দুই মোটর সাইকেলে করে চার বন্ধু আরিচাঘাটে যাচ্ছিলেন। পথে ঢাকামুখী যাত্রীবাহী বেপরোয়া একটি বাস নিমেষেই কেড়ে নিলো দুই বন্ধুর তাজা প্রাণ।
বুধবার সকালে ঢাকা আরিচা মহাসড়কের মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার মানড়া এলাকায় ঢাকামুখী হানিফ পরিবহনের একটি বাসের সাথে মুখোমুখি সংঘর্ষে আহত হন কাদের, গফুর, আলামিন ও জহির । স্থানীয় লোকজন তাদের উদ্ধার করে মানিকগঞ্জ সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে কাদের ও গফুরকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসকেরা।
মানিকগঞ্জের সাটুরিয়া উপজেলার জান্না বাজারে জুয়েলারি দোকান কাদের ও গফুরের। একই দোকানে কাজ করেন দুই জনে। সম্পর্কে খালাতো ভাই হলেও সমবয়সী হওয়ায় ছোট বেলা থেকেই তারা ছিলেন মানিকজোড় ।
সাটুরিয়া উপজেলার ধুল্ল্যা এলাকার কৃষক জালাল হোসেনের ছেলে আব্দুল কাদের (২৮)। তিন ভাইয়ের মধ্যে সবার বড় কাদের। সংসার জীবনে রোহান নামে দেড় বছর বয়সের এক ছেলে সন্তান রয়েছে কাদেরের।
একই উপজেলার জান্না এলাকার আবুল হোসেনের ছেলে আব্দুল গফুর (৩০)। দুই ভাই ও দুই বোনের মধ্যে মেজ হিসেবে সংসারের দায়িত্ব পালন করছিলেন তিনি। পারিবারিক কলহের জের ধরে গফুরের বিবাহ বিচ্ছেদ হয়। পরে আর বিয়েও করেননি তিনি।
কাদেরের চাচাতো ভাই রায়হান হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, পহেলা বৈশাখের দিন বন্ধু বান্ধবদের নিয়ে বড় অনুষ্ঠানের আয়োজন করতে চেয়েছিলেন তারা। ওই অনুষ্ঠানের জন্যে ইলিশ মাছ ক্রয় করার উদ্দেশ্যে সকালে চার বন্ধু মিলে মানিকগঞ্জের আরিচায় যাচ্ছিলেন। পরে সকাল সাড়ে ৮ টার দিকে মহাসড়কের মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার মানড়া এলাকায় একটি যাত্রীবাহী বাসের ধাক্কায় আহত হন তারা। এদের মধ্যে কাদের ও গফুর মারা গেছেন। ভাগ্যক্রমে বেঁচে যান আলামিন ও জহির। তারা এখন শঙ্কামুক্ত। ঘনিষ্ঠ দুই বন্ধুকে চোখের সামনে হারিয়ে তারাও এখন বাকরুদ্ধ। পুরো এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
গোলড়া হাইওয়ে থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. হাবিবুর রহমান বাংলানিউজকে জানান, নিহত ব্যক্তিদের স্বজনদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ময়নাতদন্ত ছাড়াই মরদেহ দুইটি তাদের পরিবারের সদস্যদের কাছে তুলে দেয়ার অনুমতি দিয়েছে প্রশাসন। এ ঘটনায় একটি মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে। ঘাতক বাসটি আটক করা হলেও বাসের চালক ও সহকারীরা পালিয়ে গেছে।
বাংলাদেশ সময়: ২১১৪ ঘণ্টা, এপ্রিল ১১, ২০১৮
জেএম