ঢাকা, বুধবার, ২৬ ভাদ্র ১৪৩২, ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১৭ রবিউল আউয়াল ১৪৪৭

সারাদেশ

ডাকসু নির্বাচনে স্বৈরাচার-রাজাকার একাকার: সালেহ প্রিন্স

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭:২৪, সেপ্টেম্বর ১০, ২০২৫
ডাকসু নির্বাচনে স্বৈরাচার-রাজাকার একাকার: সালেহ প্রিন্স বক্তব্য দিচ্ছেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স

ময়মনসিংহ: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনে স্বৈরাচার আর রাজাকার একাকার হয়ে গেছে মন্তব্য করেছেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স।

তিনি বলেছেন, ছাত্র-জনতা হত্যার রক্তে রঞ্জিত স্বৈরাচারের হাতে হাত মিলিয়েছে জামায়াত।

তবে এই সখ্যতা নতুন নয়, ১৯৮৬ সালেও আওয়ামী লীগের সঙ্গে জামায়াত হাত মিলিয়ে আরেক স্বৈরাচার এরশাদকে বৈধতা দিয়েছিল। যাদের হাতে জামায়াতের নেতাদের রক্ত, যারা গত ১৫ বছরে তাদের নেতাদের ফাঁসি দিয়েছে, তাদের সঙ্গেই ক্ষমতার লোভে হাত মিলিয়েছে জামায়াত।

বুধবার (১০ সেপ্টেম্বর) দুপুর সোয়া ২টার দিকে ময়মনসিংহ নগরীর জেলা পরিষদ সভাকক্ষে উত্তর জেলা মহিলা দল আয়োজিত সংগঠনের ৪৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে সালেহ প্রিন্স এ কথা বলেন।

বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব বলেন, ছাত্রশিবির কোনোভাবেই ডাকসুতে সাধারণ ছাত্র-ছাত্রীদের ভোটে জয়লাভ করতে পারে না। প্রায় ৮০ শতাংশ ভোট কাস্ট হয়েছে, যাতে ছাত্রলীগের ভোটও কাস্ট হয়েছে। এই ছাত্রলীগের ভোট গেল কার পকেটে? এটা অনুসন্ধান করলেই শিবিরের বিজয় কীভাবে হলো, তা সহজেই অনুমান করা যায়।

সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স বলেন, দিল্লীতে বসে শেখ হাসিনা বাংলাদেশের গণতন্ত্রের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছেন। পত্রিকায় দেখলাম, দিল্লীতে বসে তার আমলে সুবিধা নেওয়া শিল্প মালিকদের কাছ থেকে শেখ হাসিনা হাজার হাজার কোটি টাকা নিচ্ছেন। দেশের গণতন্ত্র ও আগামী নির্বাচন নস্যাৎ করতে সেই টাকা ব্যবহার হচ্ছে। সেই টাকার উত্তাপ বাংলাদেশে দেখা যাচ্ছে। গতকাল ডাকসু নির্বাচনেও সেই টাকার প্রভাব ছিল কি না, সেটা প্রশ্ন থেকে যায়।

তিনি বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কোনো বিচ্ছিন্ন দ্বীপ নয়। এটি মুক্তচিন্তা ও মুক্তবুদ্ধির সূতিকাগার। মুক্তিযুদ্ধ, নব্বইয়ের গণঅভ্যুত্থান এবং চব্বিশের গণঅভ্যুত্থানে এই বিশ্ববিদ্যালয় অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছে। চিন্তার বিষয়, এই বিশ্ববিদ্যালয়ে কীভাবে মুক্তচিন্তা ও মুক্তবুদ্ধির বিরোধীরা বিজয়ী হলো? এই নির্বাচনে স্বৈরাচার আর রাজাকার একাকার হয়ে গেছে। এটা বিজয় নয়, ছাত্র-জনতার বিজয় কেড়ে নেওয়া হয়েছে। ডাকসুর নির্বাচন গভীর ষড়যন্ত্রের ফল, যা আমরা অনুমান করেছিলাম কিন্তু ব্যর্থ করতে পারিনি। এটা আমাদের ব্যর্থতা, অস্বীকার করব না।

সভায় বিএনপির নেত্রীকে আপোষহীন উল্লেখ করে সালেহ প্রিন্স বলেন, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া অসংখ্য নির্যাতন সহ্য করেও ফ্যাসিবাদের কাছে মাথা নত করেননি। শেখ হাসিনা তাকে হত্যা করতে চেয়েছিলেন। এক কাপড়ে বাড়ি থেকে বের করে দিয়েছিলেন। কিন্তু নিয়তির নির্মম পরিহাস, শেখ হাসিনা শুধু বাড়ি থেকেই নয়, দেশ থেকেও বিতাড়িত হয়েছেন। আজ তিনি দিল্লীতে পলাতক জীবনযাপন করছেন।

আলোচনা সভায় উত্তর জেলা মহিলা দলের সভাপতি তানজিল চৌধুরী লিলির সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক হোসনে আরা নিলুর সঞ্চালনায় প্রধান বক্তা ছিলেন বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক শাহ ওয়ারেস আলী মামুন।  

বিশেষ বক্তা হিসেবে বক্তব্য দেন সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আবু ওয়াহাব আকন্দ ওয়াহিদ।

বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন উত্তর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক এনায়েত উল্লাহ কালাম, যুগ্ম আহ্বায়ক মোতাহার হোসেন তালুকদার।  

এছাড়া উপস্থিত ছিলেন গৌরীপুর উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব হাফেজ আজিজুল হক, মহানগর যুবদলের সভাপতি মোজাম্মেল হক টুটু, উত্তর জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি সাইফুল ইসলাম কামাল, জেলা ছাত্রদলের সভাপতি নূরুজ্জামান সোহেল, মৎস্যজীবী দলের আহ্বায়ক হযরত আহমেদ শাকিল প্রমুখ।

এদিকে মহিলা দলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে নগরীর নতুন বাজারস্থ দলীয় কার্যালয়ে জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলনের পর একটি বর্ণাঢ্য র‌্যালি বের করা হয়। র‌্যালিটি নগরীর কাচারি সড়ক হয়ে জেলা পরিষদ মিলনায়তন প্রাঙ্গণে গিয়ে শেষ হয়। এতে উত্তর জেলার হালুয়াঘাট, ধোবাউড়া, ফুলপুর, তারাকান্দা, গৌরীপুর, ঈশ্বরগঞ্জ ও নান্দাইল উপজেলার মহিলা দলের বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী অংশ নেন।

এ সময় একজন শিশু সমর্থক নিজেকে বেগম খালেদা জিয়ার সাজে সজ্জিত করে র‌্যালিতে অংশ নিয়ে হাত নেড়ে নেতাকর্মীদের শুভেচ্ছা জানায়। পরে কেক কেটে অনুষ্ঠানের সমাপ্তি হয়।

এসআরএস
 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।