ঢাকা, শনিবার, ২৮ ভাদ্র ১৪৩২, ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২০ রবিউল আউয়াল ১৪৪৭

সারাদেশ

জমির বিরোধে চাচাকে হত্যা, ভাতিজাসহ ২ জনকে কুপিয়ে আহত

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০:৪৪, সেপ্টেম্বর ১২, ২০২৫
জমির বিরোধে চাচাকে হত্যা, ভাতিজাসহ ২ জনকে কুপিয়ে আহত নিহত বাবুল ব্যাপারী

বরিশাল: বরিশালের মুলাদীতে প্রকাশ্য দিবালোকে কৃষক বাবুল বেপারীকে (৫৫) কুপিয়ে একটি হাত ও পা বিচ্ছিন্ন করে হত্যা করা হয়েছে। এ সময় নিহতের ভাই ছালাম বেপারীর ছেলে (ভাতিজা) আলীম বেপারী ও ফেরদৌস বেপারীরর স্ত্রী রেশমা বেগমকে কুপিয়ে-পিটিয়ে গুরুতর আহত করার ঘটনা ঘটেছে।

শুক্রবার (১২ সেপ্টেম্বর) বিকেলে মুলাদী উপজেলার সদর ইউনিয়নের দড়িচর-লক্ষীপুর গ্রামের কাঠেরপুল এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

নিহত বাবুল বেপারী (৫৫) দড়িচর-লক্ষীপুর গ্রামের মৃত গহর আলি বেপারীর ছেলে।

অপরদিকে নিহত বাবুল বেপারীর ভাতিজা আলিম বেপারী ও রেশমা বেগমকে মুমূর্ষু অবস্থায় বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

হতাহতদের স্বজনরা জানান, শুক্রবার বিকেলে কাঠের পুলে দাঁড়ানো ছিলেন আলিম বেপারী। এ সময় প্রতিপক্ষ করিম মল্লিক ও তার ছেলে ইউসুফ মল্লিক, রফিক মল্লিক, তামিম মল্লিক ও ইয়াসিন মল্লিক ধারালো অস্ত্র নিয়ে তার ওপর হামলা করে। ভাতিজাকে উদ্ধার করতে এগিয়ে গেলে বাবুল বেপারীকেও নির্মমভাবে কোপানো হয়। হামলাকারীরা চলে যাওয়ার পর গুরুতর আহত বাবুলকে নিয়ে বরিশাল শের-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রওনা দেন স্বজনরা। কিন্তু পথেই তার মৃত্যু ঘটে।

হত্যার বিষয়টি নিশ্চিত করে মুলাদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শফিকুল ইসলাম জানান, পার্শ্ববর্তী কাজিরহাট থানাধীন চরের জমি নিয়ে নিহত বাবুল বেপারী ও তার স্বজনদের সঙ্গে প্রতিপক্ষ করিম মল্লিক ও তাদের স্বজনদের অর্থাৎ দুটি বংশের মধ্যে বিরোধ চলে আসছিল। এ নিয়ে আগেও বহুবার সালিশ বৈঠকও হয়েছে, তবে কোনো সুরাহা কেউ করতে পারেনি। সর্বশেষ শুক্রবার বিকেলে দুই গ্রুপের মধ্যে মুলাদী থানাধীন এলাকায় দুই গ্রুপের মধ্যে মারামারি ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে বাবুল বেপারী নিহত হন এবং তার দুই স্বজন গুরুতর আহত হন। তাদেরকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

বাবুল বেপারীকে হত্যার ঘটনায় যারা জড়িত রয়েছেন, তাদের গ্রেপ্তারে অভিযান চালানো হচ্ছে বলে জানিয়েছেন ওসি।

এদিকে আহত আলীম বেপারী জানান, তার চাচাসহ তিনি ২০১৮ সালের নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থীর পক্ষে কাজ করেন। এ কারণে তাদের ওপর ক্ষিপ্ত হয়ে আওয়ামী লীগ কর্মী করিম মল্লিক বাড়ি-ঘর পুড়িয়ে দেয়। ওই ঘটনায় করিম মল্লিকসহ ১০ জনকে আসামি করে মামলা করলে বিরোধ হয়। এছাড়া দড়িচরলক্ষ্মীপুর এলাকায় একটি জমি নিয়ে করিম মল্লিক ও তার লোকজনের সঙ্গে বিরোধ রয়েছে।

তিনি বলেন, ওই বিরোধের জেরে শুক্রবার বিকেল ৪টার দিকে করিম মল্লিক (৬০), ইউসুফ মল্লিক (৩৫), রফিক মল্লিক (৩২), শফিক মল্লিক (৩০), তামিম মল্লিক (২৮), ইয়াসিন মল্লিকসহ (২৬) ১২-১৫জন আওয়ামী লীগ-যুবলীগ কর্মীরা দেশীয় অস্ত্র নিয়ে হামলা করে। তারা তাকে (আলীম) ও চাচা বাবুলকে কুপিয়েছে। এতে চাচার বাম হাত ও পা শরীর থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। তাদের ডাক-চিৎকারে তার স্ত্রী হাচিনা বেগম ও ভাইয়ের স্ত্রী রেশমা বেগম এগিয়ে গেছে তাদেরও পিটিয়ে এবং কুপিয়ে আহত করেছে। এ ঘটনায় মামলা করা হবে।

যদিও মুলাদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শফিকুল ইসলাম জানান, এ ঘটনার সঙ্গে রাজনৈতিক কোনো বিষয় জড়িত নয়। প্রাথমিক তদন্তে জমি-জমা সংক্রান্ত বিরোধের বিষয়টিই সামনে এসেছে।

 এমএস/জেএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।