জুলাই গণঅভ্যুত্থান দিবস উপলক্ষে তিন দিনব্যাপী কর্মসূচির অংশ হিসেবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসিতে প্রদর্শনীর আয়োজন করেছে ইসলামী ছাত্রশিবির। প্রদর্শনীতে যুদ্ধপরাধের দায়ে অভিযুক্ত একাধিক ব্যক্তির ছবি সাঁটিয়েছিল সংগঠনটি।
মঙ্গলবার (০৫ আগস্ট) সেইসব ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ার পর থেকেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা এই কার্যক্রমের সমালোচনা শুরু করেন। পরে সন্ধ্যায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল শিক্ষার্থী টিএসসিতে জড়ো হন এবং ছবি সরিয়ে ফেলার দাবি জানান।
শেষে শিক্ষার্থীদের প্রতিবাদের মুখে ছবি সরিয়ে ফেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। ছবি সরিয়ে ফেলার বিষয়ে সম্মতি দেয় ছাত্রশিবির।
সরেজমিনে দেখা যায়, ছাত্রশিবিরেরর প্রদর্শনীতে প্রতীকী গণভবন, একটি আন্তঃনগর ট্রেন তৈরি করেছে। এটির শিরোনাম করা হয়েছে ’৩৬ জুলাই এক্সপ্রেস’। পাশেই তারা ‘বিচারিক হত্যাকাণ্ড’ শিরোনামে যুদ্ধপরাধের দায়ে অভিযুক্ত একাধিক নেতার ছবি টাঙিয়েছে। এরমধ্যে ছিল মতিউর রহমান নিজামী, দেলোয়ার হোসাইন সাইদী, আব্দুল কাদের মোল্লা, সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী, মীর কাশেম আলী, মোহাম্মদ কামরুজ্জামান এবং আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদের ছবি।
এ ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়ে গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার আহবায়ক আব্দুল কাদের সামাজিক মাধ্যমে লিখেন, “’২৪ দিয়ে ’৭১-কে মুছে দেয়ার হীন প্রচেষ্টা চালাচ্ছে ছাত্রশিবির। তারা আজ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসিতে নিজামী-মুজাহিদ-কাদের মোল্লার ছবি টাঙ্গিয়েছে। একাত্তরের অপরাধকে সাধারণ করার প্রচেষ্টা রুখে দিতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর এগুলো দেখে চুপ কেনো?”
তিনি আরও লিখেন, “এডিশন, শিবির সবার ছবি লাগাইলেও গোলাম আজমের ছবি লাগায় নাই। শিবিরও কি গোলাম আজমকে রাজাকার মনে করে?”
এ বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক সাইফুদ্দীন আহমেদের বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি। তবে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর রফিকুল ইসলাম বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের একাংশ বিভিন্ন অভিযোগে এনেছে। আমরা শিবিরের ছেলেদের ডেকে বলেছি। পরে সরিয়ে ফেলেছি। তারা আমাদের সহযোগিতা করেছে। এজন্য তাদের ধন্যবাদ জানাই।
এ বিষয়ে ছাত্রবিশিরের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মানবসম্পদ ও উন্নয়ন বিষয়ক সম্পাদক মাজহারুল ইসলাম বলেন, আমরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের অনুমতিতেই জুলাইকে ফুটিয়ে তোলার জন্য এ প্রদর্শনীর আয়োজন করেছিলাম। এখন বিশ্ববিদ্যালয় সার্বিক শৃঙ্খলা বজায় রাখার জন্য ছবিগুলো সরিয়ে ফেলার অনুরোধ এসেছে। তাই আমরা ছবিগুলো সরিয়ে ফেলার বিষয়ে সম্মতি জানাচ্ছি।
এফএইচ/এমজেএফ