ঢাকা, মঙ্গলবার, ৩ ভাদ্র ১৪৩২, ১৯ আগস্ট ২০২৫, ২৪ সফর ১৪৪৭

ট্রাভেলার্স নোটবুক

সূর্যোদয়ের দৃশ্যপট কুয়াকাটায়

ইসমাইল হোসেন, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৫:১৯, জানুয়ারি ১৬, ২০১৭
সূর্যোদয়ের দৃশ্যপট কুয়াকাটায় সূর্যোদয়ের দৃশ্যপট কুয়াকাটায়- ছবি: মুশফিক সৌরভ

কুয়াকাটা থেকে: ‘কুয়াকাটায় সূর্যোদয়’ কথাটি নতুন নয়। তবে সূর্যোদয়ের পূর্ণাঙ্গ দৃশ্য দেখতে হলে যেতে হবে মূল সমুদ্র সৈকত থেকে প্রায় আট কিলোমিটার পূর্বে, গঙ্গামতির চর পেরিয়ে কাউয়ার চর। সেখান থেকেই দেখা মিলবে সূর্যোদয়।

কুয়াকাটা থেকে ভাড়া করা মোটরসাইকেলে বা যানবাহনে সৈকত ধরে এগোতে থাকলে মিলবে গঙ্গামতির চর, এরপর কাউয়ার চর। আগে থেকেই ঠিক করে রাখা মোটরসাইকেলে চেপে যেতে হবে সে জায়গায়।

প্রচণ্ড শীতের মধ্যে ভোর সাড়ে চারটায় আমাদের যাত্রা শুরু হয় কুয়াকাটা পর্যটন মোটেল থেকে। সৈকতের বেড়ি বাঁধ ধরে একটু এগিয়ে কুয়াকাটা ইকোপার্কের পাশ দিয়ে সৈকতে যেতে যেতে দেখা হলো আরও কয়েকটি মোটরসাইকেল, জিপ ও মাইক্রোবাস।

গঙ্গামতির চরে সূর্যোদয়ের দৃশ্য দেখার জন্য ভোর থেকে দর্শনার্থীরা অপেক্ষা থাকায় সেখানে বসেছে বেশ কয়েকটি খাবার দোকান, ডাব-পানীয়ের স্টল। সূর্যোদয় দেখতে এই স্থানেই ভিড় বেশি থাকে দর্শনার্থীদের।

তবে যারা বঙ্গোপসাগরের বুক থেকে পূর্ণাঙ্গ সূর্যোদয় দেখতে চান, তাদের যেতে হবে আরও প্রায় তিন কিলোমিটার। গঙ্গামতি খাল পেরিয়ে কাউয়ার চর। খালে নৌকার ওপর মোটরসাইকেল দিয়ে করতে হবে পারাপার।
সূর্যোদয়ের দৃশ্যপট কুয়াকাটায়- ছবি: মুশফিক সৌরভ
নির্ধারিত সময়ে সূর্যোদয় হওয়ার আগে থেকেই দুই পয়েন্টে ভিড় করছিলেন দর্শনার্থীরা। সাড়ে ৫টার পর পূর্ব দিগন্ত হতে থাকলো শুভ্র। একটু পর হালকা লাল, লাল আলোর রশ্মি ছড়িয়ে গেল ঊর্ধ্বাকাশে। অপেক্ষা সূর্যোদয় দেখার। ক্ষণে-ক্ষণে রঙ বদল হতে থাকলো পূর্বাকাশ। এরই মধ্যে আকাশে উড়তে থাকলো গাঙচিল।

নির্ধারিত সময়ে সূর্যোদয় হলেও কুয়াশার কারণে পূর্ণাঙ্গ সূর‌্য আরও পরে। সাতটার দিকে সাগরের বুকে দেখা গেল এক লাল বিন্দু, বলা যায় অর্ধেক। ধীরে তা রূপ নিলো থালার আকৃতি। আর তখন হাত তালি দিয়ে উঠলেন অভ্যাগত দর্শনার্থীরা।
 
সূর্যোদয়ের এই অপরূপ দৃশ্য ক্যামেরাবন্দি করতে ভুললেন না কেউই। ভিডিও করলেন কেউ কেউ। সাগরকন্যা কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকতে তিনদিন ব্যাপী ‘মেগা বিচ কার্নিভাল’ উপলক্ষ শত-শত দর্শনার্থীর উপস্থিতি আর সূর্যোদয়ের মনোমুগ্ধকর দৃশ্য সত্যিই অপরূপ।

ভৌগোলিক অবস্থানের কারণে শুধু সূর্যোদয় নয়, কুয়াকাটা এমনই একটি সৈকত যেখানে সূর্যাস্তও দেখা যায়। পৃথিবীর একমাত্র বাংলাদেশেই দু’টো দৃশ্যের দেখা মেলে। ভাড়া করা মোটরসাইকেলে ৫০০ টাকা দিয়ে কুয়াকাটা থেকে যে কেউই সূর্যোদয়ের দৃশ্যপট দেখতে যেতে পারবেন গঙ্গামতির চর বা কাউয়ার চর। পর্যটকদের মোটরসাইকেল চালকই নিয়ে যাবেন সেই নৈসর্গিক সৌন্দর‌্য দেখাতে।

বাংলাদেশ সময়: ১০৫৯ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৬, ২০১৭
এমআইএইচ/জিপি/টিআই

** সৈকতের আকর্ষণ লাল কাঁকড়া

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।