এসব কথা বলেছেন ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স (এফএসসিডি) শ্রীমঙ্গল ফায়ার স্টেশনের অফিসার আজিজুল হক।
জনসংখ্যা বৃদ্ধির সাথে সাথে বাড়ছে মানুষের আবাসন সমস্যা।
আজিজুল হক বলেন, আমাদের একেকটি গাড়িতে সর্বোচ্চ দুই-তিন হাজার লিটার পানি সংরক্ষিত থাকে। বড় ধরনের দুর্ঘটনা হলে এই দুই-তিন হাজার লিটার দশ-পনের মিনিটেই ফুরিয়ে যায়। তখন প্রয়োজন পড়ে পার্শ্ববর্তী জলাধার। কিন্তু জলাধার না থাকলে আমাদের পক্ষে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা অসম্ভব হয়ে পড়ে।
প্রত্যেক পাড়া-মহল্লায়, আবাসিক এলাকাসহ বিভিন্ন মার্কেট বা ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের আশেপাশে আজকাল আর জলাধার খুঁজে পাওয়া যায় না। সারাদেশেই এই সমস্যা। আবাসিক জলাধারগুলো কারণে-অকারণে ভরাট করে ফেলা হচ্ছে। যা নগর উন্নয়ন পরিকল্পনার সাথে সাংঘর্ষিক, যোগ করেন আজিজুল হক। শ্রীমঙ্গল ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের গ্রুপ-লিডার স্বপন লাল চক্রবর্তী বলেন, অনেক বড় বড় মার্কেটে কিংবা শপিংমলে ফায়ার সেফটি নেই। আমরা বারবার বলার পরও ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানে অগ্নিনির্বাপণযন্ত্র রাখে না কর্তৃপক্ষ। এদের আশেপাশেও থাকে না কোনো জলাধার।
প্রত্যেক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বা বাসাবাড়িতে একটি বহনযোগ্য অগ্নিনির্বাপকযন্ত্র নিরাপত্তার জন্য হাতের নাগালে রাখা উচিত। পাঁচ কেজি ওজনের একটি বহনযোগ্য অগ্নিনির্বাপক যন্ত্রের (ডিসিএল সিলিন্ডার) দাম মাত্র ১৮শ’ টাকা বলেও জানান স্বপন লাল চক্রবর্তী।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দুর্যোগ বিজ্ঞান এবং ব্যবস্থাপনা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ড. দেওয়ান মো. এনামুল হক বাংলানিউজকে বলেন, ফায়ার সার্ভিসের গাড়িগুলো পানির পরিমাণ খুব বেশি নয়। প্রতিকূল পরিস্থিতিতে পুকুর, ডোবা বা বিলসহ বিভিন্ন জলাশয় খুবই হেল্পফুল। শুধু তাই নয়, এসব জলাশয় ন্যাচারেল ইকোসিস্টেম ব্যালেন্সের জন্যও গুরুত্বপূর্ণ। নানা প্রকারের জীববৈচিত্র্য এখানে বেঁচে থেকে পরিবেশের ভারসাম্যকে নিয়ন্ত্রণ করে। তাই আমাদের আবাসিক এলাকার সুনির্দিষ্ট জলাভূমি সংরক্ষণ করে রাখা দরকার।
এছাড়াও পর্যাপ্ত বৃষ্টিপাতের সময় পুকুর, ডোবা বা ছোট ছোট জলাধার গ্রাউন্ড ওয়াটারের ক্লিনার হিসেবেও দারুণ কাজ করে। এ বিষয়গুলো আক্ষুণ্ন রাখলে আমাদের পানির যে ভূগর্ভস্থ স্তর সেটাও স্বাভাবিক পর্যায়ে থাকবে। আসলে এগুলো একটার সাথে অপরটা রিলেটেড, বলেন ড. দেওয়ান মো. এনামুল হক।
বাংলাদেশ সময়: ০৭১৮ ঘণ্টা, এপ্রিল ০৩, ২০১৮
বিবিবি/এমজেএফ