ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ৮ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২, ২২ মে ২০২৫, ২৪ জিলকদ ১৪৪৬

সারাদেশ

পঞ্চগড়ে বড়বাড়ি সীমান্তে শিশুসহ ২১ জনকে পুশ ইন 

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২:২০, মে ২২, ২০২৫
পঞ্চগড়ে বড়বাড়ি সীমান্তে শিশুসহ ২১ জনকে পুশ ইন 

পঞ্চগড়ের সদর উপজেলায় জয়ধরভাঙ্গা বড়বাড়ি সীমান্ত দিয়ে নারী-পুরুষ ও শিশুসহ ২১ জনকে পুশ ইন করেছে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)।  

বৃহস্পতিবার (২১ মে) ভোর ৪টার দিকে নীলফামারী ৫৬ বিজিবি ব্যাটালিয়নের দায়িত্বপূর্ণ এলাকা উপজেলার হাড়িভাসা ইউনিয়নের বড়বাড়ি সীমান্তের মেইন পিলার ৭৫৭ এর ১০ নম্বর সাব পিলার এলাকা দিয়ে তাদের বাংলাদেশে পুশ ইন করা হয়।

এদের মধ্যে ছয়জন নারী, দুইজন পুরুষ ও ১৩ জন শিশু রয়েছে।  পরে পুশ ইন করা সবাইকে জয়ধরভাঙ্গা বিওপির টহল দল আটক করে। তারা বাংলাদেশি নাগরিক বলে জানা গেছে।

বৃহস্পতিবার (২২ মে) সকালে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন নীলফামারী-৫৬ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক শেখ মোহাম্মদ বদরুদোজা।

আটকরা হলেন- খুলনা জেলার দিঘলিয়া উপজেলার আমবাড়িয়া ইউনিয়নের মাজিরগাতি এলাকার ইসরাইল ফকির স্ত্রী আলেয়া (৫৫), তার ছেলে রব্বিল ফকির (২২), পুত্রবধূ শিমলা (১৯), নাতনি আলিশা (৩), নাতি আয়ান (৩ মাস), একই এলাকার ইব্রাহিম ফকিরের স্ত্রী হেলেনা (২৭), মেয়ে রোজিনা (৮), ছেলে ইসমাইল (৫), উপজেলার গাজির হাট ইউনিয়নের গাজির হাট এলাকার ফরহাদ শেখের স্ত্রী স্বপ্না (২৯), মেয়ে ফারজানা (১২), আফসানা (৯), মরিয়ম (৩), নড়াইলের কালিয়া উপজেলার বাবরা হাচলা ইউনিয়নের কাঞ্চনপুর এলাকার আশিক সরদারের স্ত্রী রোজি (৩৯), তার ছেলে রানা (১৭), মেয়ে আয়েশা (৪), একই এলাকার আজির স্ত্রী শিমা (৩০), মেয়ে কুলসুম (১০), ছেলে রহমান (৬), রেহমান (৫), মেয়ে আফরিন (৩) এবং ছেলে রেহমাত আলী (২)।

জানা গেছে আটকদের মধ্যে ছয়জন নারী ও একজন পুরুষের বিরুদ্ধে বিজিবির পক্ষ থেকে সদর থানায় পাসপোর্ট আইনে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।

আটক ব্যক্তিদের জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, তারা দীর্ঘদিন ধরে ভারতে অবৈধভাবে অবস্থান করে কাজ করছিলেন। গত ২১ মে ভারতীয় পুলিশ তাদের গুজরাট এলাকা থেকে আটক করে উড়োজাহাজে কলকাতা নিয়ে আসে। পরে কলকাতা থেকে বাসে করে রাত ২টায় নিয়ে এসে বিএসএফের ৯৩ ব্যাটালিয়নের টিয়াপাড়া বিএসএফ ক্যাম্পের কাছে হস্তান্তর করে। এসময় তাদের টিয়াপাড়া বড়বাড়ি সীমান্ত গেট দিয়ে বাংলাদেশে পুশ ইন করে।

আটক অবস্থায় কথা হয় আলেয়া বেগমের সঙ্গে। তিনি বাংলানিউজকে বলেন, ভারতে গৃহকর্মী হিসেবে কাজ করে আসছিলাম। এর মাঝে পুলিশ আমাদের ধরে নিয়ে প্রথমে উড়োজাহাজে ও বাসে করে সীমান্তে এনে ছেড়ে দেয়। আমরা জায়গা না চিনতে পেরে ঘোরাফেরা করার সময় বিজিবি আটক করে।

একই কথা বলেন, আটক স্বপ্না। তিনি বাংলানিউজকে বলেন, আমার স্বামী ভারতে ভাঙারির দোকানে কাজ করতেন। আর আমি বাড়িতে থাকতাম। এর মাঝে আমাদের আটক করে বাংলাদেশে পাঠিয়ে দেওয়া হয়।

এ বিষয়ে নীলফামারী-৫৬ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক শেখ মোহাম্মদ বদরুদোজা বাংলানিউজকে বলেন, ঘটনার পর আমরা বিএসএফের সঙ্গে পতাকা বৈঠক করেছি। এ সময় বিএসএফ পুশ ইনের বিষয়টি অস্বীকার করেছে। আমরা তারপরেও প্রতিবাদ জানিয়েছে। এ ঘটনায় আইনি প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে। একই সঙ্গে সীমান্তে বিজিবি সর্বদা সচেতন আছে। যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবিলায় বিজিবির টহল দল ২৪ ঘণ্টা সীমান্তে কড়া টহলদারি করছেন বলেও জানান তিনি।

পঞ্চগড় সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি, তদন্ত) এইচএসএম সোহরাওয়ার্দী বাংলানিউজকে বলেন, হাড়িভাসা ইউনিয়নের সীমান্ত এলাকা থেকে ২১ জনকে আটক করেছে বিজিবি। পরে তাদের পঞ্চগড় সদর থানায় হস্তান্তর করে। তাদের বিরুদ্ধে বিজিবির অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।

আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।