জনগণের অজান্তে গোপন চুক্তি চলবে না উল্লেখ করে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে করা চুক্তি অবিলম্বে প্রকাশের দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি)।
শনিবার (২ আগস্ট) সিপিবি সভাপতি মোহাম্মদ শাহ আলম ও সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স এক যৌথ বিবৃতিতে এ দাবি জানান।
বিবৃতিতে নেতারা বলেন, দেশের জনগণ জানতে চায় কোন কোন বিষয়ে, কতটা ছাড় দিয়ে, কী ধরনের প্রতিশ্রুতি দিয়ে এই চুক্তি সম্পাদিত হয়েছে। রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে জনসাধারণকে অন্ধকারে রাখা গণতন্ত্রবিরোধী ও সংবিধান পরিপন্থি। বর্তমানে এই চুক্তি নিয়ে দেশজুড়ে উদ্বেগ, সংশয় ও আশঙ্কা সৃষ্টি হয়েছে, যা সরকার উপেক্ষা করতে পারে না।
বিবৃতিতে বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে আগে যেখানে বাংলাদেশের পণ্যের ওপর ১৫ থেকে সাড়ে ১৬ শতাংশ শুল্ক ছিল, আলোচনার পর এখন তা দাঁড়িয়েছে ৩৫ থেকে সাড়ে ৩৭ শতাংশে। বলা হচ্ছে আলোচনার মাধ্যমে ১৫ শতাংশ শুল্ক ‘ছাড়’ দেওয়া হয়েছে, কিন্তু প্রকৃতপক্ষে এই ছাড়ের বিপরীতে বাংলাদেশ কী কী ছাড় দিয়েছে, তা এখনো স্পষ্ট নয়। বিশেষ করে যখন নন-ডিসক্লোজার অ্যাগ্রিমেন্ট-এর আওতায় অনেক তথ্য গোপন রাখা হয়েছে, তখন সন্দেহ আরও ঘনীভূত হচ্ছে। সরকার যে সিদ্ধান্ত নিচ্ছে, তার দায় ভবিষ্যতের নির্বাচিত সরকার ও জনগণের ওপর পড়বে এই ধরনের আচরণ কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, বিভিন্ন সূত্রে জানা যাচ্ছে, এই তথাকথিত ‘ছাড়’-এর বিপরীতে বাংলাদেশকে যুক্তরাষ্ট্র থেকে বেশি দামে গম ও এলএনজি কিনতে হবে, ২৫টি বোয়িং বিমান কিনতে হবে, ১১০টি মার্কিন পণ্যকে শুল্কমুক্ত প্রবেশাধিকার দিতে হচ্ছে এবং বাংলাদেশের গভীর সমুদ্রের খনিজ সম্পদের ওপর মার্কিন নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার পথ তৈরি হচ্ছে জনমনে আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। পাশাপাশি অন্যান্য দেশের সঙ্গে সামরিক ও বাণিজ্যিক সম্পর্ক সীমিত করে, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে নিরাপত্তা ও ভূরাজনৈতিক সমঝোতা জোরদার করা হচ্ছে বলেও শোনা যাচ্ছে। এতে করে দেশের সার্বভৌমত্ব, অর্থনৈতিক স্বাধীনতা এবং কূটনৈতিক ভারসাম্য মারাত্মকভাবে হুমকির মুখে পড়বে। এসব বিষয় পরিষ্কার করার দায়িত্ব সরকারের। অবিলম্বে চুক্তি প্রকাশ করে জনগণের সংশয় সরকারকেই দূর করতে হবে।
সিপিবি নেতারা স্পষ্টভাবে উল্লেখ করেন, জাতীয় স্বার্থবিরোধী, অসম ও অন্যায্য কোনো চুক্তিই জনগণের কাছে গ্রহণযোগ্য নয় সে যে সরকারের আমলেই হোক না কেন। জনগণের সঙ্গে আলোচনা ও সংসদে আলোচনা ও সিদ্ধান্ত ছাড়া এ ধরনের গোপন চুক্তি সম্পাদনের কোনো নৈতিক বা সাংবিধানিক অধিকার সরকারের নেই।
আরকেআর/আরবি