ঢাকা: গণতান্ত্রিক উত্তরণ ভিন্ন দেশের জন্য মঙ্গলজনক আর কোনো পথ নেই বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স।
শুক্রবার (২২ আগস্ট) বিকেলে পুরানা পল্টনের মণি সিংহ সড়কে সিপিবি ঢাকা মহানগর দক্ষিণের দুই দিনব্যাপী সম্মেলনের উদ্বোধনী সমাবেশে তিনি এ কথা বলেন।
সম্মেলনের উদ্বোধন ঘোষণা করে রুহিন হোসেন প্রিন্স বলেন, গণতান্ত্রিক উত্তরণ ছাড়া দেশের জন্য কল্যাণকর কোনো পথ নেই। নির্বাচনী পরিবেশ তৈরি করে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মাধ্যমে জনপ্রতিনিধিদের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তরের মধ্য দিয়ে গণতন্ত্রের পথে হাঁটতে হবে। এই উত্তরণকালীন যাত্রা ব্যাহত করতে যে অপশক্তির তৎপরতা চলছে, তা প্রতিহত করতে হবে।
তিনি আরও বলেন, ৫৪ বছরেও মহান মুক্তিযুদ্ধের আকাঙ্ক্ষা অনুযায়ী একটি গণতান্ত্রিক, অসাম্প্রদায়িক ও বৈষম্যহীন বাংলাদেশ গড়ে ওঠেনি। রাজধানী ঢাকাও অদক্ষ ও গণবিরোধী শাসকদের হাতে বৈষম্যের অনিরাপদ শহরে পরিণত হয়েছে। শাসকগোষ্ঠীর লুটপাটের নীতি এই অবস্থার জন্য দায়ী। একদল লুটেরা গোষ্ঠী দেশের মালিক বনে গেছে। এদের একটি অংশ বিগত দিনে মানুষের ভোটাধিকার হরণ করে জোরপূর্বক ক্ষমতায় ছিল। ২০২৪ সালের অভূতপূর্ব গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে তাদের পতন ঘটেছে।
সিপিবির সাধারণ সম্পাদক বলেন, এক বছর পার হয়ে গেলেও মানুষের আকাঙ্ক্ষা পূরণ হয়নি। এর প্রধান কারণ হলো ক্ষমতার পরিবর্তন হলেও ব্যবস্থার কোনো পরিবর্তন হয়নি। সাধারণ মেহনতি ও শ্রমজীবী মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য সমাজব্যবস্থা বদলাতে হবে। কমিউনিস্টরা সে লক্ষ্যে লড়াই করছে।
এই লড়াইয়ে সচেতন ও ঐক্যবদ্ধভাবে এগিয়ে আসার জন্য দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
জেলা কমিটির সভাপতি শামসুজ্জামান হীরার সভাপতিত্বে এবং সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য সাইফুল ইসলাম সমীরের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত সমাবেশে অতিথি হিসেবে আরও বক্তব্য রাখেন সিপিবির প্রেসিডিয়াম সদস্য রফিকুজ্জামান লায়েক, সিপিবি ঢাকা মহানগর দক্ষিণ কমিটির সাধারণ সম্পাদক জলি তালুকদার, সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির চেয়ারম্যান আশরাফ হোসেন আশু, এবং আহ্বায়ক ত্রিদিব সাহা।
সিপিবির প্রেসিডিয়াম সদস্য রফিকুজ্জামান লায়েক বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের পৃষ্ঠপোষকতায় একদিকে উগ্র ডানপন্থি ও একাত্তরের ঘাতক শক্তির আস্ফালন দেখতে হচ্ছে। অন্যদিকে, মার্কিন সাম্রাজ্যবাদের স্বার্থ রক্ষায় জাতীয় স্বার্থবিরোধী চুক্তি করা হচ্ছে।
তিনি দেশের স্বার্থ ও গণবিরোধী সব পদক্ষেপ থেকে সরে আসার আহ্বান জানিয়ে বলেন, সরকার যে দায়িত্ব নিয়েছে, সেই ম্যান্ডেটের মধ্যেই কর্তব্য পালন করা দেশের জন্য মঙ্গলজনক হবে।
সমাবেশ শেষে পল্টন মোড় থেকে বিজয়নগর পর্যন্ত একটি র্যালি অনুষ্ঠিত হয়।
শনিবার সকাল সাড়ে ৯টা থেকে রাজধানীর কাকরাইলে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনের সোশ্যাল গার্ডেন মিলনায়তনে সম্মেলনের সাংগঠনিক অধিবেশন অনুষ্ঠিত হবে।
ঢাকা মহানগর দক্ষিণের ইতোমধ্যে সমাপ্ত ৪১টি শাখা ও থানা কমিটির সম্মেলনের মাধ্যমে নির্বাচিত ১৮৪ জন প্রতিনিধি ওই কাউন্সিলে অংশ নেবেন। শনিবার কাউন্সিল অধিবেশনে নতুন জেলা কমিটি এবং সিপিবির আসন্ন ত্রয়োদশ কংগ্রেসের প্রতিনিধিও নির্বাচন করা হবে।
আরকেআর/এসআইএস