গাজীপুর: প্রায় এক বছর আগে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে গাজীপুর মহানগরের কোনাবাড়ী থানার পাশে পুলিশের গুলিতে নিহত কলেজছাত্র হৃদয়ের (২০) মরদেহ উদ্ধারে তুরাগ নদে অভিযান চালিয়েছে ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল।
গত বছরের ৫ আগস্ট বিকেলে গাজীপুর মহানগরের কোনাবাড়ী থানার পাশে কাশিমপুর রোডে হৃদয়কে পুলিশ গুলি করে।
নিহত হৃদয় (২০) টাঙ্গাইলের গোপালপুর থানার আলমগর এলাকার লাল মিয়ার ছেলে। তিনি স্থানীয় একটি ডিগ্রি কলেজে একাদশ শ্রেণির ছাত্র ছিলেন। লেখাপড়ার পাশাপাশি কোনাবাড়ী এলাকায় বসবাস করে অটোরিকশা চালাতেন হৃদয়। এ ঘটনায় নিহতের ফুফাতো ভাই মো. ইব্রাহীম বাদী হয়ে কোনাবাড়ী থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। এছাড়া আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে একটি মামলা দায়ের করা হয়।
এ ঘটনায় গাজীপুর মেট্রোপলিটনের কোনাবাড়ী থানায় হত্যা মামলার তদন্ত কর্মকর্তা গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের পরিদর্শক সাইফুল ইসলাম জানান, এ ঘটনায় এক প্রাইভেটকারচালককে আটক করা হয়। পরে প্রাইভেটকারচালক জানান নিহত হৃদয়ের মরদেহ কড্ডা ব্রিজ থেকে তুরাগ নদে ফেলে দেওয়া হয়। তার কথার ভিত্তিতে টঙ্গী ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল গাজীপুর মহানগরের কড্ডা বাজার এলাকায় তুরাগ নদে মরদেহ উদ্ধারের চেষ্টা করছে। দুপুর ২টা পর্যন্ত নিহতের মরদেহের কোনো সন্ধান পাওয়া যায়নি।
এ সময় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্তকারী টিম, ফায়ার সার্ভিস, গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ ও গোয়েন্দা পুলিশের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
পুলিশ জানায়, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় গাজীপুর মহানগরের কোনাবাড়ী থানার পাশে কাশিমপুর সড়কে ৫ আগস্ট সরকারের বিরুদ্ধে বিভিন্ন দাবিতে স্লোগান দেন কলেজছাত্র হৃদয়। এ সময় কয়েকজন পুলিশের উপস্থিতি দেখতে পেয়ে হৃদয় রাস্তার পাশে অবস্থান নেন। ওই সময় কিছু পুলিশ সদস্য হৃদয়কে রাস্তার পাশ থেকে ধরে নিয়ে চড়-থাপ্পড় মারে। একপর্যায়ে এক পুলিশ সদস্য অতিউৎসাহী হয়ে হৃদয়কে গুলি করেন। এতে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। ওই ঘটনায় নিহতের ফুফাতো ভাই মো. ইব্রাহীম বাদী হয়ে কোনোবাড়ী থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। এ ঘটনায় এ পর্যন্ত ১১ জনকে আটক করা হয়েছে।
জানা গেছে, এ মামলায় আগামী ১৭ আগস্ট তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।
গাজীপুর ফায়ার সার্ভিসের উপ-সহকারী পরিচালক আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, কড্ডা বাজার এলাকায় তুরাগ নদে প্রচুর স্রোতের মধ্যে নিহতের মরদেহ সন্ধানে চেষ্টা চালায়। বেলা আনুমানিক ১১টা থেকে দুপুর আড়াইটা পর্যন্ত নিহতের মরদেহের কোনো সন্ধান পাওয়া যায়নি। আপাতত উদ্ধার কাজ বন্ধ রাখা হয়েছে।
আরএস/আরআইএস