ঢাকা, সোমবার, ২৮ আশ্বিন ১৪৩২, ১৩ অক্টোবর ২০২৫, ২০ রবিউস সানি ১৪৪৭

শিল্প-সাহিত্য

ছায়ানটের শরৎ অনুষ্ঠানে মোহনীয় মুগ্ধতা

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮:৫৯, অক্টোবর ১২, ২০১৮
ছায়ানটের শরৎ অনুষ্ঠানে মোহনীয় মুগ্ধতা ছায়ানটের পরিবেশনা-ছবি-শাকিল আহমেদ

ঢাকা: ‘দেখো দেখো, দেখো, শুকতারা আঁখি মেলি চায়/প্রভাতের কিনারায়।।/  ডাক দিয়েছে রে শিউলি ফুলেরে-/ আয় আয় আয়॥/ ও যে কার লাগি জ্বালে দীপ,/ কার ললাটে পরায় টিপ,/ ও যে কার আগমনী গায়-/ আয় আয় আয়।’

কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের শরৎকে আমন্ত্রণ জানানো এমন শুভ্র আর স্নিগ্ধ সঙ্গীতের মধ্য দিয়ে শুরু হয় আয়োজন। তাতে কণ্ঠ মেলায় ছায়ানটের ছোট শিল্পীরা, করে নৃত্যও।

বেজে ওঠে কাসর ঘণ্টা; ছায়ানট নিবেদন করে শরতের মহিমা।

শুক্রবার (১২ অক্টোবর) সকালে ছায়ানটের ছোটদের দলের সম্মেলিত নৃত্য-গীতে শুরু হয় ছায়ানটের শরতের অনুষ্ঠানসূচি। এরপর একক সঙ্গীত নিবেদন করেন নুসরাত জাহান সাথী, বিক্রম দাস ও মাকছুরা আখতার।

সবুজ শ্যামলিমায় পরিপূর্ণ আমাদের এদেশ অপরূপ ঋতু বৈচিত্র্যের আধার। অপূর্ব রূপ এবং অফুরন্ত সম্ভার নিয়ে এখানে একের পর এক আবর্তিত হয় ছয়টি ঋতু। বর্ষার অবিশ্রান্ত রিমঝিম গানের অলস বিধুর মনথরন যখন ক্লান্তিতে মনকে বিষন্ন করে তোলে, ঠিক তখনই শরৎ তার স্নিগ্ধরূপ মাধুর্য নিয়ে হঠাৎ আলোর মতো নীল আকাশে ঝলমল করে হেসে ওঠে শিউলি ঝরা শরতের মেঘশূন্য নীলাকাশ। আর সে রূপকেই যেন সম্মেলক নৃত্য-গীতে ছায়ানট মিলনায়তনে হাজির করলেন ছায়ানটের বড় শিল্পীদের দল।

শরতের শেষ ছুটির দিনে নীল সাদা রঙের ছায়ানট মিলনায়তনের ভুবন মাতিয়ে শিল্পীরা পরিবেশন করেন ‘তোমার মোহন রূপে কে রয় ভুলে’। মোহনীয় সে পরিবেশনায় মুগ্ধতা ছড়ায় দর্শকদের হৃদয়েও। তাইতো তারা বলে উঠতে পারেন, ‘ঋতুর রং মাখা রূপসী বাংলার নীল আকাশের শুভ্র মেঘের মতোই সুন্দর শিল্পীদের পরিবেশনা’।

শরতের বিদায়বেলায় সকালের এ আয়োজনে তার পায়ে আরও নিবেদন করা হয়-শরৎ আলোর কমলবনে, আমারে ডাক দিল কে ভিতর পানে, আজি শরতপনে প্রভাত স্বপনে, আজ প্রথম ফুলের পাব প্রসাদখানি, হেলা ফেলা সারাবেলা, এবার অবগুণ্ঠন খোলো, কোন খ্যাপা শ্রাবণ ছুটে এল, তবু মনে রেখো যদি দুরে যাই চলে, আমি চিনি গো চিনি তোমারে, এবং মেঘের কোলে রোদ হেসেছে বাদল গেছে টুটি!

একক সঙ্গীত এবং সম্মেলক নৃত্য-গীতে এগুলো যথাক্রমে নিবেদন করেন- দীপ্র নিশান্ত, অনিন্দিতা বৃষ্টি, অভিজিৎ দাস, ছায়ানটের ছোটদের দল, দীপ্তি তালুকদার, তাহমিদ ওয়াসিফ ঋভু, ছায়ানটের বড় শিল্পীদের দল, সেমন্তি মঞ্জরী, চঞ্চল বড়াল এবং ছোট ও বড় শিল্পীদের দল একত্রে।

এসময় যন্ত্রাণুষঙ্গে তবলায় সঙ্গত করেন এনামুল হক ওমর ও ইফতেখার আলম ডলার, এসরাজে অসিত বিশ্বাস, কী-বোর্ডে ইফতেখার হোসেন সোহেল এবং মন্দিরায় প্রদীপ কুমার রায়। সবশেষে পরিবেশন করা হয় জাতীয় সঙ্গীত।

আয়োজনে ছায়ানটের নির্বাহী সভাপতি ডা. সারওয়ার আলী বাংলানিউজকে জানান, নীল আকাশে শুভ্র মেঘের আনাগোনা আর নদীর পাড়ে কাশফুলের দোলা নিয়ে প্রকৃতিতে আগমন ঘটে শরতের। স্নিগ্ধ আর সতেজ এ শরতের রাজত্বে থেমে যায় বর্ষার মেঘের গুড়গুড়। স্বচ্ছ আকাশ, ফুলের শোভা আর শস্যের শ্যামলতা নিয়ে উদ্ভাসিত হয় ঋতুর এ রাণী। আর তার আগমন যেমন সুন্দর, তেমনই সুন্দর বিদায়ের প্রত্যাশা থেকেই শরতের এ অনুষ্ঠান।

বাংলাদেশ সময়: ১৪৫৭ ঘণ্টা, অক্টোবর ১২, ২০১৮
এইচএমএস/আরআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।