বাংলাভাষার শক্তিমান কবি, কথাসাহিত্যিক ও সাংবাদিক আল মাহমুদের ৯০তম জন্মবার্ষিকী আজ। ১৯৩৬ সালের ১১ জুলাই ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার মোড়াইল গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন তিনি।
আধুনিক বাংলা কবিতায় দেশজ উপাদান, প্রেম ও রাজনীতি—সবকিছু মিলিয়ে এক অনন্য কাব্যভাষা নির্মাণ করেছিলেন আল মাহমুদ। কবিতার পাশাপাশি ছোটগল্প, উপন্যাস, প্রবন্ধ ও সাংবাদিকতার জগতে তাঁর ছিল দাপুটে উপস্থিতি।
শুধু সাহিত্য নয়, ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে স্বাধীনতা যুদ্ধ-পরবর্তী সময়েও তাঁর লেখায় ফুটে উঠেছে বাঙালির সংগ্রাম, আশা ও আত্মমর্যাদার চিত্র। ‘লোক লোকান্তর’, ‘কালের কলস’, ‘সোনালী কাবিন’—এসব কাব্যগ্রন্থ তাঁকে বাংলাসাহিত্যে শক্ত অবস্থানে প্রতিষ্ঠিত করে।
১৯৬৮ সালে তিনি বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার এবং ১৯৮৬ সালে একুশে পদকে ভূষিত হন। বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির পরিচালক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন আল মাহমুদ।
সাহিত্যের পাশাপাশি সাংবাদিকতা ও সম্পাদনায়ও রেখেছেন গভীর ছাপ। দৈনিক মিল্লাত, সাপ্তাহিক কাফেলা ও পরে দৈনিক গণকণ্ঠে তাঁর কাজ রাজনৈতিক এবং সাংস্কৃতিক চেতনাকে উজ্জীবিত করেছিল।
আল মাহমুদের রচনায় দেশজ শব্দচয়ন, গ্রামীণ জীবন, নারীর প্রতিচ্ছবি ও মানবিক আবেগের নিপুণ প্রকাশ তাকে পাঠকের হৃদয়ে স্থায়ী স্থান করে দেয়।
২০১৯ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি ঢাকার একটি হাসপাতালে কবি আল মাহমুদ শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। মৃত্যুর পরেও তাঁর সাহিত্যকর্ম পাঠক-সমালোচক ও গবেষকদের আলোচনায় সমানভাবে প্রাসঙ্গিক রয়ে গেছে।
কবি আল মাহমুদের ৯০তম জন্মদিন উপলক্ষে পৃথক আয়োজনে দিনটি পালন করবেন তাঁর ভক্ত-অনুরাগীরা। এ দিন বিকেল ৪টায় রাজধানীর আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে কবিকে ঘিরে আলোচনা, স্মরণ ও আবৃত্তি অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে।
কালের কলস ও কালের ধ্বনি আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে শিল্প-সাহিত্যের বিশিষ্ট ব্যক্তিরা উপস্থিত থাকবেন। একই দিন সকালে ময়মনসিংহ সাহিত্য সংসদ, ময়মনসিংহে আয়োজন করেছে ‘আমাদের আল মাহমুদ’ শীর্ষক সেমিনার।
শনিবার (১২ জুলাই) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এমবিএ ভবনে বিকেল ৪টায় কবিতা, স্মৃতিচারণ ও আড্ডার আয়োজন করা হয়েছে।
এমজেএফ