বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ফাইল ফটো
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, আমরা ভয়ংকর ফ্যাসিবাদের হাত থেকে আপাতত মুক্তি পেয়েছি। এই মুক্তি তখনই চূড়ান্ত হবে যখন তাদের আমরা রাজনৈতিকভাবে সম্পূর্ণ নিশ্চিহ্ন করতে পারব।
যারা লুটপাট করে, যারা ব্যাংক ডাকাতি করে, যারা চাঁদাবাজি করে, যারা মানুষের সম্পত্তি দখল করে তাদের বিরুদ্ধে আমাদের কোনো ধরনের আপস নেই। তাদের কখনোই স্বীকার করব না এবং তাদের আমরা সামনে আসতে দেব না। গতকাল বিকালে রাজধানীর উত্তরার আজমপুরে আমির কমপ্লেক্সের সামনে ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপি জুলাই-আগস্ট গণ অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে শহীদদের স্মরণে এই সমাবেশের আয়োজন করে। আয়োজক সংগঠনের আহ্বায়ক আমিনুল ইসলামের সভাপতিত্বে যুগ্ম আহ্বায়ক এ বি এম এ আবদুর রাজ্জাকের সঞ্চালনায় বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান নূরুল ইসলাম মনি, জুলাই-আগস্ট গণ অভ্যুত্থান বর্ষপূর্তি পালন জাতীয় কমিটির সদস্যসচিব অধ্যাপক মোর্শেদ হাসান খান, নির্বাহী কমিটির সদস্য সাইফুল আলম নীরব, কৃষক দলের হাসান জাফির তুহিন, যুবদলের নুরুল ইসলাম নয়ন, স্বেচ্ছাসেবক দলের রাজিব আহসান, মহিলা দলের সুলতানা আহমেদ, জাসাসের হেলাল খান, তাঁতী দলের আবুল কালাম আজাদ, ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির সদস্যসচিব মোস্তফা জামান, যুগ্ম আহ্বায়ক এস এম জাহাঙ্গীরসহ শহীদদের পরিবারের সদস্যরা বক্তব্য দেন। যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশি পণ্য রপ্তানির ওপর সম্পূরক শুল্ক কমিয়ে ২০ শতাংশ নির্ধারণের সংবাদকে ‘দেশের জন্য ভালো খবর’ অভিহিতি করে এজন্য অন্তর্বর্তী সরকারকে সাধুবাদ জানিয়েছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, ‘আজকে একটা ভালো খবর আছে। কয়েক দিন আগে যুক্তরাষ্ট্র আমাদের পণ্যের ওপর ট্যারিফ আরোপ করেছে। মানে আমরা যেসব পণ্য সেখানে রপ্তানি করব তার ওপরে ৩৫ ভাগ ট্যাক্স নিয়ে নেবে। অর্থাৎ আমাদের যে পণ্যের দাম ১০০ টাকা। ওটার সঙ্গে আরও ৩৫ টাকা যোগ হবে। তার মানে ১০০ টাকার জিনিস ১৩৫ টাকা দাম হবে। ফলে আমাদের জিনিসটা আর সেখানে বিক্রি হবে না। আমাদের পররাষ্ট্র দপ্তর এবং উপদেষ্টারা আলোচনা করে কমিয়ে ২০ ভাগে নিয়ে এসেছেন। এজন্য আমি অন্তর্বর্তী সরকারকে ধন্যবাদ জানাতে চাই। তারা একটা বড় দায়িত্ব পালন করেছে। ’ বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘অন্তর্বর্তী সরকারকে অনেকে অনেক কথা বলেন। তাদের অনেক ভুল আছে, ত্রুটি আছে ও অভিজ্ঞতা নাই। আমি নিজেও আশা করেছিলাম এক বছরের মধ্যে যারা শহীদ হয়েছেন প্রকৃত তালিকা করে তাদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করবে। দুর্ভাগ্য তারা পুরোটা করতে পারেনি। তবে তারা চেষ্টা করছে। বৃহস্পতিবার সংস্কারের বৈঠক শেষ হয়েছে। আশা করছি, দুই-এক দিনের মধ্যেই পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট আসবে। ’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমাদের প্রধান উপদেষ্টা ঘোষণা দিয়েছেন, আগামী ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন হবে। দেশের মানুষ নির্বাচিত সরকারের অধীনে দেশ পরিচালনা চায়। ’ তিনি বলেন, ‘আমার তো যাওয়ারই জায়গা নাই। এখন আমার সমস্যা হলো আমি কার কাছে যাব? কোনো এমপি নাই? তাহলে আমি যাব কার কাছে। আমার সমস্যা সংসদে কে তুলে ধরবে? এজন্যই আমাদের দ্রুত নির্বাচন দরকার, খুব দ্রুত জাতীয় সংসদ দরকার। যেখানে আমাদের সমস্যাগুলো বলতে পারব। ’ মির্জা ফখরুল বলেন, ‘খালেদা জিয়ার ওপরে যে আস্থা রেখেছিল জনগণ একইভাবে আজকে তারা তারেক রহমানের ওপর আস্থা রাখছে। অপেক্ষা করছি, কবে তিনি দেশে আসবেন। কবে নেতৃত্ব দেবেন? আমরা আল্লাহর কাছে দোয়া করছি, তারেক রহমান যাতে অতি দ্রুত দেশে এসে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ করে নেতৃত্ব দেন। ’ তিনি বলেন, ‘আমাদের নেতা তারেক রহমান প্রতিদিন কথা বলছেন। বিভিন্ন জায়গায় মিটিং করছেন। বলছেন, নতুন বাংলাদেশ তৈরি করবেন। যে বাংলাদেশে সব মানুষের সমান অধিকার থাকবে। সব মানুষ ভোট দিতে পারবে। দেশে সাধারণ গরিব মানুষ যারা আছেন, তারা আস্তে আস্তে উন্নতির দিকে যাবে। বারবার করে বলেছেন, ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করা হবে। ’ ভবিষ্যতে তারেক রহমান নতুন বাংলাদেশ গড়তে প্রান্তিক মানুষের জন্য ‘কৃষক কার্ড’, ‘স্বাস্থ্য কার্ড’, ‘পরিবার কার্ড’ ইত্যাদি যেসব পরিকল্পনা নিয়েছেন তার কথাও উল্লেখ করেন বিএনপি মহাসচিব। এক বছর আগে এই দিনে উত্তরা উত্তাল হয়েছিলে উল্লেখ করে ফ্যাসিবাদী পতনের আন্দোলনের শেষ দিকে শিক্ষার্থীদের আত্মত্যাগের শহীদদের পরিবারের বেদনা-কষ্টের সঙ্গে সহমর্মিতা প্রকাশ করেন বিএনপি মহাসচিব।
সৌজন্যে: বাংলাদেশ প্রতিদিন
বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।