী সব দেশও। এখানে ভিড়বে সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া, চীনের আধুনিক বন্দরের মতো বড় বড় মাদারভ্যাসেল। এর ফলে বাংলাদেশের রপ্তানি পণ্য অন্য দেশের বন্দরে ট্রান্সশিপমেন্ট বা ট্রানজিটের জন্য পাঠাতে হবে না। মাতারবাড়ী থেকেই দ্রুততম ও সাশ্রয়ী খরচে ইউরোপ, আমেরিকার বন্দরে পৌঁছে যাবে। মাদারবাড়ী হবে রিজিওনাল হাব (অঞ্চল)।

একজন শিপিং ব্যবসায়ী জানান, মাতারবাড়ী গভীর সমুদ্র বন্দর এখন আর স্বপ্ন নয়, এটি বাস্তবতা। ইতিমধ্যে কয়লাবাহী বড় বড় জাহাজ ভিড়েছে মাতারবাড়ীতে। যত দ্রুত সম্ভব দুইটি জেটি নিয়ে নির্মাণ, লজিস্টিক সাপোর্ট সংগ্রহ, পণ্যবাহী গাড়ির সড়ক ও রেলপথ নির্মাণসহ আনুষঙ্গিক কাজ টেকসইভাবে শেষ করে অপারেশনে চলে যাওয়া সময়ের দাবি। এক্ষেত্রে জাইকার সঙ্গে চুক্তি হওয়াটা গৌরবের। কারণ তাদের কাজের কোয়ালিটি ভালো।

এই বন্দরের জন্য বিশেষ প্রযুক্তি ব্যবহার করা হচ্ছে। এসব প্রযুক্তির অনেক কিছুই বাইরে তৈরি হবে, শুধু দেশে এনে স্থাপন করা হবে। তাই নির্মাণ কাজ অনেক দ্রুত শেষ হবে আশা সংশ্লিষ্টদের।

সূত্র জানায়, কয়েক বছর আগে ৯ হাজার কোটি টাকা খরচ করে কক্সবাজারের মহেশখালীর মাতারবাড়ীতে তৈরি করা হয় সাড়ে ৬ কিলোমিটার দীর্ঘ এবং সাড়ে ১৪ মিটার গভীরতার কৃত্রিম চ্যানেল। যে চ্যানেল দিয়ে সফলভাবে কয়েকশ জাহাজ ভিড়েছে।  

সময়ক্ষেপণের কারণে মাতারবাড়ি প্রকল্প খরচ দুই দফায় বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৪ হাজার ৩৮১ কোটি টাকায়।  

গভীর সমুদ্র বন্দরের সুবিধা কাজে লাগিয়ে মাতারবাড়ীতে এই অঞ্চলের সবচেয়ে বড় এনার্জি হাব গড়ে তোলার পরিকল্পনা নিয়েছে সরকার। যে কারণে গভীর সমুদ্রে পাইপের মাধ্যমে তেল সরবরাহে এসপিএমের ল্যান্ডিং স্টেশন করা হয়েছে মাতারবাড়ীতেই। এ বন্দরকে ঘিরে আসবে অনেক বিদেশি বিনিয়োগ, গড়ে উঠবে নতুন নতুন শিল্পাঞ্চল। হবে কোটি মানুষের কর্মসংসস্থান।

বাংলাদেশ সময়: ১১১১ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৭, ২০২৫
এআর/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।