ঢাকা, রবিবার, ২৯ ভাদ্র ১৪৩২, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২১ রবিউল আউয়াল ১৪৪৭

সারাদেশ

ডিসি সাওয়ারের উদ্যোগে

হকারমুক্ত করা হলো সিলেটের ক্বীন ব্রিজ 

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১:৪৭, সেপ্টেম্বর ১৩, ২০২৫
হকারমুক্ত করা হলো সিলেটের ক্বীন ব্রিজ  অভিযানে সিলেটের জেলা প্রশাসক মো. সারোয়ার আলমসহ অন্যরা।

অবশেষে হকারমুক্ত করা হলো সিলেট নগরের প্রবেশদ্বার সুরমার ওপর অবস্থিত ক্বীন ব্রিজ।

শনিবার (১৩ সেপ্টেম্বর) জেলা প্রশাসন ও সিলেট সিটি করপোরেশনের যৌথ উদ্যোগে ক্বীন ব্রিজ থেকে হকারদের উচ্ছেদের মাধ্যমে অভিযান শুরু হয়।



অভিযানে নেতৃত্ব দেন সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ রেজাই রাফিন সরকার ও সিলেটের জেলা প্রশাসক মো. সারোয়ার আলম। এ সময় উচ্ছেদ অভিযান তদারকিতে উপস্থিত ছিলেন সিলেট সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী।  

অভিযানকালে নগরবাসীর চলাচলের স্বার্থে সিলেটের ঐতিহ্যবাহী ক্বীন বিজ থেকে ভ্রাম্যমাণ ব্যবসায়ীদের সরিয়ে দেওয়া হয়। দক্ষিণ সুরমার যমুনা মার্কেটের সামনের অবৈধ স্থাপনাসহ বিভিন্ন সড়ক ও ফুটপাত থেকে অবৈধ স্থাপনা তাৎক্ষণিকভাবে উচ্ছেদ করা হয়।  

সিলেট নগরের সব সড়ক ও ফুটপাত থেকে অবিলম্ব অবৈধ ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও স্থাপনা নিজ উদ্যোগে সরিয়ে নিতে সংশ্লিষ্টদের অনুরোধ জানানো হয়। অন্যথায় নগরবাসীর নির্বিঘ্ন চলাচল নিশ্চিত করতে অবিলম্বে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হবে বলে জানানো হয়।

অভিযানকালে উপস্থিত ছিলেন সিলেট সিটি কর্পোরেশনের সচিব মো. আশিক নূর, প্রধান প্রকৌশলী (ভারপ্রাপ্ত) মো. আলী আকবর, প্রধান সম্পত্তি কর্মকর্তা বিশ্বজিত দেব, প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা মোহাম্মদ একলিম আবদীনসহ সিসিকের ও জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।  

গত বছরের ৫ আগস্টের পর থেকে সিলেট নগরে পায়ে হেঁটে পেরোনো ক্বীন ব্রিজ হকারদের দখলে চলে যায়। ফলে সড়কে পথচারিদের পায়ে হেটে চলা এবং মোটরসাইকেল ও বাইসাইকেলে চলাচল বিঘ্নিত হয়। এ পরিস্থিতিতে স্থানীয় প্রশাসন এ অভিযান শুরু করেছে।

সাবেক মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী জানান, ক্বীন ব্রিজকে যানজট মুক্ত রাখতে হকার উচ্ছেদ কার্যক্রম অত্যন্ত জরুরি। আমরা চাই এই এলাকায় সাধারণ মানুষের চলাচল স্বাভাবিক হোক।  
সিলেটের জেলা প্রশাসক মো. সারওয়ার আলম জানান, হকারদের পুনর্বাসন কার্যক্রম ১৫ দিনের মধ্যে সম্পন্ন করা হবে এবং উচ্ছেদ অভিযানকে শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন করতে সব ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
মঙ্গলবার জেলা প্রশাসকের গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে মতবিনিময়ের পর ক্বীন ব্রিজে মোটরসাইকেল চলাচল বন্ধ করার প্রস্তাব জানানো হলেও, দক্ষিণ সুরমার ২৫, ২৬ ও ২৭ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দাসহ বিভিন্ন স্তরের জনগণ এর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়ে স্মারকলিপি দেন।  

মোটরসাইকেল চলাচল বন্ধের প্রস্তাব বাতিলের দাবি জানিয়ে তারা বলেন, ক্বীন ব্রিজ সুরমার দুই তীরের মানুষের একটি গুরুত্বপূর্ণ যাতায়াত মাধ্যম। মোটরসাইকেল চলাচল বন্ধ হলে সাধারণ মানুষের জন্য চরম দুর্ভোগ সৃষ্টি হবে। স্মারকলিপি গ্রহণের পর জেলা প্রশাসক মো. সারওয়ার আলম স্থানীয় রাজনৈতিক ও পরিবহণ নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে তিনি ক্বীন ব্রিজে মোটরসাইকেল চলাচল আপাতত বন্ধ না করার সিদ্ধান্ত নেন।

গত শতাব্দীর তিরিশের দশকের কথা। আসাম প্রদেশের গভর্নর মাইকেল ক্বীন সিলেট সফরে আসেন। তার স্মৃতিকে অম্লান করে রাখতেই নামানুসারে সুরমার ওপর নির্মিত ব্রিজটির নামকরণ করা হয় ক্বীন ব্রিজ। মাইকেল ক্বীন ব্রিটিশ শাসনামলে ১৯৩২ থেকে ১৯৩৭ সাল পর্যন্ত আসামের ইংরেজ গভর্নর ছিলেন।  সে সময়ে সিলেট শহরের প্রবেশদ্বার সুরমা নদীর ওপর পদচারীদের চলাচলে লোহার আর্চ দিয়ে তৈরি হয় ১৮ ফুট প্রস্থ ও এক হাজার ১৫০ ফুট দৈর্ঘ্যের এই ব্রিজ। ১৯৩৩ সালে র নির্মাণকাজ শুরু হয় এবং ১৯৩৬ সালে চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হয়।

এনইউ/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।