ঢাকা, বুধবার, ১৯ ভাদ্র ১৪৩২, ০৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১০ রবিউল আউয়াল ১৪৪৭

জাতীয়

ঠাকুরগাঁও সীমান্তে দু’বাংলার মিলনমেলা

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১:৪৭, এপ্রিল ১৫, ২০১৮
ঠাকুরগাঁও সীমান্তে দু’বাংলার মিলনমেলা সন্তানের অপেক্ষায় অধীর আগ্রহে এক মা-ছবি: বাংলানিউজ

ঠাকুরগাঁও: কাঁটাতারের বেড়া দু’দেশকে বিভক্ত করলেও রক্তের বাঁধন ছিন্ন করতে পারেনি। ঠাকুরগাঁও জেলার ৮ সীমান্তে পহেলা বৈশাখ উপলক্ষে মিলনমেলা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

রোববার (১৫ এপ্রিল) বাংলা নববর্ষ উপলক্ষে হাজারো মানুষ প্রখর রোদ উপেক্ষা করে তাদের প্রিয়জনের সঙ্গে দেখা করতে ছুটে আসেন হরিপুর, কান্দাইল, বেতনা ডাবরি, কাঁঠালডাঙ্গী, বুজরুখ, ধর্মগড় ও জগদল সীমান্তে।

বাংলাদেশ ও ভারতে বসবাসরত আত্মীয় পরিজনদের মাঝে সৌহার্দ্য ও সম্প্রীতি অব্যাহত রাখতে ঠাকুরগাঁওয়ের ৫০ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) ও ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) সহায়তায় অনুষ্ঠিত হলো দু’বাংলার মিলনমেলা।

মেলায় দু’বাংলার হাজার হাজার নারী-পুরুষ তাদের আত্মীয়-স্বজন ও প্রিয়জনদের একনজর দেখার জন্য ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করছেন কাঁটাতারের বেড়া ধরে।

সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত চলবে এ মিলন মেলা। এ সময় আত্মীয়-স্বজনের জন্য কাঁটাতারের উপর দিয়ে শুকনা খাবার ও শাড়ি-কাপড়সহ তাদের প্রিয়জনদের জন্য বাড়ি থেকে আনা খাবারসহ নানা উপহার সামগ্রী বিনিময় করেন।

কাঁটাতারের বেড়া তাদের আলাদা করে রাখলেও আবেগ তাদের টেনে আনে সীমান্তের কাছাকাছি। এসময় সহযোগিতা করে বিজিবি ও বিএসএফ।

ঠাকুরগাঁও, পঞ্চগড়, দিনাজপুর, রংপুর ছাড়াও দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে মানুষজন ছুটে আসেন এখানে।

আত্মীয়-স্বজনদের জন্যে নিয়ে আসা উপহার-সামগ্রী পার করা হচ্ছে-ছবি: বাংলানিউজসকাল ১০টায় বিজিবি ও বিএসএফ কাঁটাতারের বেড়ার এপার ওপার এলাকায় আগত লোকজনদের যাওয়ার অনুমতি দেয়।

রানিশংকৈল উপজেলার কাশিপুর গ্রামের রঞ্জন বাবু বলেন, আত্মীয় স্বজনের সঙ্গে দেখা করার জন্য ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করছি। অনেক খোঁজাখুজির পর আত্মীয় স্বজনদের দেখে খুব আনন্দ পায়েছি।

ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার নারগুন থেকে আসা মকবুল ইসলাম বলেন, এক বছর পর আমি আমার মাকে কাছে পেয়ে চোখের জল ধরে রাখতে পারিনি।

ঠাকুরগাঁও-৫০ বিজিবির পরিচালক লে. কর্নেল মোহাম্মদ হোসেন জানান, এই এলাকাগুলো পাক ভারত বিভক্তির আগে ভারতের দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার অধীনে ছিল। এ কারণে দেশ বিভাগের পর আত্মীয়-স্বজনরা দু’দেশে ছড়িয়ে পড়েন। তাই সারা বছর কেউ কারও সঙ্গে দেখা সাক্ষাৎ করতে পারেন না। অপেক্ষায় থাকেন এ দিনটির।

পরিজনদের সঙ্গে দেখা করার সুযোগ করে দেওয়ায় ও বিনা বাধায় প্রথমবারের মতো প্রিয়জনদের কাছাকাছি পাওয়ায় বিজিবি ও বিএসএফকে ধন্যবাদ জানান ওই এলাকার লোকজন।

বাংলাদেশ সময়: ১৭২৪ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৫, ২০১৮
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।