ঢাকা, রবিবার, ৯ ভাদ্র ১৪৩২, ২৪ আগস্ট ২০২৫, ০০ রবিউল আউয়াল ১৪৪৭

রাজনীতি

ডাকসু নির্বাচনের সময় পরীক্ষা স্থগিতের দাবি

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫:২৯, আগস্ট ২৪, ২০২৫
ডাকসু নির্বাচনের সময় পরীক্ষা স্থগিতের দাবি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিনের সামনে প্রতিরোধ পর্ষদ প্যানেলের সংবাদ সম্মেলন

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচন উপলক্ষে ৫ থেকে ১১ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত পরীক্ষা স্থগিতের দাবি জানিয়েছে ‘প্রতিরোধ পর্ষদ’। এ ছাড়াও আরও পাঁচ দফা দাবি জানিয়েছে বামপন্থি কয়েকটি ছাত্র সংগঠন সমর্থিত এই প্যানেল।

রোববার (২৪ আগস্ট) দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিনের সামনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব দাবি তুলে ধরেন ডাকসু নির্বাচনের প্রার্থীরা।

লিখিত বক্তব্যে প্রতিরোধ পর্ষদ থেকে মুক্তিযুদ্ধ ও গণতান্ত্রিক আন্দোলন বিষয়ক সম্পাদক পদপ্রার্থী সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার আহ্বায়ক মোজাম্মেল হক বলেন, আসন্ন ডাকসু নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সম্প্রতি কিছু ঘটনা আমাদের মধ্যে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। এই বিষয়ে প্রশাসন এবং নির্বাচন কমিশনকে অবগত করেছি। আমরা নির্বাচন কমিশনকে অবগত করেছি। আমরা নির্বাচন কমিশন বরাবর স্মারকলিপি জমা দিয়েছি।

তিনি আরও বলেন, দীর্ঘদিন পর ডাকসু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। আসন্ন নির্বাচনকে ঘিরে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী এবং ছাত্র সংগঠনগুলোর মধ্যে বেশ উৎসাহ-উদ্দীপনা দেখা যাচ্ছে। এটি আমাদের গণতান্ত্রিক চর্চাকে এগিয়ে নেওয়ার একটি গুরুত্বপূর্ণ সুযোগ। তবে ইতোমধ্যে নানা অনিয়ম, প্রশাসনিক সীমাবদ্ধতা ও শঙ্কা শিক্ষার্থীদের মধ্যে উদ্বেগ সৃষ্টি করছে। এই প্রেক্ষাপটে, ডাকসু নির্বাচনকে স্বচ্ছ, অংশগ্রহণমূলক এবং সর্বজন গ্রহণযোগ্য করতে অবিলম্বে কয়েকটি পদক্ষেপ নেওয়া অত্যন্ত জরুরি।

‘প্রতিরোধ পর্ষদ প্যানেলের দাবিগুলো হলো—
১। অপরাধে সম্পৃক্তদের প্রার্থিতা বাতিল: যেসব ব্যক্তি অতীতে শিক্ষার্থী নিপীড়ন, বিভিন্ন গণতান্ত্রিক আন্দোলনে হামলাসহ অন্যান্য ফৌজদারি অপরাধ বা গুরুতর অনিয়মে সম্পৃক্ত, তাদের প্রার্থিতা বাতিল করতে হবে। এটি নির্বাচনকে গ্রহণযোগ্য করে তুলবে। একে মজবুত নৈতিক ভিত্তির ওপর দাঁড় করাবে।

২. ভোটকেন্দ্রের সংখ্যা বৃদ্ধি ও স্থানান্তর: বর্তমান কেন্দ্রসংখ্যা সীমিত হওয়ায় শিক্ষার্থীদের ভোটাধিকার প্রয়োগে ভোগান্তির আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। তাই ভোটকেন্দ্র বাড়ানোর উদ্যোগ নেওয়া জরুরি। এ ছাড়া আবাসিক হলগুলোর নিকটবর্তী ভবনে ভোটকেন্দ্র স্থাপন করতে হবে, যাতে শিক্ষার্থীরা সহজে ভোট দিতে পারেন।

৩. পরীক্ষা সাময়িক স্থগিত: নির্বাচনের আগ মুহূর্তে বা পরপরই পরীক্ষা থাকায় অনেকের নির্বাচনী কর্মকাণ্ড ব্যাহত হচ্ছে। এক্ষেত্রে ৫-১১ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সকল পরীক্ষা স্থগিত রেখে কেবল ক্লাস চালু রাখতে হবে। এর ফলে প্রার্থীরা পড়াশোনা ও নির্বাচনের মধ্যে কোনো একটিকে বেছে নিতে বাধ্য হবেন না। আর ভোটাররা যথাযথভাবে প্রার্থীদের যাচাই-বাছাইয়ের সময় পাবেন।

৪. আচরণবিধি কঠোরভাবে বাস্তবায়ন: নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘনের ঘটনাগুলিকে অবিলম্বে চিহ্নিত করে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে হবে। ইতোমধ্যে কলা ভবনের সামনে মঞ্চ করে কুরআন বিতরণ, মিছিলের মাধ্যমে ফরম তোলা, ফরম উত্তোলনে বাধা দেওয়া, নিয়ম ভঙ্গ করে বিলবোর্ড/ব্যানার প্রদর্শন, বিভিন্ন হল বা মসজিদে প্রচারণা ইত্যাদি ঘটনা ঘটেছে। এগুলো সবই নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘন। এসব বিষয়ে প্রশাসনের আরও বেশি কার্যকর ভূমিকা রাখা জরুরি।

৫. ব্যালটে ছবি সংযুক্তকরণ: ভোটারদের সুবিধার্থে প্রার্থীদের নামের পাশে তাদের ছবি সংযুক্ত করতে হবে, যাতে বিভ্রান্তির সুযোগ না থাকে।

৬. ভোটদান প্রক্রিয়া সহজ করা: অনেকের জন্যে স্বল্প সময়ে হল কার্ড করা বা কার্ড নবায়ন করা কষ্টসাধ্য। তাই ভোটদান প্রক্রিয়া সহজ করতে বিশ্ববিদ্যালয়ের যেকোনো বৈধ ডকুমেন্ট থাকার ভিত্তিতে ভোটদানের ব্যবস্থা করা দরকার।

সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার আহ্বায়ক মোজাম্মেল হক বলেন, আমরা মনে করি যে, এই পদক্ষেপগুলো গ্রহণ করলে ডাকসু নির্বাচন গণতান্ত্রিক, স্বচ্ছ ও অংশগ্রহণমূলক হওয়ার পথ সুগম হবে। এর মাধ্যমে নির্বাচনে সকল শিক্ষার্থীর অংশগ্রহণের সুযোগ প্রসারিত হবে। কর্তৃপক্ষ যেন অবিলম্বে এ বিষয়ে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করে সেই আহ্বান আমরা জানিয়েছি।

এ সময় ডাকসু নির্বাচনে ‘প্রতিরোধ পর্ষদ’ প্যানেল থেকে ভিপি পদপ্রার্থী শেখ তাসনিম আফরোজকে (ইমি) ও এজিএস পদে প্রার্থী জাবির আহমেদ জুবেলসহ অন্যান্যরা উপস্থিত ছিলেন।

সংবাদ সম্মেলন শেষে এসব দাবির বিষয়ে নির্বাচন কমিশনকে স্মারকলিপি দেওয়ার কথা রয়েছে।

এসসি/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।