‘জুলাই সনদ' বাস্তবায়নের দায়িত্ব যখন রাষ্ট্র গ্রহণ করেছে, তখন তা নিয়ে কারও শঙ্কার কিছু নেই বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য এজেডএম জাহিদ হোসেন।
শুক্রবার (১৭ অক্টোবর) শেরেবাংলা নগরে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা ও প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের কবরে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানানোর পর সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ মন্তব্য করেন।
তিনি বলেন, “দেশের মানুষ—আবু সাঈদ বলেন, মুগ্ধ বলেন—গত ১৫ বছর ধরে নিরন্তর আন্দোলন চালিয়ে গেছে। গুম, শহীদ—সবকিছু মিলিয়ে যদি আমরা ৩৬ জুলাইয়ের ঘটনাকে দেখি, এটি মূলত গত ১৫ বছরের ধারাবাহিক আন্দোলনের চূড়ান্ত রূপ। ছাত্র ও জনতার মিলিত গণঅভ্যুত্থানে স্বৈরাচার পতন ঘটেছে, পদত্যাগ করতে বাধ্য হয়েছে। এখন দেশের মানুষ উন্মুখ হয়ে আছে জুলাই সনদ স্বাক্ষর অনুষ্ঠানের দিকে—কি আছে সেই সনদে, কারা যাচ্ছেন, কারা যাচ্ছেন না, এবং এটি কিভাবে বাস্তবায়িত হবে—এসব নিয়েই আগ্রহ। ”
জাহিদ হোসেন আরও বলেন, “আমি মনে করি, সনদ বা কোনো সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন নিয়ে কারও মনে শঙ্কা বা ভীতির কোনো কারণ নেই যে এটি ভবিষ্যতে বাস্তবায়িত হবে না। ”
রাষ্ট্র সংস্কারের অংশ হিসেবে শুক্রবার বিকাল ৪টায় জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় রাজনৈতিক দলগুলোর অংশগ্রহণে ‘জুলাই জাতীয় সনদে’ স্বাক্ষর অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকবেন প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা এবং আমন্ত্রিত অতিথিরা।
এ সনদ স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া এবং ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকেও আমন্ত্রণ জানিয়েছেন ঐকমত্য কমিশনের চেয়ারম্যান ও প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস।
অধ্যাপক জাহিদ বলেন, “এখন জাতীয় সংসদ না থাকলেও প্রেসিডেন্সিয়াল অর্ডারে অনেক সিদ্ধান্ত জারি হচ্ছে, যেগুলো পরবর্তী সংসদে রেটিফিকেশনের প্রয়োজন হবে। ”
এর আগে ডিপ্লোমা অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ডি-ম্যাব) নবগঠিত আহ্বায়ক কমিটির আহ্বায়ক শহিদুল্লাহ সিদ্দিকীর নেতৃত্বে নেতাদের নিয়ে জিয়াউর রহমানের কবরে ফুল দেন অধ্যাপক জাহিদ। পরে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন তিনি।
এনসিপির জুলাই সনদে স্বাক্ষর না করার সিদ্ধান্ত নিয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, “আমরা দেখেছি প্রায় আট মাস ধরে জাতীয় ঐক্যমত্য কমিশন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে মতবিনিময় ও আলোচনা চালিয়েছে। আজ বিকালে প্রধান উপদেষ্টা মহোদয়ের আমন্ত্রণে সেই প্রক্রিয়ার চূড়ান্ত পর্ব অনুষ্ঠিত হবে, যেখানে সব রাজনৈতিক দল, পেশাজীবী, দেশি-বিদেশি প্রতিনিধি অংশ নেবেন। ”
তিনি আরও বলেন, “আমরা পত্রিকায় ও সামাজিক মাধ্যমে দেখেছি, একটি দল (এনসিপি) অংশগ্রহণ করবে না বলেছে। তবে তারা এটাও জানিয়েছে যে, পরবর্তীতে যদি ডাকা হয়, তখন তারা যোগ দিতে পারে এবং চাইলে স্বাক্ষরও করতে পারে। অর্থাৎ তারা পুরোপুরি আসছে না—ঘটনাটা তেমন নয়। তাদের কিছু দাবি ও বাস্তবতার মধ্যে হয়তো অমিল আছে। রাজনৈতিক দল হিসেবে তারা স্বাধীনভাবে যে কোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারে। ”
এসবিডব্লিউ/জেএইচ