বাসচালক গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে সিলেট, মৌলভীবাজার ও হবিগঞ্জ জেলার মধ্যে চলাচলকারী আন্তঃজেলা বাস চলাচল বন্ধ করে দিয়েছেন পরিবহন শ্রমিকরা।
রোববার (৩ আগস্ট) দুপুর থেকে হবিগঞ্জ-সিলেট, মাধবপুর-সিলেট ও হবিগঞ্জ-মৌলভীবাজার-সিলেট রুটে এই অঘোষিত ধর্মঘট শুরু হয়।
এই তিনটি রুটে প্রতিদিন প্রায় ৯৫টি বাস চলাচল করে। যাতায়াত করেন কয়েক হাজার যাত্রী। ধর্মঘটের কারণে দুপুর থেকেই টার্মিনালে গিয়ে যাত্রীরা বাস না পেয়ে ফিরে যাচ্ছেন।
বিকেল ৪টার দিকে হবিগঞ্জ বাস টার্মিনালে দেখা যায়, বিভিন্ন স্থানে এলোমেলোভাবে বাস দাঁড়িয়ে আছে। যাত্রীদের ভিড়, হতাশা আর ফিরে যাওয়ার চিত্র চোখে পড়ে। কেউ কেউ ছোট যানবাহন ভাড়া করে সিলেটের উদ্দেশে রওনা দিচ্ছেন।
লাখাই থেকে শিশু সন্তানসহ হবিগঞ্জে আসা নুরুল মিয়া ও খাদিজা আক্তার দম্পতি বাস না পেয়ে ফিরে যান। ক্ষুব্ধ নুরুল বলেন, “আগে জানলে আসতাম না। এখন বাচ্চা নিয়ে বিপদে পড়লাম। ”
একই অভিজ্ঞতা চিকিৎসক মঈনুল হাসান শাকিলের। তিনি বলেন, “জরুরি কাজে ভাগ্নেকে সিলেট পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু বাস না পেয়ে ফেরত এসেছে। সময়মতো না পৌঁছাতে কাজটাই নষ্ট হলো। ”
টার্মিনালে কর্মরত নয়ন মিয়া জানান, দুপুর থেকে বিকেল পর্যন্ত কয়েকশ যাত্রী টার্মিনালে এসে বাস না পেয়ে ফেরত গেছেন।
এই ধর্মঘটের বিষয়ে হবিগঞ্জ মোটর মালিক গ্রুপের সাধারণ সম্পাদক আবু মঈন চৌধুরী সোহেল বাংলানিউজকে বলেন, “গত পরশু কণকপুরে আমাদের একটি বাসের সঙ্গে সংঘর্ষে এক অটোরিকশা যাত্রী মারা যান। কিন্তু পুলিশ দুর্ঘটনায় জড়িত চালক না পেয়ে আরেকটি বাসের চালক মান্না দেবকে গ্রেপ্তার করে। বিষয়টি জানানো সত্ত্বেও পুলিশ অতি উৎসাহী হয়ে নিরপরাধ চালককে ধরেছে। ”
এ ঘটনার প্রতিবাদে সিলেট পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়ন ও হবিগঞ্জ মটর মালিক গ্রুপ অনির্দিষ্টকালের জন্য ধর্মঘটের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
তিনি আরও বলেন, “রোববার সকাল ১১টা থেকে সিলেট টার্মিনাল থেকে কোনো বাস ছাড়েনি, ঢোকেওনি। নিরপরাধ চালক মুক্তি না পাওয়া পর্যন্ত এই কর্মসূচি চলবে। ”
মোটর মালিক গ্রুপের হিসেবে, হবিগঞ্জের ৯৫টি বাসের সঙ্গে কয়েকশ’ শ্রমিক জড়িত। এতে একদিনে প্রায় ৩০ লাখ টাকার ক্ষতি হবে।
আরএ