ঢাকা, মঙ্গলবার, ৩ ভাদ্র ১৪৩২, ১৯ আগস্ট ২০২৫, ২৪ সফর ১৪৪৭

পর্যটন

দড়ি থেরাপিকেও হার মানালো ছাগলের বুদ্ধিমত্তা!

আসিফ আজিজ, অ্যাসিসট্যান্ট আউটপুট এডিটর | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬:৩৪, মে ৩১, ২০১৮
দড়ি থেরাপিকেও হার মানালো ছাগলের বুদ্ধিমত্তা! দড়ি থেরাপিকেও হার মানালো ছাগলের বুদ্ধিমত্তা!

চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে: আম কেন্দ্র করে চাঁপাইনবাবগঞ্জে যে কত বিচিত্র ঘটনা ঘটে তা চোখে না দেখলে বিশ্বাস করা দায়। আমের বিষয়-বৈচিত্র্যের চাক্ষুষ সাক্ষী হতে তাই গন্তব্য ছিল কানসাট। শিবগঞ্জ উপজেলার এই ইউনিয়ন আবার বিশেষভাবে খ্যাত আমের জন্য।

অসহ্য গরমের জন্য রাজশাহীর দুর্নাম আগে থেকেই। সেই প্রচণ্ড গরমের মধ্যে গিয়ে কানসাটে নামতেই মুখ গোমড়া করে মেঘ ঘনিয়ে নেমে এলো শান্তির বৃষ্টি।

প্রবল বজ্রপাত ছাড়া তখন সবটাই প্রশান্তির। কিছুক্ষণ তাই রাস্তার পাশের একটি টংঘরে আশ্রয় নেওয়া।

মিনিট বিশেকের মধ্যেই বৃষ্টি থেমে উঠলো ঝলমলে রোদ। প্রকৃতিও যেন জাগলো নতুন করে। চারদিকে শুধু আম আর আম। গন্তব্য ছিল বালুচর গ্রাম। পুরো চাঁপাইয়ের মতো এখানেও আম গাছ ছাড়া অন্য কিছু চোখে পড়লো কম।
 
দু’পাশে বিস্তীর্ণ বাগান। মাঝ বরাবর চলে গেছে পিচঢালা মসৃণ সড়ক। ভ্যানগাড়িতে যেতে যেতে গরু, মহিষের পাশাপাশি দেখা মিললো অনেক ছাগল। কিন্তু একটি ছাগল চোখ আটকালো বিশেষভাবে। সামনের দুই পা উঁচু করে গাছের পাতা খাওয়া ছাগলের বিশেষ একটি দক্ষতা। কিন্তু সেই দক্ষতা কারও কারও জন্য ক্ষতিই বটে।

যেমন এই গ্রামের আমচাষিদের জন্য। গাছের কচি পাতা কিংবা আম পা উঁচিয়ে খেয়ে ফেলে এ অঞ্চলের ছাগল। আমপাতা আবার তাদের বিশেষ পছন্দ। চাঁপাইয়ের আমগাছে আবার অনেক ছোটবেলা থেকে আম ধরে। আর গাছ বড় হতে থাকলেও ডালপালা নেমে আসে নিচে। ছাগলে যেটি সহজে আয়ত্ত করতে পারে।
দড়ি থেরাপিকেও হার মানালো ছাগলের বুদ্ধিমত্তা!
বাগান মালিক বা চাষিরা আবার ছাগলের পাতা বা ফল খেয়ে ফেলা মোটেই সহ্য করতে পারেন না। ছাগলে খেলে সেই ডাল বা গাছ মরে যায় বলে এক ধরনের কুসংস্কারও প্রচলিত রয়েছে।
 
কিন্তু ছাগলের মালিক যাবেন কোথায়? চরানোর জন্য তাদের বাগানের মাঝের ঘাসের উপর নির্ভর করতে হয় অনেক সময়। ছেড়েও রাখা লাগে কখনও-সখনও। ছাড়া ছাগল অন্যের ক্ষতি করলে আবার শুনতে হবে গালমন্দ। তাই এক অভিনব পদ্ধতি আবিষ্কার করেছেন তারা।
 
ছাগলের গলার সঙ্গে পেছনের একটি পায়ে পেটের নিচ দিয়ে দড়ি বেঁধে ছেড়ে দেন এ অঞ্চলের অনেক মানুষ। এমনভাবে দড়ি বাঁধলে ছাগলটি স্বাভাবিকভাবে হাঁটতে পারে, কিন্তু কোনোভাবেই পা উঁচিয়ে উঁচু ডালে মুখ দিতে পারে না। আপাতদৃষ্টিতে বিষয়টি অমানবিকই বটে।
 
ওই ছাগলটিও সেটি পারছিলো না। তবে সে চালাক কম নয়। সমতল বাগান থেকে রাস্তার উুঁচু অংশে দাঁড়িয়ে তাকে দিব্যি পাতা খেতে দেখা গেলো। রাস্তার উচ্চতার সঙ্গে ডালের উচ্চতা কমে আসায় ছাগলটিরও দরকার হচ্ছিলো না পা উঁচু করে খাওয়ার। মালিকের কঠিন পদ্ধতিটিও বুদ্ধিবলে সহজ করে নিতে দেখা গেলো ছাগলটিকে। এতো বুদ্ধিমত্তার পরও বোকাদের কি সব সময় ছাগলের সঙ্গে তুলনা করা চলে!
 
বাংলাদেশ সময়: ২২৩১ ঘণ্টা, মে ৩১, ২০১৮
এএ
.

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।