বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি জাহিদুল ইসলাম বলেছেন, জুলাই মাস বাংলাদেশের ইতিহাসে এক নির্মম অধ্যায়, যা কেবল কষ্টেরই নয়, প্রতিবাদ, প্রতিরোধ ও বিজয়েরও প্রতীক। শহীদ পরিবারগুলোর বিচারহীনতার চরম বাস্তবতার নিন্দা জানিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে ‘জুলাই সনদ’ ঘোষণার দাবি তুলেছেন তিনি।
শনিবার (১৯ জুলাই) সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর জাতীয় সমাবেশে তিনি এসব বলেন।
জাহিদুল ইসলাম বলেন, আপনারা (অন্তর্বর্তী সরকার) কোনো স্বাভাবিক পন্থায় ক্ষমতায় আসেননি। হাজারো ছাত্র-জনতার রক্তের ওপর দাঁড়িয়ে আপনারা আজ ক্ষমতায়। আমাদের সংবিধানের হাইকোর্ট দেখানোর আগে ‘জুলাই সনদ’ ঘোষণা করুন।
শিক্ষা ব্যবস্থার সমালোচনা করে তিনি বলেন, গত ১৫ বছরে বাংলাদেশের শিক্ষাঙ্গনগুলোকে সন্ত্রাস ও মাদকের আখড়ায় পরিণত করা হয়েছে। একের পর এক সংস্কার কমিশন গঠন করা হলেও শিক্ষার মৌলিক সংস্কারের জন্য কোনো কমিশন গঠন করা হয়নি।
পাশ্চাত্য ও পার্শ্ববর্তী দেশের মূল্যবোধ চাপিয়ে দিয়ে ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে ধ্বংস করার অভিযোগ করেন এবং একটি আদর্শিক, জাতীয় ও মূল্যবোধনির্ভর শিক্ষা ব্যবস্থা গড়ে তোলার আহ্বান জানান শিবির সভাপতি।
জাহিদুল ইসলাম অবিলম্বে ছাত্র সংসদ নির্বাচনের দাবি জানিয়ে বলেন, এটি শিক্ষার্থীদের প্রাণের দাবি।
কিছু মহল এই নির্বাচন বিলম্বিত করে পুরাতন রাজনীতি পুনঃপ্রতিষ্ঠা করতে চায় বলেও তিনি অভিযোগ করেন।
ছাত্রশিবিরের অতীত ও আত্মত্যাগের কথা স্মরণ করে জাহিদুল ইসলাম বলেন, ১৯৭৬ সাল থেকে তারা সৎ ও দক্ষ নাগরিক গঠনের জন্য কাজ করে যাচ্ছেন।
মীর কাশেম আলী, কামরুজ্জামান এবং দেলোয়ার হোসেন সাঈদীসহ বহু নেতাকে হত্যা এবং জামায়াত নেতাদের জুডিশিয়াল কিলিংয়ের কথা উল্লেখ করেন তিনি।
তিনি বলেন, এই পথচলা অনেক ত্যাগ ও রক্তের বিনিময়ে। প্রয়োজনে আবার জীবন দেবো, তবুও দেশের মাটিতে কোনো ফ্যাসিবাদী শক্তিকে মাথা তুলতে দেবো না।
সাত দফা দাবিতে রাজধানীর ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জামায়াতে ইসলামীর সমাবেশে চলছে। জামায়াতে ইসলামীর ৭ দফা দাবির মধ্যে রয়েছে: অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন অনুষ্ঠানে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিতকরণ, সব গণহত্যার বিচার, প্রয়োজনীয় মৌলিক সংস্কার, ‘জুলাই সনদ’ ও ঘোষণাপত্র বাস্তবায়ন, জুলাই অভ্যুত্থানে শহীদ ও আহতদের পরিবারের পুনর্বাসন, সংখ্যানুপাতিক (পিআর) পদ্ধতিতে জাতীয় নির্বাচন ও এক কোটিরও বেশি প্রবাসী ভোটারদের ভোটাধিকার নিশ্চিতকরণ।
ইএসএস/এসআইএস